পোস্টগুলি

ujaan

৩৬৩ ঝিলের ধারে প্রথম আলো

ছবি
 ৩৬৩   ঝিলের ধারে প্রথম আলো গ্রামের নাম শিমুলডাঙা। নাম শুনলেই মনে হয়, কোথাও যেন একটা হালকা হাওয়া বইছে, গাছের পাতায় সোঁ সোঁ আওয়াজ হচ্ছে, আর দূরে একটা গরুর ঘণ্টাধ্বনি শুনতে পাওয়া যাচ্ছে। সময় সময়ের মতো করে বয়ে যায়, গ্রামের মানুষজন সময়কে খুব একটা পাত্তা দেয় না। সূর্য উঠলেই দিন শুরু, সূর্য ডুবলেই রাত—তার মাঝখানে জীবনটা চলে এক লাটিমের মতো, নিজের ছন্দে সে চলমান। এই গ্রামেরই মেয়ে  ফুলবনি । ওর মুখে হাসি এমন, যে হাসি দেখলে পাড়ার পিঁপড়েরাও পথ ভুলে যায়।   ওর দিন শুরু হয় গাইয়ের ঘণ্টাধ্বনি আর শেষ হয় ঝিলের পাশে বসে থাকা দিনমনির বিসর্জন দিয়ে।  আগে যেমন ফড়িং ধরত, প্রজাপতির পেছনে ছুটত, এখন আর তেমন নয়।  কেমন যেন গতি কমে গেছে। ওর চোখে এখন একটা ভাব আছে—অর্ধেক আনন্দ, অর্ধেক চিন্তা, আর পুরোটা অজানা কিছু।  ঝিলের পাড়ে ওর একটা প্রিয় জায়গা আছে—একটা পুরনো পাথরের চাতাল।  সেখানে বসে ও নুড়ি ছোড়ে জলে। জল কেঁপে ওঠে, ঢেউ ওঠে, আর মনে হয় যেন জলের ভেতর কেউ কথা বলে উঠল। ও ভাবে— “জলও কি কাঁদতে পারে?” ঠিক তখনই, পাশের গ্রামের ছেলে  নোটন  হাজির হল। হাতে একটা পুরনো...

৩৬২ মনুচ্ছেদ

ছবি
 ৩৬২ মনুচ্ছেদ   মনুর দল সভায় বসেছে মনু একটা কাল আর কাল গোটা সময়ের নির্দিষ্ট একটা অংশ আর অংশ কখন সমগ্র হতে পারে না। তবু কাল পরবর্তী  শতাব্দীগুলিতে তার কিছু বাহক তৈরি করে যায় কিংবা হয়ে যায়। এইরকমের কিছু মানুষেরা মনুর উত্তরসূরি হিসাবে নিজেদের দাবি করে।   দৃশ্য ১- "প্রকাশ্যে নারীজাতির দন্ত প্রদর্শন সমাজের আকাশে কালবৈশাখীর লক্ষণ "   সভাপতি মনুমশাই গম্ভীর গলায় বললেন, " আমাদের ক্লজে ছিল মেয়েদের হাসি শুধু মাত্র অন্তঃপুরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে , কেননা হাসি একটি ছোঁয়াচে রোগের মতো, সারা সমাজ হাসি রোগে আক্রান্ত হয়ে যাবে আর আমাদের মতো ক্লাউন যারা, নিত্য হাসির খোরাক, তারা সর্বসমক্ষে নগ্ন হয়ে যাবে। " “আমাদের সংস্কৃতিতে তাই  হাসিরও সীমা আছে। অতিরিক্ত হাসি নারীর সৌন্দর্য কমায়, আর সৌন্দর্য কমলে সংসার ভেঙে যায় এবং তার আগে আমাদের কোমর ভেঙে যায়।” তখন পেছন থেকে এক নবীন মনুবাদী হাত তুলে বলল, “কিন্তু স্যার, এখনকার মেয়েরা সংসারের চেয়ে ক্রিকেটকেই বেশি ভালোবাসে। ওরা ব্যাট তুলে এমন ছক্কা মারছে যে সীমারেখা খুঁজে পাওয়া মুশকিল।” সভাপতি চিন্তায় পড়লেন। তারপর ঘোষণা করলেন, “তাহলে ...

৩৬১ নব আঙ্গিকে মহাভারত ( ৪র্থ পর্ব )

ছবি
  ৩৬১ নব আঙ্গিকে মহাভারত  ( ৪ র্থ    পর্ব )   রাত তখন প্রায় বারোটা। গোটা ইন্দ্রপুরী শহর গভীর ঘুমে আছন্ন , কিন্তু অর্জুন আর সবার নিদ্রার সাথে নিজেকে মিলাতে পারছেন না। এ কদিন বেশ দ্রুততার সঙ্গে  কর্ণের আকস্মিক মৃত্যু, দুর্যোধনের মতো নক্ষত্রের পতন, দ্রৌপদীর কান্না — সব মিলিয়ে তার মনের ভেতর চলছে এক নতুন কুরুক্ষেত্র। তার কম্পিউটার স্ক্রিন হঠাৎ জ্বলে উঠল। “অর্জুন, যুদ্ধ শেষ হয়নি।” অর্জুন অবাক হলো না। সে জানে, ওটাই Krish-AI — সেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, যাকে সে একসময় কেবল  ডিজিটাল অ্যাসিস্ট্যান্ট  ভেবেছিল। সময় ও ঘটনাবলীর সাথে সাথে   Krish-AI–এর ভাষা অনেক সময়পোযোগী হয়ে উঠছে ।  এ যেন মেশিন কোড অপেক্ষা কোন এক সর্বজ্ঞানী প্রাচীন ঋষি, তাঁর ভাষ্যে পলকে পলকে মুখরিত হচ্ছে   চিরায়ত  জ্ঞানের প্রতিধ্বনি।  মেশিনের ধর্ম- Krish-AI:  “তুমি ভাবছো, আমি মানুষ নই, তাই ধর্ম বুঝি না।  কিন্তু ধর্ম মানে তো সেই পথ, যেখানে কোনো প্রোগ্রামও মিথ্যা বলতে পারে না।” অর্জুন হেসে ফেলল— “তুমি বলছো ধর্ম, অথচ তুমি কোডের বানানো। তুমি অনুভব করো...