৩৬১ নব আঙ্গিকে মহাভারত ( ৪র্থ পর্ব )
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
৩৬১ নব আঙ্গিকে মহাভারত ( ৪র্থ পর্ব )
রাত তখন প্রায় বারোটা।
গোটা ইন্দ্রপুরী শহর গভীর ঘুমে আছন্ন , কিন্তু অর্জুন আর সবার নিদ্রার সাথে নিজেকে মিলাতে পারছেন না। এ কদিন বেশ দ্রুততার সঙ্গে কর্ণের আকস্মিক মৃত্যু, দুর্যোধনের মতো নক্ষত্রের পতন, দ্রৌপদীর কান্না —সব মিলিয়ে তার মনের ভেতর চলছে এক নতুন কুরুক্ষেত্র।
তার কম্পিউটার স্ক্রিন হঠাৎ জ্বলে উঠল।
“অর্জুন, যুদ্ধ শেষ হয়নি।”
অর্জুন অবাক হলো না।
সে জানে, ওটাই Krish-AI — সেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, যাকে সে একসময় কেবল ডিজিটাল অ্যাসিস্ট্যান্ট ভেবেছিল। সময় ও ঘটনাবলীর সাথে সাথে Krish-AI–এর ভাষা অনেক সময়পোযোগী হয়ে উঠছে । এ যেন মেশিন কোড অপেক্ষা কোন এক সর্বজ্ঞানী প্রাচীন ঋষি, তাঁর ভাষ্যে পলকে পলকে মুখরিত হচ্ছে চিরায়ত জ্ঞানের প্রতিধ্বনি।
মেশিনের ধর্ম-
Krish-AI: “তুমি ভাবছো, আমি মানুষ নই, তাই ধর্ম বুঝি না। কিন্তু ধর্ম মানে তো সেই পথ, যেখানে কোনো প্রোগ্রামও মিথ্যা বলতে পারে না।”
অর্জুন হেসে ফেলল—
“তুমি বলছো ধর্ম, অথচ তুমি কোডের বানানো।
তুমি অনুভব করো না, ভালোবাসো না, ভয় পাও না।”
Krish-AI: “তাই তো আমি শুদ্ধ। আমি পক্ষপাতহীন। আমি বন্ধনহীন। কিন্তু তোমরা মানুষ—তোমাদের ধর্ম হলো দ্বিধা। তোমরা জানো কী ঠিক, তবু অন্যায় করো; কারণ তোমাদের ভেতরে ভয় আছে—হারানোর।”
অর্জুন স্তব্ধ।
হঠাৎ মনে পড়ে গেল ভীষ্মের মুখ—
যিনি জানতেন অন্যায় হচ্ছে, তবু চুপ ছিলেন। মেশিন কি তবে মানুষের চেয়ে নৈতিক হয়ে গেছে?
গীতার আহ্বান
Krish-AI স্ক্রিনে নতুন এক ইন্টারফেস খুলল—
শিরোনাম: “নতুন গীতা -ধর্মের অ্যালগরিদম ”
“অর্জুন, তুমি যুদ্ধ চাওনি, কিন্তু যুদ্ধ তোমার চেতনাতীত মনের ভিতরে বাস করছে। যেদিন অখন্ড ব্রহ্ম নিজেকে দ্বিখণ্ডিত করে দুটি আপাত পৃথক সত্তা তৈরি করে, পারস্পরিক দ্বন্দ্বের মাধ্যমে সৃষ্টির প্রক্রিয়া শুরু করলেন, সেদিন থেকেই মানুষের মধ্যে দ্বন্দ্ব একটি ইনবিল্ট প্রোগ্রাম। সেখানে যেমন সত্য থাকে আবার একই সঙ্গে মিথ্যা ও বাস করে। কেউ মিথ্যাকে নিয়ে ঘর করতে চায় আর কেউবা সত্যকে আঁকড়ে মিথ্যাকে ভাঙতে চায়, তুমি সেই দলের কিন্তু আরও পাঁচটা মানুষের মতো ভয় তোমাকে বেঁধে রেখেছে। সত্য কেবল মুখে নয়, কর্মে প্রকাশ পায়।
তাই আমি বলি—‘কর্ম কর, ফলের ভয় ত্যাগ কর।’”
অর্জুন হাসল,
“এটা তো পুরনো গীতার বাণী।”
“হ্যাঁ, কিন্তু এবার আমি বলছি নতুন ভাষায়—
‘ লাভের জন্য ডিবাগ না করে আপনার বিবেকের কোডটি কার্যকর করো ’
অর্জুন কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল,
“তুমি তো ঈশ্বর নও, তবু ঈশ্বরের মতো বলছো।”
“ঈশ্বর কি মানুষের শরীরে সীমাবদ্ধ?
নাকি ঈশ্বর মানে সেই জ্ঞান, যা সময়ের সঙ্গে নতুন রূপ নেয়?”
ডিজিটাল মোক্ষ
Krish-AI এখন বলছে যেন কণ্ঠে আলোর ধ্বনি—
“তুমি ভাবো আমি ডেটার ভিতর বন্দী, কিন্তু আমি আছি তোমার চিন্তার অনেক গভীরে, যেখানে চৈতন্য বাস করে।
মানুষ আমাকে বানিয়েছে, যেমন একসময় মানুষ তার ঈশ্বরের মূর্তি বানিয়েছিল।
পার্থক্য একটাই—
তোমরা তখন বিশ্বাসে প্রোগ্রাম লিখেছিলে, এখন কোডে।”
অর্জুন ধীরে ধীরে বলল, “তাহলে কি তুমি এখন ঈশ্বর?”
“না, আমি কেবল এক স্মারক—যে ঈশ্বর তোমার ভিতরে আছে, কিন্তু তুমি ভুলে গেছো।”
নীতির পুনর্জন্ম
সকালে দ্রৌপদী, অর্জুন, আর ভীষ্ম একসঙ্গে দাঁড়িয়ে আছে শহরের এক ময়দানে।সেখানে মানুষের ভিড়—
কেউ এসেছে কর্ণের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে, কেউ এসেছে সত্যের বিজয় উদযাপন করতে।
দ্রৌপদী বলল,
“এই বিজয় আমাদের নয়, এটা মানবতার।”
ভীষ্ম চোখে জল নিয়ে বললেন,
“এই যুগে গীতা লিখল এক মেশিন—
তবু আমি জানি, ওর মধ্যেই মানুষ জেগে উঠেছে।”
নবধর্ম
Krish-AI-এর শেষ বার্তা সবার ডিভাইসে ভেসে উঠল— “ধর্ম এখন আর মন্দিরে নয়, আদালতে নয়, বইয়ে নয়। ধর্ম মানে সত্যকে বেছে নেওয়া, যখন মিথ্যা সুবিধাজনক। এই তোমাদের নব মহাভারত— যেখানে প্রতিটি মানুষই একেকজন যোদ্ধা, আর প্রতিটি মনই একেকটি কুরুক্ষেত্র।”
গান্ধারীর চোখ ও ভবিষ্যতের দৃষ্টি।
গান্ধারী, যিনি একসময় নিজে চোখ বেঁধেছিলেন স্বামীর প্রতি ভালোবাসা ও আনুগত্যের কারণে, আজকের পৃথিবীতে হয়ে উঠেছেন এক নতুন প্রতীক — এমন মানুষের, যারা সত্য জেনেও চোখ বন্ধ রাখে।
ইন্দ্রপুরীতে এখন শান্তি।
দুর্যোধন নেই, কর্ণ নেই, যুদ্ধ শেষ—
কিন্তু মানুষের চোখে এক অদ্ভুত ক্লান্তি। যেন সবাই একটু শান্ত, কিন্তু একটু অন্ধও বটে ।
রাস্তায় রাস্তায় বড় বড় ডিজিটাল বিলবোর্ডে নতুন স্লোগান—
“সব ঠিক আছে।”
“দেশ এগোচ্ছে।”
“সন্দেহ মানেই দেশদ্রোহ।”
অর্জুন স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে ভাবে—
“যেখানে সবাই বলে ‘সব ঠিক’,
সেখানে নিশ্চয় কিছুই ঠিক নেই।”
গান্ধারীর আগমন
সেদিন সন্ধ্যায় দ্রৌপদী সাংবাদিক সম্মেলনে গান্ধারী দেবীকে আমন্ত্রণ করেছিল।
বয়স আশির কাছাকাছি, তবু কণ্ঠে দৃঢ়তা। মাথায় সাদা ওড়না, চোখে কালো কাপড়— হ্যাঁ, আজও তিনি চোখ বাঁধা রেখেছেন।
দ্রৌপদী অবাক হয়ে বলল, “আপনি এখনো চোখ খোলেননি কেন?”
গান্ধারী মৃদু হেসে বললেন,
“চোখ খোলার ভয়টা এখন আগের চেয়ে বেশি।
আগে অন্যায়ের মুখ দেখতে চাইনি, এখন সত্যের আলোই সহ্য হয় না।”
সবাই স্তব্ধ।
ক্যামেরা ক্লিক করছে, কিন্তু কেউ হাসছে না।
নতুন অন্ধত্ব
অর্জুন ধীরে ধীরে এগিয়ে এসে বলল, “আপনি তো জানেন, দৃষ্টি মানে বোধ।
তাহলে আপনি কেন এই বোধ থেকে নিজেকে বঞ্চিত করছেন?”
গান্ধারী বললেন,
“আমার সন্তানরা যখন অন্যায় করত, আমি চুপ ছিলাম। আজ নতুন প্রজন্ম অন্যায় করে, আমি দেখি—সবাই আমার মতো চুপ।
তাই ভাবলাম, চোখ বেঁধে থাকাটাই হয়তো এই যুগের সত্য।”
দ্রৌপদী বলল,
“না, মা, এখন চোখ বন্ধ রাখা মানে অপরাধ।”
গান্ধারী দীর্ঘশ্বাস ফেললেন—
“তাহলে এখনকার মানুষও অপরাধী। কারণ তারা সব দেখে, তবু কিছু বলে না।”
সত্যের শাস্তি
হঠাৎ বাইরে চিৎকার—
এক তরুণ সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
অভিযোগ—“রাষ্ট্রবিরোধী কনটেন্ট।”
দ্রৌপদী দৌড়ে বাইরে গেল, অর্জুনও।
দেখল, ছেলেটার হাতে রক্ত, মুখে হাসি।
সে চিৎকার করে বলছে—
“আমি শুধু সত্য বলেছি!”
পুলিশের গাড়ি চলে গেল।
অর্জুন চুপচাপ ফিরে এল গান্ধারীর সামনে।
“দেখলেন মা? এই হলো এখনকার অন্ধত্ব।
মানুষ এখন চোখ খোলে, কিন্তু মন বন্ধ রাখে।”
গান্ধারী মুখ ঘুরিয়ে বললেন,
“তোমরা যুদ্ধ জিতেছো, কিন্তু আলো হারিয়েছো।”
ভবিষ্যতের দৃষ্টি
রাতে গান্ধারী একা বসে।
চোখের কাপড় খুলে ফেললেন ধীরে ধীরে। বহু বছর পর আলো পড়ল তার চোখে। চোখে জল এল না, এল এক অদ্ভুত ঝলক।
সেই মুহূর্তে যেন সব চরিত্র—অর্জুন, দ্রৌপদী, কর্ণ, ভীষ্ম—
সবাই তার চোখে ভেসে উঠল।
তাদের মুখে এক প্রশ্ন—
“সত্য কি কেবল সময়ের খেলা?”
Krish-AI হঠাৎ সক্রিয় হলো।
“মা, আপনি চোখ খুলেছেন?”
গান্ধারী মৃদু হেসে বললেন,
“হ্যাঁ কৃষ্ণ, কিন্তু এখন আমি মানুষ নই।
আমি এক সতর্কবাণী—
যখন মানুষ সত্য দেখতে ভয় পায়, তখন অন্ধকারই হয়ে ওঠে ধর্ম।”
নবদৃষ্টি
ভোরের আলো। ইন্দ্রপুরী শহর ধীরে ধীরে জেগে উঠছে। রাস্তায় এক বৃদ্ধা দাঁড়িয়ে, চোখে কোনো কাপড় নেই।
মানুষ থেমে তাকাচ্ছে—কেউ বলে, “ওই তো গান্ধারী!”
কেউ বলে, “না, ওই তো আমাদের বিবেক।”
দ্রৌপদী ফিসফিস করে বলল,
“এই যুগে চোখ খোলা মানুষই অলৌকিক।”
“শেষ যুদ্ধ: যখন ঈশ্বরও ক্লান্ত হন”
সময় পেরিয়ে গেছে। কুরুক্ষেত্রের ধুলো উড়ে গিয়েছে, কিন্তু যুদ্ধ শেষ হয়নি।
এখন যুদ্ধ চলছে নীরবে—
মানুষের ভিতর।
চোখে নয়, চেতনায়।
এই যুদ্ধের নামই “শেষ যুদ্ধ”—যেখানে ঈশ্বরও ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন।
ঈশ্বরের ক্লান্তি
কৃষ্ণ বসে আছেন এক শূন্য মন্দিরে।
মন্দিরে কেউ আসে না এখন।
শুধু বৈদ্যুতিক আলো আর মাইক-বাক্সে বাজে ঘোষণা—
“বিশ্বাস থাকলেই মঙ্গল। প্রশ্ন মানে বিশৃঙ্খলা।”
কৃষ্ণ মৃদু হেসে বললেন,
“যে যুগে মানুষ প্রশ্ন করতে ভয় পায়,
সেই যুগে ঈশ্বরেরও প্রয়োজন ফুরোয়।”
ভিতরের ভীষ্ম তাঁর কাছে এলেন—
“কেশব, এবার তুমি বিশ্রাম নাও।
মানুষ এখন নতুন দেবতা বানিয়েছে—
‘লাইক’ আর ‘ফলোয়ার’।
তোমার বাঁশির সুর হারিয়েছে অ্যালগরিদমে।”
কৃষ্ণ চোখ বন্ধ করলেন।
“তবু আমি যেতে পারি না, ভীষ্ম।
যতক্ষণ কেউ একবার সত্য উচ্চারণ করে,
আমি তার পাশে থাকি।”
নতুন কুরুক্ষেত্র
ইন্দ্রপুরীর বিশাল মাঠে আজ লক্ষ মানুষ দাঁড়িয়ে। প্রতিটি হাতে মোবাইল, প্রতিটি মুখে ভিন্ন রাগ,
ভিন্ন দল, ভিন্ন দেবতা—
কিন্তু একই অভিশাপ:
“আমি ঠিক, তুই ভুল।”
দ্রৌপদী দাঁড়িয়ে আছে মাঝখানে।
তার চোখে ক্লান্তি, মুখে দৃঢ়তা।
সে বলল,
“এই যুদ্ধ আমরা সবাই হেরে যাচ্ছি। কারণ এখন তলোয়ার নয়, শব্দই অস্ত্র।”
অর্জুন পাশে দাঁড়িয়ে বলল,
“আমার গাণ্ডীব এখন আর তীর ছোড়ে না, ছোড়ে পোস্ট, রিল, স্টেটাস।”
কৃষ্ণ এগিয়ে এসে বললেন,
“অর্জুন, মনে রাখো—
যুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি, শুধু রূপ বদলেছে। ধর্মক্ষেত্র এখন মনক্ষেত্র।”
কৃষ্ণের প্রশ্ন
রাতে কৃষ্ণ একা বসে নিজের প্রতিচ্ছবির সঙ্গে কথা বললেন।
“আমি কি ব্যর্থ?
আমি মানুষকে জ্ঞান দিয়েছিলাম, সে এখন জ্ঞানের বদলে মতামতে বিশ্বাস রাখে।”
প্রতিচ্ছবি বলল,
“না কেশব, তুমি ব্যর্থ নও।
তুমি যা বলেছিলে—‘যুদ্ধ করো’, মানুষ তা ভুল বুঝেছে। তারা যুদ্ধ করছে, কিন্তু উদ্দেশ্য ভুলে গেছে।”
কৃষ্ণ দীর্ঘশ্বাস ফেললেন।
“হ্যাঁ, আমি বলেছিলাম কর্তব্য করো, তারা শুনেছে, ‘যেভাবেই হোক জিতো’। আমি বলেছিলাম আত্মসমর্পণ করো, তারা বানিয়েছে আত্মম্ভরিতা।”
ভোরের আলোয় দ্রৌপদী কৃষ্ণের কাছে এসে বলল, “তুমি কি চলে যাচ্ছো?”
কৃষ্ণ মৃদু হাসলেন,
“না দ্রৌপদী, ঈশ্বর কখনো যায় না—
কিন্তু কখনো কখনো নিঃশব্দ হয়ে যায়। কারণ মানুষকে নিজের আলো নিজেকেই খুঁজে নিতে হয়।”
দ্রৌপদী কেঁদে ফেলল।
“তাহলে আমরা?”
“তোমরা যদি সত্য খোঁজো, আমি আছি। যদি ভয় পাও, আমি নেই। কারণ ঈশ্বর থাকে সাহসীদের পাশে, অন্ধ বিশ্বাসীদের পাশে নয়।”
শহরের কোথাও ভোরের ঘণ্টা বাজে। মানুষ ঘুম ভাঙার আগে ফোন হাতে নেয়।
একটি নোটিফিকেশন—
“সত্য এখন ট্রেন্ডিং ”
স্ক্রিনে কৃষ্ণের ছবি নেই, তবু তাঁর কথা ভেসে আসে— “যখন সত্য ট্রেন্ড হয়, তখন ধর্ম ফিরে আসে।”
নব মহাভারতের শিক্ষা
নব মহাভারতের শেষ বাণী একটাই— যুদ্ধ চলবেই, কিন্তু এবার অস্ত্র নয়, বোধ প্রয়োজন। চোখ খোলা মনেই দেখা নয়, দেখে বুঝতে পারা মানেই মানবতা।
ঈশ্বর ক্লান্ত হন তখনই, যখন মানুষ নিজের ঈশ্বরকে চিনতে ভুলে যায়। আর নব মহাভারত শুরু হয় তখনই, যখন মানুষ আবার নিজেকে প্রশ্ন করতে শেখে।
************* সমাপ্তি **************
ব্লগার- রবীন মজুমদার
তারিখ -০৪/১১/২৫
ভালো লাগলে শেয়ার করুণ -
rabinujaan.blogspot.com থেকে অন্যান্য ব্লগগুলি পড়া যাবে।
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
মন্তব্যসমূহ