নারদের মর্ত্যে ভ্রমণের পাক্ষিক বিশ্লেষেণ - প্রথম সংখ্যা Fortnight Analysis - Indian Education System (1st part)


 নারদের মর্ত্যে ভ্রমণের পাক্ষিক বিশ্লেষেণ  - প্রথম সংখ্যা 

Fortnight Analysis -   Indian Education System (1st part)

 

[ স্বর্গের কনফারেন্স রুম  - দেবরাজ ইন্দ্র, মিঃ নারদ, মিঃ অগ্নিদেব, ম্যাডাম স্বরস্বতী  , কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন  বেদব্যাস ,শ্রী শ্রী গনেশ, লক্ষ্মী ম্যাডাম , বরুন দেব,  ঋষি যাজ্ঞবল্ক , ঋষি বৈশম্পায়ন , জনক রাজা, অষ্টবক্র মুনি, ঋষি জৈমিনি, ঋষি পৈলা, ঋষি সুমন্ত, গার্গী , রাজা জনমেজয়   উপস্থিত ] 

দেবরাজ ইন্দ্র -  গত কাল মহর্ষি নারদের মর্ত্যে পনেরো দিন ভ্রমন সমাপ্ত হোল।  শুধু সমস্যা শোনাটা যেমন দরকার ঠিক তেমনি  সমাধানের উপায়টা ও বাতলে দিতে হবে। তা না হলে এই হাই প্রোফাইল কনফারেন্সএর কোন মানে হয় না।   প্রথমেই দেবরাজ,  কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন ব্যাসদেব মশাইকে জিজ্ঞাসা করলেন,  যে কি পদ্ধতি  অবলম্বন করা হবে সমস্যা  বিশ্লেষণ করার ক্ষেত্রে। 

কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন ব্যাসদেব -   সাধারণতঃ বিভিন্ন আলোচনার মাধ্যমে  সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষেত্রে প্রথমেই  নির্দ্দেশিকা গঠন করা বাধ্যতামূলক।  দ্বিতীয়তঃ ক্রমানুসারে আলোচনার বিষয়বস্তুর  প্রত্যেকটা স্টেপকে ডকুমেন্টেশন করে তাকে ব্যাখ্যার মাধ্যমে চূড়ান্ত করা এবং তাকে   সর্ব সম্মতিক্রমে সভার অনুমোদন নিয়ে আলোচনা শুরু করা উচিৎ। সেক্ষেত্রে দুটি ভাগ করতে হবে একজায়গায় থাকবে শুধুমাত্র সমস্যার ডকুমেন্টেশন আর অন্য জায়গায় থাকবে সম্ভাব্য সমাধানের উপায়ের ডকুমেন্টেশন।  এই পদ্ধতি অনুসরণ করলে, আলোচনার সময় কম লাগবে, বাগ বিতন্ডার অবকাশ কমে যাবে এবং পরিশেষে উকৃষ্টমানের আউটপুট আলোচনার মাধ্যমে বেরিয়ে আসবে। 

লক্ষ্য বস্তু কি এবং তাকে কোনখান  থেকে উদ্ধার করতে হবে - এখানে লক্ষ্যবস্তু হচ্ছে প্রকৃত শিক্ষার প্রচলন ও তার মান উন্নয়নের বাস্তবানুগ মত ও পথ।  শিক্ষাকে উদ্ধার করতে হবে কখনো রাষ্ট্রের আঁচল থেকে, সামাজিক বন্ধন থেকে, পরিবেশের নাগপাশ থেকে , রাজনীতির কবল থেকে, অভিবাবকদের পূর্ব থেকে বিদ্যমান হাস্যকর মানসিকতা থেকে এবং কর্পোরেটের ব্যালান্স সীটের প্রফিট এন্ড লসের কলাম থেকে। 
 
সঠিক পদ্ধতি নির্নয় একমাত্র প্রধান কাজ এবং সেই পদ্ধতি অনুসরণ করে আলোচনা  থেকে গৃহীত দিশা উৎকৃষ্ট ফলদান  করবে। 

শ্রী শ্রী গনেশ - ওরে বাবা ! দ্বৈপায়ন দা মহাভারত লেখার  আগে একগাদা চরিত্র আর যত না  চরিত্র তার থেকে বেশী তার প্রকাশ, কি তার জটিলতা, তাকে এক সমান্তরাল রেখায় নিয়ে এসে মহাকাব্যের শ্রেষ্ঠতার  প্রাইজ নিয়ে বেরিয়ে গেল। সবাই দেখতে থাকুন, ঠিক দাঁড় করিয়ে দেবেন। মহাভারতের মতো এবার লেখার দায়িত্ব কার থাকবে ?

ম্যাডাম স্বরসতী - হ্যাঁ  ভাই, তোর মতো শ্রুতি লেখক থাকতে অন্য কাউকে সেই জায়গায়  ভাবাটা ঠিক হবেনা। 

কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন ব্যাসদেব - উফ্ ! গনেশের শিশু সুলভ আচরণ পাল্টালো না। এবার পিতাজিকে বলে সংসারী করে দাও।  আর তুমিও মনে রেখো, এই সব তোমার ডিপার্টমেন্টের কাজ , এই বৃদ্ধ মানুষকে দিয়ে আর কত কাজ করাবে ? (স্বরস্বতীর উদ্দেশ্যে )

দেবরাজ ইন্দ্র - ব্যাসদেব মশাই, আপনার বেদ রচনার ফুল টীমকে হাজির করেছি, দেখুন না.   ঋষি বৈশম্পায়ন ,  জৈমিনি,  পৈলা,  সুমন্ত  এবং ঋষি যাজ্ঞবল্ক সবাই উপস্থিত। পরবর্তী সময়ে আপনাকে হেল্প করবেন জনক রাজা ও  অষ্টবক্র মুনি তাদের ও হাজির করা হয়েছে।  

কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন ব্যাসদেব- দিন যত যাচ্ছে মর্তের মানুষেরা জটিল থেকে জটিলতর পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছে। তাই সমস্যার সমাধানের জন্য উচ্চ থেকে উচ্চ ভাবনার ও পদ্ধতির  জন্ম নিচ্ছে।   তার গাইড লাইন হিসাবে বর্তমানে  বহুল স্বীকৃত পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনার প্রয়োজন। 

চিন্তাক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার কারন - একই সঙ্গে মূল কারনের সাথে সেকেন্ডারি কারন হিসাবে বহুবিধ সমস্যার উদ্ভাবনে চিন্তার বিভ্রান্তি। চিন্তার অনুপ্রবেশ ঘটে বাইরের প্রকৃতি থেকে ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে মনের গভীরে ঢুকে প্রতিক্রিয়া শুরু করে। সেখানে পূর্ব থেকেই বসবাস করে আবেগ, আশা, সৃজনশীলতা।  এবার যুক্তির কাজ তাকে পোস্ট মর্টেম করে সঠিক সিদ্ধান্ত পাঠানোর, কিন্তু মনের ভিতরে থাকা অবিনস্ত উপাদানের সাথে বাইরে থেকে আসা উপাদানের অসম মিশ্রনে প্রকৃত উত্তরের নির্ণয় করার কাজ পদে পদে ব্যাহত হয়। তাহলে চিন্তার বিভ্রান্তিকেই একমাত্র কারন হিসাবে চিহ্নিত করা গেল এবং তার কারন স্বরূপ বিক্ষিপ্ত চিন্তা। 

সমাধানের উপায় - বিক্ষিপ্ত চিন্তাকে লাগাম পরানো অর্থাৎ চিন্তাকে শৃঙ্খলিত করে বিশৃঙ্খলা কি ভাবে এড়ানো যায়।  তাই চিন্তাগুলিকে তার  আদর্শ অনুযায়ী তাকে ছয় ভাগে ভাগ করা জরুরি। ভাগ করার ক্ষেত্রে একটা আদর্শকে অনুসরণ করা উচিত, তা হল " কি ভাবে ভাবতে হবে বরং এর চেয়ে কি কারনে ভাবতে হবে "।
 
ক্রমশঃ 

ব্লগার -রবীন মজুমদার 


 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

(২৩১) মানুষ থেকে নক্ষত্রে উত্তরণ

(২৩৩) একটি ফোঁড়ার জন্মবৃত্তান্ত -

(২৩২)বোধোদয়