মহাভারতের যাজ্ঞসেনী -অষ্টম অধ্যায়
মহাভারতের যাজ্ঞসেনী -অষ্টম অধ্যায়
![]() |
অন্তরে ভক্তি আর দর্শনের মোড়ক আর বাইরে কৌরব-পাণ্ডবদের ঘরেলু বিবাদ। পাঁচ হাজার বছরেও মহাভারতের যৌবন অমলিন । দলে দলে পাঠক তার রূপ সুধা আকন্ঠে পান করতে করতে মহাভারতে প্রবেশ করে ধর্মের পাঠ নিয়ে সেখানে শুধু আবদ্ধ হয়ে আছে তাই নয়, যুগে যুগে সেই মহাকাব্যকে জানার এক পরম্পরার মানব সমাজে প্রতিষ্ঠা করেছে।
দর্শনের বিষয়বস্তু যদি হয় সত্যানুসন্ধানকে কেন্দ্র করে জনজীবনের সাথে জড়িত ধর্ম, বিজ্ঞান, অর্থনীতি, ইতিহাস ও জ্ঞান-বিজ্ঞান, তাহলে মহাভারতও একটি দর্শন। আবার সাহিত্যের যদি লক্ষ্য হয় মানবজীবনের বিকাশ, তাহলে, সেই অর্থে মহাভারত একটা স্বার্থক কাব্য সাহিত্য।
হিন্দুদের ধর্মশাস্ত্র বেদ , তার দুরূহ ব্যাখ্যা গুলিকে সাহিত্যাকারে প্রকাশ করতে গেলে,সাধারণ পাঠকের কথা মাথায় রেখে কবি সাহিত্যিকরা সময়াচিতভাবে তার ব্যাখ্যা দিয়ে থাকেন। পাঠক সর্ব সময়ের জন্য দুটি ভিন্ন শ্রেণীর হয়ে থাকে। যেমন, প্রথম দলের পাঠকরা ধর্মশাস্ত্র ( কেননা মহাভারতকে হিন্দুরা ধর্মশাস্ত্র হিসাবে গ্রহণ করছে ) পড়তে গিয়ে সরল বিশ্বাসে যা লিপিবব্ধ থাকে, তাকে সহজভাবে গ্রহণ করে। আরেকদল পাঠক শুধু পড়েই ক্ষান্ত হন না, তারা সাহিত্যের ব্যঞ্জনার মূল অর্থ খুঁজে বেড়ান বিজ্ঞানমনস্ককারতার কারনে। যদিও তারা সংখ্যায় নগন্য। জ্ঞান এক অসীম বস্তু , সীমিত জ্ঞানের ভান্ডার নিয়ে যেমন অসীমকে খোঁজা যায়না, আবার বিচার বিশ্লেষেণ ছাড়া তাকে গ্রহণ করাও যায়না এবং তাকে না জেনে অলৌকিক তকমাও সেটে দেওয়া যায়না। তার থেকে বরং আরো চেষ্টা চালানো যেতে পারে মহাভারতের কবির লুক্কায়িত প্রতিভার সন্ধানে। সংকৃত ভাষার একই শব্দের বহুবিধ মানে আছে।
(সপ্তম অধ্যায়ের পর অগ্নি )
চিত্রশ্রবস্তমঃ - অগ্নিকে একজায়গায় সৌন্দর্য্যের প্রাতঃ অর্থাৎ "চিত্র"। 'শ্রবে'র আরেক অর্থ হয় সুনাম। এছাড়াও অন্ন এবং সম্পদকে 'শ্রব' বলা হয়। তাহলে, বোঝা যাচ্ছে , যাদের সুখ্যাতি এই বিশ্ব চরাচরে ছাড়িয়ে পড়েছে তার মধ্যে শ্রেষ্ঠ অগ্নি। দেবো, দেব শব্দ দ্যু শব্দ থেকে উৎপত্তি, যার অর্থ আলোকিত , যে আলোর অসীম প্রসার। এখানে 'দেবো' , অগ্নি হলেন আলোকময়। আর দেবোভিরা গমৎ অগ্নিকে প্রার্থনা করে বলা হচ্ছে আপনি যেন দেবতাদের নিয়ে যজ্ঞ ক্ষেত্রে আসেন।
ব্লগার - রবীন মজুমদার
১২-১১-২১
মন্তব্যসমূহ