মহাভারতের যাজ্ঞসেনী- ২৫তম অধ্যায় || (৮৮)
মহাভারতের যাজ্ঞসেনী- ২৫তম অধ্যায় || (৮৮)
প্রয়োজনকে লক্ষ্য ভেবে মানবসংসারে একাধারে বহু সৃষ্টি এবং যুগপৎ পরিবর্তন এসেছে। প্রত্যেক আচার-আচরণের সামাজিক অনুমোদন পেয়েছিলো এবং সমাজটা কি কি কারণে প্রাচীন অভ্যাসকে ঝেড়ে ফেলে দিতে বাধ্য হয়ে ছিলো, তাকে সময়ানুক্রমিক ভাবে তুলে ধরতে না পারলে একটা সময়ের সাথে অপর আরেকটি সময়ের তুলনামূলক আলোচনা চলতে পারে না, সুতরাং উপসংহার সেতো সুদূর পরাহত -------- ২৪ তম অধ্যায়ের পর। .....
আমাদের একটা চিন্তা বা ভাবনার বীজটা অঙ্কুরিত হওয়া থেকে শুরু করে বৃহৎ কলেবরে এক বৃক্ষ হয়ে, ফুল ফলে নিজেকে বিকশিত করে সময়ের নিয়মে একটা ছোট্টো বীজের মধ্যে আগামী দিনের সম্ভাবনাকে জিইয়ে রেখে বিশ্বসংসার থেকে সে প্রস্থান করে , তারপর প্রকৃতি বীজ থেকে অংকুরিত সেই নবজাতককে এই বিশ্ব চরাচরে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার মধ্যে তার নিরবিচ্ছিন্ন ধারাকে বজায় রেখে আসছে । ঠিক সেই একই নিয়মে মানুষ আর সমাজ কাল থেকে কালান্তরে তার প্রবাহকে প্রাসঙ্গিক করে রেখেছে , তার কোন ব্যতিক্রম নেই।
চিন্তা বা ভাবনাকে রূপ অর্থাৎ পরিণতির দিকে নিয়ে যাবার পথে কতগুলি পূর্বনিধারিত সিঁড়িগুলিকে অতিক্রম না করলে গন্তব্যে পৌঁছান যাবেনা। আজকের প্ৰেক্ষাপটে ভাবনা হচ্ছে সেই একটা স্থির চিত্রের প্রতিফলন, সেখানে একদিকে থাকবে বৈদিক যুগের কিছু কিছু গুরুত্বপূর্ণ সমাজের টুকরো টুকরো ছবি, আরেকদিকে থাকবে সেই একই শিরোনামের মহাভারতের প্রতিরূপ , আর তার ঠিক নিচে থাকবে তুলনামূলকভাবে ছবির তুলির রেখার তারতম্যের সময়োপযোগী সম্ভাব্য কারণগুলি।
আবার প্রাণী জগতে সম্ভাব্য পরিবর্তনগুলি যেমনভাবে পরিলক্ষিত হয় জীবনের শুরু থেকে করে পূর্ণতার দিকে এগিয়ে যাবার পথে। ঠিক তেমনি বৈদিক এবং মহাভারতের যুগে সামাজিক রীতিনীতির ক্রমবিকাশ ক্ষেত্রে জীবজগতের ক্রমবিকাশের ধারার সাথে মিল খুঁজে পাওয়া যায়। কেননা গোটা ব্যাপারটাই সমাজবিজ্ঞান এবং নৃবিজ্ঞানের অন্তর্গত।
এখানে ভাবনার রসদ যোগাবে বিষয়বস্তু; আর ভাবনা আর বিষয়বস্তুর সাথে সংঘর্ষে তৈরী হবে সেই কম্পন, যেই কম্পন থেকে উৎপন্ন হবে অফুরন্ত প্রাণের, আর এই প্রাণই যোগাবে শক্তি আর শক্তি নিয়ে পৌঁছে দেবে ইপ্সিত লক্ষ্যবস্তুতে। সেই আলোকে বৈদিক এবং মহাভারতের সমাজের ক্রমবিকাশের ধারাকে অনুধাবন করার পক্ষে আরো সহজতর হবে।
ক্রমশঃ
ব্লগার : রবীন মজুমদার
১৬-০১-২০২২, কলকাতা
মন্তব্যসমূহ