অখন্ড যখন খন্ডিত হয় (১১৫)

 

অখন্ড যখন খন্ডিত হয় (১১৫)

ওঁ-কার আকাশের মতো সর্বব্যাপী। তুরীয় অবস্থা, যে দেহাতীত ও অনন্ত, সেই রকম ওঁ-কার ও অনন্ত। সমস্ত দ্বৈতভাবে ওঁ-কারে এসে বিলীন হয়ে যায়। যে হেতু দ্বৈতভাবের বিভ্রান্তি থেকে না, তাই সে শিব অর্থাৎ মঙ্গলময়। 
 
গত সংখ্যার পর ০ ০ ০ ০ ০



 
চৈতন্য  -

বৈদিক সাহিত্যে আত্মা বা চৈতন্যকে পুরুষ বলে সম্বোধন করা হয়। চিন্তা ভাবনার ক্ষেত্রে  বিষয়বস্তু   ও তার বিচার্য ক্ষেত্রটি  সঠিকভাবে নির্বাচন না হলে সেটা অর্থহীন হয়ে পড়বে। এখন প্রশ্ন হলো  আত্মার ক্ষেত্র নির্বাচনের জন্য কি আলাদা আলাদা মানুষের আত্মা বা চৈতন্যকে নিয়ে এগোতে হবে , না  সমষ্টিগত মানুষের আত্মা নিয়ে চিন্তা-ভাবনাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। প্রথমত আত্মা বা চৈতন্য আলাদা আলাদা কখন হয়না, কেননা, জগতের সব আলাদা আলাদা  পুরুষ বা চৈতন্য সেই বিরাট পুরুষ বা চৈতন্যের মধ্যে বিলীন। 

এই বিরাট পুরুষের মধ্যে কোনো প্রাণী হয়ত জেগে আছে , কেউবা নিদ্রা গেছে, কেউবা ক্ষুধার্ত , কেউবা খেলাধুলায় ব্যস্ত। এক এক করে প্রাণীদের যোগ ফলের প্রকাশ কিন্তু এই সমষ্টি পুরুষ নন , বাস্তবে, এই সমষ্টি পুরুষের (একক) মধ্যেই সমস্ত প্রাণী নানা অবস্থায় আছে। 

যেমন, একজন মানুষের দেহের ধমনী দিয়ে যে রক্ত প্রবাহমান, সেখানে কোটি কোটি জীব অবগাহন করে বেঁচে আছে। শুধু তাই নয়, সেই রক্ত নদীতে যেই কোটি কোটি জীব আছে তাদের রক্তেও  অসংখ্য জীব বাস করছে। এ যেন এক সীমাহীন জীবের সারবাঁধা স্রোত, সে যেন বর্ননারও অতীত। এই সমস্ত ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র নাম গোত্রহীন প্রাণের অধিকারীরা  এক মানুষের দেহে বাসা বেঁধে আছে। মজার ব্যাপার হল, তারা মানুষের দেহরূপী এই বিশ্বে চক্রাকারে এই জন্ম-মৃত্যুর খেলার মধ্যে বেঁচে আছে। 

ঠিক সেই রকম যা কিছু মানুষ এই পৃথিবীতে প্রত্যক্ষ করতে পেরেছেন তার এবং তারও  বাইরে অস্তিত্ব আছে, সেটা কিন্তু মানুষের দেখার বা জানার বাইরে, তারাও কিন্তু এই চৈতন্য বা পুরুষের অংশমাত্র। 

চৈতন্য হলো এক অখন্ডতার ধারণা , তাকে আলাদা করে ভাবা ভুল। 

 
 
ক্ৰমশঃ 

ব্লগার -রবীন মজুমদার   

মহাভারতের যাজ্ঞসেনী- ৫১ তম  অধ্যায় (১১৫)

Searching for hidden Truth (19) 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

(২৩৩) একটি ফোঁড়ার জন্মবৃত্তান্ত -

(২৩১) মানুষ থেকে নক্ষত্রে উত্তরণ

(২১০ ) ঝড়-বৃষ্টির একাল সেকাল