আমরা বাস করি আনন্দে (১১৮)
আমরা বাস করি আনন্দে (১১৮)
সৃষ্টির প্রথমবস্থায় জগতের উপর মায়া ভীষণ ক্ষুদ্রাকারে ভাসতে থাকে।ধীরে ধীরে মায়ার ভিতর পুঞ্জিভূত হতে থাকে কামনা ও বাসনা। উপযুক্ত পরিবেশের সান্নিধ্যে এসে সে কলেবরে বৃদ্ধি পেয়ে এক কৃত্তিম জগৎকে মানুষের সামনে হাজির করে এবং সেই জগৎকেই মানুষ প্রত্যক্ষ করে।
গত সংখ্যার পর ০ ০ ০ ০ ০
মানুষের চিন্তা ক্রমান্বয়ে আরো এগিয়ে চলে, চলতে চলতে ভাবে; আর বাস্তবের সাথে সেই চিন্তাকে খাপ খাওয়াতে চায়, চিন্তার সাথে বুদ্ধি জোট বাধে, শুরু হয় চিন্তার থেকে উদ্ভূত ভাবনাগুলিকে চুল চেরা বিশ্লেষণের কাজ আর ঠিক এই সময় সে বিজ্ঞানের পরিসরে এসে উপস্থিত হয় এবং সেই পরীক্ষালদ্ধ উত্তরই হল বিজ্ঞান। তাহলে, বিজ্ঞান ব্যাখ্যা করে জীব আর জগৎকে নিয়ে।
শুরু হলো পুনরায় চিন্তনের যাত্রা,যতই বিদ্যার অনুশীলন চলবে ততই সমৃদ্ধ হবে জ্ঞানের ভান্ডার আর সেই জ্ঞানকে নিয়ে সমৃদ্ধ হবে বুদ্ধির ধার। চিন্তন তো সারা জগৎএ ঘুরে ফিরেছে কিন্তু এই জগতের বাইরে আর যে কিছু আছে সে বুঝতে পারছে কিন্তু তাকে কিছুতেই স্পর্শ করতে পারছেনা। অনন্ত জিজ্ঞাসা আর নাছোড়বান্দা মনোভাব তাকে একদিন পৌঁছে দিল তারই অন্তঃপ্রকৃতিতে। জানতে পারলো দৃশ্যমান জগৎই শেষ কথা নয়, তার বাইরেও একটা ভীষণ শক্তিমান জগৎ আছে, আর ঠিক সেদিন থেকে মনের অন্দরমহলে পাকাপাকিভাবে জায়গা গ্রহণ করলো সৃষ্টিকর্তা বা ঈশ্বর শব্দটির অস্তিত্ব। এই নতুন ভাবনার সংযোজনে যে দর্শনের জন্ম নিল তার পরিচয় হল ধর্মীয় দর্শন আর তার ক্ষেত্র হলো "আমি সে ও সখা" অর্থাৎ " আমি আছি, সে অর্থাৎ আমার সাথে দৃশ্যমান জগৎ আছে আর আছে আমার সখা স্বরূপ ঈশ্বর আছে " । বিজ্ঞান যেখানে "আমি এবং আমার" দৃশ্যমান জগতের বিশ্লেষণের মধ্যে নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখে, সেখানে ধর্মীয় দর্শন আরো এক পা এগিয়ে ঈশ্বর ভাবনাকে সঙ্গে করে নেয় । এই ধর্মীয় দর্শনের থেকে উদ্ভূত সত্যগুলির গ্রহণ যোগ্যতা সাধারনের কাছে কতখানি তা নিয়ে ঋষি মুনিদের সংশয়ের শেষ নেই । ধর্মীয় দর্শন ব্যাখ্যা করে জীব ও জগৎ আর সৃষ্টিকর্তা অর্থাৎ ঈশ্বরকে নিয়ে।
যে আদর্শকে সামনে রেখে ঋষিরা এই সত্য আবিষ্কারের জন্য নিজেদের জীবনকে উৎসর্গ করেছিলেন তাকে বাস্তবায়িত না করে অর্থাৎ তত্ত্বের সঠিক প্রয়োগ না করে ক্ষান্ত হবেন না ------- পরের সংখ্যায়।
ক্ৰমশঃ
ব্লগার -রবীন মজুমদার
মহাভারতের যাজ্ঞসেনী- ৫৩ তম অধ্যায় (১১৭)
Searching for hidden Truth (21)
মন্তব্যসমূহ