ধর্ম ও শাসক (139)

 ধর্ম ও শাসক (139)


প্রথম সংখ্যা। .

        যখন শাসকের কোন নীতি থাকেনা , তখন সে ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনীতি করে। কেননা, সমাজে একটা ধর্মীয় পরম্পরায় জন্ম থেকে দেশবাসী কয়েদ হয়ে আছে। 

        রাজনীতির আসল খদ্দের হচ্ছে সাধারণ মানুষ আর সাধারণ মানুষ কোন না কোন ধর্মের দ্বারা পরিচালিত।  ধর্মের নামে ব্যবসা করে একদল সুবিধাবাদী ধর্মগুরুরা। তাই রাজা যদি তাদের উপঢোকন দিয়ে বশে রাখে তাহলে সেই গুরুরা সাধারণ মানুষের কাছে সেটাই প্রচারই করবে, যা রাজা তাদের  শিখিয়ে দেবেন। সব ধর্মেই  কম বেশী এই পরাম্পরাটা চলে আসছে। আর এসবের মুলে আছে সাধারণ মানুষের  অজ্ঞানতা ও মিথ্যাজ্ঞান। সুতরাং সংগ্রামটা সেখান থেকেই শুরু করতে হবে। 

        দিকে দিকে যে রাজনৈতিক আন্দোলন দেখা যায় , তার শিকড়টা ভীষণ আলগা। কেননা , আন্দোলনের মূল শক্তিরাই জানে না সঠিক আর বেঠিকের প্রভেদ।  কালস্রোতে তারা গা ভাষায়।  প্রকৃত শিক্ষার আলোকে মূল শক্তিকে যতদিন শিক্ষিত করা যাবে না, ততদিন রাজনৈতিক দলগুলির ট্রাপিজের খেলা চলবে আর তার ফল ভোগ করবে সাধারণ মানুষ। 

            একটি জিনিস ভীষন পরিষ্কার যে সত্য বস্তুর কোন পরিবর্তন হয়না। যেমন, মাধ্যাকর্ষন শক্তি , যেটা নিউটন আবিস্কার না করলেও ছিল এবং থাকবে। আবার এই সত্যটি না ভাবার কোন অবকাশ নেই যে, আজ পর্যন্ত রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে যত মতবাদ পরীক্ষিত   হয়েছে তা তাদের ইপ্সিত লক্ষ্য পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। কেননা , তার অন্যতম  কারন হচ্ছে অসম  অর্থনীতি এবং  অশিক্ষা ও কু- শিক্ষা ।  
        উল্টে স্বল্প শিক্ষিত অথবা উদেশ্য প্রনোদিত ভাবে দল গুলি বাণিজ্যিক  প্রতিষ্ঠানকৃত উৎপাদিত সামগ্রীর মতো ব্র্যান্ড ডেভেলপমেন্ট করছে। বিপণনকে স্থায়ী বাজার দখলের লড়াইতে  রাজনৈতিক দল গুলি বাণিজ্যিক প্রতিযোগিতার অন্যতম হাতিয়ার "মার্কেট রিসার্চের" উপর জোর দিয়েছে ,  সেখান থেকে "কাস্টমার নীডস এবং স্যাটিসফ্যাশন  মেসারমেন্টের " ডাটাটা কালেকশন করে  আর সেইরূপ বিভিন্ন সময়ে দলগুলি তাদের গণমুখী নাম দিয়ে বাজারে ইন্ট্রোডিউস করে মানুষ ধরার জন্য। 
               একটা স্বেচ্ছা শ্রমের ও আদর্শের  ভিত্তিতে গড়ে উঠা সংগঠনগুলি  সব কিছু আদর্শকে ভুলে আজ একটা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।  জনসাধারণ হচ্ছে কনসিউমার আর রাজনৈতিক দলগুলি হচ্ছে কোম্পানি। সেখানে গ্রাস রুটে  গ্রামীণ মার্কেটিং এজেন্ট থেকে শুরু করে এক্সেকিউটিভ আছে , মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানির মতো সেলস প্রমোশনাল প্ল্যান আছে ,  আউট সৌর্সইং করতে হয়  ,  ম্যানেজমেন্ট  প্রফেশনালদের মতামতের প্রাধান্য দেওয়া হয়। 
        আজকে ভাবার সময় হয়েছে  ভারতবর্ষের উন্নতির সোপান কোন পথে চালিত হবে ? স্বামী বিবেকান্দের আদর্শে অর্থাৎ আধ্যাতিক জমির  উপর ভিত্তি করে সমাজতন্ত্রের প্রতিষ্ঠার  উপর  না  অন্য কোন মতবাদের উপর। 

ক্রমশঃ 
ব্লগার - রবীন মজুমদার 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

(২৩১) মানুষ থেকে নক্ষত্রে উত্তরণ

(২৩৩) একটি ফোঁড়ার জন্মবৃত্তান্ত -

(২১০ ) ঝড়-বৃষ্টির একাল সেকাল