(১৪২) আত্মার জবানবন্দি ( ১ম সংখ্যা )

 (১৪২)    আত্মার জবানবন্দি ( ১ম সংখ্যা )


        আমি আত্মা, এই বিশ্বে মানুষ আমাকে বিভিন্ন নামে সম্বোধিত করে থাকেন। কেহ কেহ আমাকে বলে পুরুষ, এটা অবশ্য বেদান্তবাদীদের ব্যাখ্যা , কেহবা বলেন চৈতন্য, কেউ বলে ব্রহ্মা আবার কেউ বা বলেন ঈশ্বর , তাছাড়া আরো কত নামে এই জগৎ সংসারে আমি পরিচিত। আসলে, যে যেভাবে  আমার অস্তিত্বকে অনুভব করে, সেভাবে তাঁরা প্রকাশ করে থাকে। প্রকৃতপক্ষে, আমাকে কেউও দেখতে পারেনা, কিন্তু আমি সবাইকে দেখতে পারি, তাই আমি দ্রষ্ট্রা।  
         যেহেতু আমি আত্মপ্রচার করিনি বা কখন মানুষের মতো এক উন্নত জীবের কাছে প্রকাশমান হয়ে পার্থিব বস্তুর সাথে নিজেকে একাকার করে দিইনি, তাই আমাকে নিয়ে তোমাদের  কৌতূহলের সীমা নেই। 
কৌতূহল -
        এই শব্দটি ভারী সাংঘাতিক। এর বীজটা আমিই মানুষের মনের গভীরে খুব সচেতনভাবে প্রথমদিন বপন করে দিয়েছিলাম। আর সেদিন থেকেই বুঝতে পেরেছিলাম, এই মানুষ নামক চতুর প্রাণীটি  আমাকে জলে, স্থলে, অন্তরীক্ষে  খুঁজবার চেষ্টা চালিয়ে যাবে। আমি আসলে ধীর ও স্থির হলে কি হবে, আমি তো জানি সৃষ্টির এই প্রক্রিয়াকে সচল রাখতে গেলে পরস্পর বিরোধী ভাবকে দিয়ে এই বিশ্বচরাচরে ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে।  আমি ধরা দিতে না চাইলে কিভাবে তোমরা আমাকে জানতে পারবে ? তাই তোমাদের বুদ্ধি দিয়েছি, চিন্তা করার শক্তি দিয়েছি আর  তাকে সমৃদ্ধ করার জন্য জ্ঞান অর্জনের পিপাসা দিয়েছি। আবার আমার আর তোমাদের মাঝখানে অহংকারকে  প্রবেশ করিয়ে এক মায়াবী জগৎ  সৃষ্টি করে দিয়েছি এবং তা দেখে তোমার বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছো। খোঁজ কর শুধু খুঁজে যাও, নিশ্চয়ই অনুভব করতে পারবে। 

অব্যক্ত অবস্থা -
        হে মানবগণ , তোমরা তোমাদের চর্মচক্ষে আজ যা কিছু প্রত্যক্ষ করছো, তার পূর্ব অবস্থা অবশ্যিই  ছিল, যা তোমরা কখন অনুভব করতে পারোনি, তখন  আমি আমার সৃষ্টির কাজ শুরু করিনি। দ্বান্দ্বিক চরিত্র নিয়ে সৃষ্টি নামক কারিগরটি  আমারই তত্ত্বাবধানে  নিদ্রিত অবস্থায় বাস করছিল আর সেই অবস্থাকেই তোমাদের দর্শনে যাঁকে  'অব্যক্ত' অবস্থা বলে। 

বি: দ্রঃ  ভালো লাগলে শেয়ার করুন , কমেন্ট করুন , ফলো করুন আর খারাপ লাগলেও  কমেন্ট করুন ।।

 ক্ৰমশঃ   

ব্লগার -রবীন মজুমদার

মহাভারতের যাজ্ঞসেনী- ৬৬ তম  অধ্যায় (১৩৩)

Searching for hidden Truth (৩৬) 

 




মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

(২৬৯) রবি সৃষ্টির বৈচিত্রতা (প্রথম নিবেদন )

(২৩১) মানুষ থেকে নক্ষত্রে উত্তরণ

(২৪২) নারীর একাল ও সেকাল