রজ্জুতে সর্প দর্শন (145)

রজ্জুতে সর্প দর্শন (145)


গভীর ঘুমে আছন্ন শেয়াল রাজা।  হঠাৎই  যেন ঘুমের ঘোরে  'ম্যাও  '  'ম্যাও  ' শব্দ রাজার সুখ নিদ্রার বিলক্ষণ ব্যাঘাত ঘটলো।  তিনি যেন স্পস্টতই দেখতে পেলেন একদল বিড়াল এসে রাজপ্রাসাদের সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে এসে রাজার বিছানার চারপাশে এসে দাঁত নখ বের করে সামনে এসে ডাক পারছে ।  তাদের সাথে শহরের গৃহবাসী বিড়ালরা ও জোট বেঁধেছে। বিড়ালদের উদ্দত থাবা রাজার গালের উপর পড়ার আগেই রাজা বিছানার উপর ধড়পড় করে জেগে উঠলেন।  উঠে দেখলেন, সারা বিছানা ঘামে ভিজে চপচপ করছে।  এদিকে ঘুমের ঘোরে রাজামশাইয়ের গোঙানির শব্দে রানীমার ও  ঘুম ভেঙ্গে গেছে। 

কি হয়েছে ! রানীমার প্রশ্নের উত্তরে, রাজমশাই বললেন, না না তেমন কিছু না, স্বপ্ন দেখছিলাম- এই বলে প্রসঙ্গ এড়িয়ে তিনি বাইরের লনে এসে একাকী বসলেন। 

যেন   বিড়ালের নিরীহ শব্দটি রাজার মনের গভীরের জমে থাকা ইচ্ছাকৃত ভাবে তাঁদেরকে  বঞ্চনা, সেটা   অভিশাপে পরিবর্তিত হয়ে  ব্যাঘ্রের গুরু গম্ভীর ডাকের  ন্যায় রাজার কানে বেজে উঠে এক  আতঙ্কের  পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। 

 তাঁদের এক মাত্র বেঁচে থাকার খাদ্য পুকরের  মাছ। যে খাবারের  অধিকার তারা দীর্ঘদিন ধরে ভোগ করে আসছিলেন, সেই  অধিকারে রাজা মশাই ও তার সঙ্গী ব্যবসায়ী সাথীরা  অন্যায় ভাবে ভাগ বসাচ্ছে।  শুধু তাই নয় প্রত্যেক জলাশয়ের কাছ থেকে তাদের উচ্ছেদ করে, কোন রকমের পুনর্বাসন ছাড়াই উদ্বাস্তু করে দিচ্ছেন রাজার পাইক আর বরকন্দাজরা। 

স্বীয় অপরাধ স্বপ্নের আকার ধারণ করে, আজকে তারা যেন পিল পিল করে সিঁড়ি বেয়ে উঠে এসে রাজার বিছানার চারপাশে এসে দাঁত নখ বের করে রাজাকে ভয় দেখাচ্ছে। 

মন্ত্রী সভার জরুরী  বৈঠক ডাকলেন আতঙ্কিত  শিয়াল রাজা, মন্ত্রী  ও পারিষদদের আদেশ দিলেন আপসহীনভাবে তাদের উচ্ছেদ জারি থাকবে আর শহর অঞ্চলে বিড়ালদের সমর্থনে যারাই 'ম্যাও ', ' ম্যাও ' আওয়াজ তুলবে তাদের যেন অবিলম্বে গারদে পোড়া হয়। 


ব্লগার - রবীন মজুমদার 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

(২৩১) মানুষ থেকে নক্ষত্রে উত্তরণ

(২৩৩) একটি ফোঁড়ার জন্মবৃত্তান্ত -

(২৩২)বোধোদয়