অনুভূতির বহুগামিতা ( ১৫০)
অনুভূতির বহুগামিতা ( ১৫০)
সন্ধিক্ষণ -এর পরে......... অনিন্দ্য তোর লিভ-ইনের পিছনে শুধুমাত্র যৌনতা এই লজিকটা মেনে নিতে পারলাম না; সৃঞ্জনী বলে উঠলো। তোর বক্তব্যের মধ্যে ফ্রয়েডের বক্তব্যের অনুরণন শুনতে পাচ্ছি।
মেসোমশাইয়ের আত্মত্যাগের প্রেরণা আর তোর কামের প্রেরণার এই দুইয়ের পিছনে একটাই কমন ফ্যাক্টর হচ্ছে ' আবেগ' আর তার জন্মস্থান আমাদের হেড অফিসে, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।
সাম্প্রতিককালে, একদল নৃতত্ত্ববিদ ও সামাজিক মনোবিজ্ঞানীরা যৌথভাবে এর উপর গবেষণা চালান। প্রেমের গভীরে নিমজ্জ্মান ১৭ জন নারী পুরুষকে এই গবেষণার জন্য বেছে নেওয়া হয়। যে ডিভাইসটি তাদের মাথায় বসানো হয়, তার নাম ফাঙ্কশনাল ম্যাগনেটিক রেজোনেন্স ইমেজিং সিস্টেম(FMRI)। এবার প্রেমিককে প্রেমিকার আর প্রেমিকাকে প্রেমিকের ছবি দেখানো হয়। যার উত্তর বেরিয়ে এলো তা সম্পূর্ণ ফ্রয়েডীয় ধারণার সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুতে। সেই ফলাফলের ভিত্তিতে যেটা বেরিয়ে এলো, সেটা মানুষ হয়তো বুঝতো কিন্তু প্রমান পেলো, প্রেমের আর যৌনতার সত্ত্বা দুইটি ভিন্ন।
"ডোপামিন" নামে একটা নিউরোট্রান্সমিটার যেটা রাসায়নিক উপাদানে তৈরি, তা আমাদের মাথার ডানদিকে থাকে। প্রেমের বা ভালোবাসার অনুভূতি যখন আমাদের পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে সেখানে গিয়ে পৌঁছায়, তখন তার ছোয়ায় সক্রিয় হয়ে উঠে ডোপামিন আর তখন জাগ্রত হয় ভালোলাগার আবেগ।
আবার অন্যদিকে যৌনতার অনুভূতির দায়িত্ব নিয়ে সক্রিয় হয়ে উঠে, আমাদের বাঁ-দিকের মস্তিষ্ক।
আমাদের স্নায়ুতন্ত্র পরিবর্তিত হয় প্রেমের সময়সীমার উপর। অর্থাৎ প্রেমের সময়সীমা স্নায়ুতন্ত্রের উপর কাজ করার সেটা অন্যতম শর্ত। যৌনতার সাথে প্রেমের পার্থক্য করতে হয় সম্পর্কের মেয়াদ কতখানি তার উপর। এটি এখন প্রমাণিত যে, প্রেম ও যৌনতা দুটি আলাদা, যদি 'কিন্তু' শব্দটিকে আলাদা করে রাখা যায়। শক্তি প্রদর্শনের দৃষ্টিকোন থেকে বিচার করলে, দেখা যায় যে, প্রেম বা ভালোবাসা অধিক শক্তিশালী, যৌনতার থেকে এবং প্রেমের বা ভালোবাসার স্থায়িত্বও দীর্ঘ সময়ের জন্য থেকে যায়।
নারী ও পুরুষের সম্পর্কের প্রারম্ভিক দায়িত্বটা ইন্দ্রিয়গুলিই কাঁধে নিয়ে নেয়। ইন্দ্রিয় তার দায়িত্ব নিয়েই তাকে অনুভূতির কাছে পাঠিয়ে দেয়। অনুভূতির বড় জন হচ্ছে 'সুক্ষ ' আর ছোটজন হচ্ছে 'স্থুল'। কেউ এলেই প্রথমে ছোটজন দৌড়ে এসে দ্বার খোলে, তাই সর্বাগ্রে থাকে স্থুল অনুভূতি। কোন অনুভূতি সেখানে প্রাধান্য পাবে তার উপর নির্ভর করে প্রেমের প্রগাঢ়তা।
আবার জাগতিক পরিবর্তনের প্রভাবে উদ্ভূত কারণ থেকে কার্যে পরিণত হওয়ার উপর নির্ভর করে সম্পর্কের বাঁধনের দৃঢ়তা ও দুর্বলতা। যদি হালকা হয়ে যায়, তখন মন আবার আরকেটি মনের অন্বেষনে বের হয়। যদিও সামাজিক অনুশাসন দেহগতভাবে মিলতে প্রাচীর হয়ে দাঁড়ায় কিন্তু মন সেখানে পাখা মেলে তাকে ধরতে যায়, কেননা সে যে সুক্ষ অনুভূতির প্রকাশক, তাই তো তাকে দেখা যায় না।
সৃঞ্জনী তার যুক্তির উপসংহার টেনে বলল, একমাত্র জ্ঞানই সেখানে সহবস্থান, সহমর্মিতা ও সম্পর্কের পূর্নর্মিলনের দ্বার উন্মোচিত করে।
ক্ৰমশঃ
বি: দ্রঃ ভালো লাগলে শেয়ার করুন , কমেন্ট করুন , ফলো করুন আর খারাপ লাগলেও কমেন্ট করুন'
ব্লগার -রবীন মজুমদার
মহাভারতের যাজ্ঞসেনী- ৬৭ তম অধ্যায় (১৩৫)
Searching for hidden Truth (৩৯)
৬/০২/২০২৩ পর্যন্ত ১৫০টি ব্লগ পোস্ট করা হয়েছে
আত্মদর্শনমূলক ব্লগ -
- ওপারের সংগীত
- ঐকতান
- সভ্যতার নামে প্রহসন
- নাড়ী ছেড়ার গান
- আত্মত্যাগ কখনো কখনো আত্মহত্যার সামিল হয়
- দলিতের সভ্যাভিমান
- একটি প্রান্তিক মানুষের মৃত্যু সভা
নিছক প্রেমের গল্প -
- বনবিতান
জীবনের সংগ্রামের পাশাপাশি মানুষের সংগ্রামের কথা -
- চে গুয়েভারা দ্য রেভলিউশনারী আইকন অল দ্য টাইম ( ৪টি পর্বে )
পৌরাণিক - বিশ্লেষণমূলক
- আমি মহাভারতের পৃথা (১৭টি পর্বে )
- ব্যাসদেবের জীবনের অপ্রকাশিত ঘটনা
- মহাভারতের রাজনীতি ও নারীদের নীরব বলিদান (৬ টি পর্বে )
নগর দর্পন -
- ধর্ম ও শাসক
- সমাজের রাজন্যবর্গ
- হালচাল
- সহাবস্থান
- নারদের মর্তে ভ্রমণ ( ২৩ টি পর্বে )
- মনীষীরা কি আজকের রাজনীতির কাঁচামাল
- ক্ষুদ্র আমি তুচ্ছ নই এই সুন্দর ভুবনে
- রজ্জুতে সর্প দর্শন
নিছক প্রেমের গল্প -
- বনবিতান
দর্শন আশ্রিত ব্লগ -
- অহংকারের রসায়ন (৮টি পর্ব - এখনো চলছে )
- আসা আর যাওয়া
- সংঘর্ষ
- উত্তর মীমাংসা
- আগামী
- আমরা বাস করি আনন্দে
- সৃষ্টির মুলে দন্দ্ব
- অখন্ড যখন খণ্ডিত হয়
- কোথায় পাব তারে
- গোলক ধাঁধা
- চির যৌবনা
- রূপ ও স্বরূপের লুকোচুরি
- একটি অক্ষরের গল্প
- মহাভারতের যাজ্ঞসেনী (৪৫ টি পর্বে -এখনো চলবে )
- সরণি
- পরম্পরা
- মেলবন্ধন
- সন্ধিক্ষণ
- অনুভূতির বহুগামিতা
মন্তব্যসমূহ