১৭০ আর কত গুন থাকলে তাকে জাতীয় নায়ক বলা যায়

 

১৭০ আর কত গুন থাকলে তাকে  জাতীয় নায়ক  বলা যায়  

আজ থেকে প্রায় ১০০ বছর আগে ইতিহাসের সংগ্রহশালায় প্রিজারভেটিভ দিয়ে সন্তর্পনে বাঁচিয়ে রাখা ফ্যাসিস্ট  গুণগুলিকে দিয়ে প্যাথলজিক্যাল টেষ্টের কিট বানানো হয়েছিলো। উদ্দেশ্য নিতান্তই মহৎ, এই গুণ গুলি বর্তমান রাষ্ট্র ব্যাবস্থার মধ্যে কতখানি প্রকাশিত এবং কোন কোন বৈশিষ্ট কতখানি উজ্জ্বল,  তার সন্ধান  করা নিয়ে আজকের যাত্রা। 

প্রাচীন সভ্যতার  অন্যতম ধ্বজ্জা বহনকারী রোমান, বৈদিক সভ্যতার আলোকে অতি প্রাচীনকাল থেকে পৃথিবী সমৃদ্ধ হয়েছে। কোন সভ্যতা কাকে অনুকরণ করেছে তা নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে কিন্তু ফ্যাসিস্ট সভ্যতার পিতৃত্বের দাবিদার রোম বৃহত্তর অর্থে ইতালি অবশ্যিই দাবি করতে পারে। রুপকার বেনিতো মুসোলিনি। 

ভালো করে তুমি চেয়ে দেখ , দেখতো  চিনতে পারো  কিনা --

হে মহান জনগণ, তুমি যদি বিশ্বাস করো তোমার ব্যক্তিগত সুখ দুঃখের উর্ধে তোমার রাষ্ট্রের ইচ্ছা ও অনিচ্ছা, তাহলে ত্যাগের মন্ত্রে দীক্ষিত হও, বর্জন কর তোমার ইচ্ছা অনিচ্ছাকে। তোমার অধিকারগুলিকে একটি থালায় সাজিয়ে নৈবিদ্য করে অর্পণ করো তোমার দেশমাতৃকাকে। দেশবাসীর অধিকারের বির্সজনে সমৃদ্ধ হবে দেশের ভান্ডার। এখনই তুমি নিজেকে চিহ্নিত করার সুযোগ পাবে নিজেদের দেশপ্রেমিক হিসাবে প্রতিপন্ন করতে। ( নচেৎ তোমাকে দেশবিরোধী উপাধি দিতে রাষ্ট্র কার্পণ্য করবে না - এটা অবশ্য বলা নেই, কিন্তু ব্যাপক অর্থে এটাই মানে হয় ) রাষ্ট্র পূরণ করবে নাগরিকদের চাহিদা, যেখানে এই দায়ভার রাষ্ট্র গ্রহণ করেছে, সেখানে আলাদাভাবে চাওয়ার অর্থ রাষ্ট্রের উদ্দেশ্যকে নেহাতই ছোট করা। নিজ অধিকার নিয়ে অনধিকার চর্চা করো না করাটাই শ্রেয়। 

এমন একটা দেশ যেখানে ধান্য আছে তো ধন  নেই  -

এমন একটা দেশ আছে।, সেই দেশে, সেলাম  জানাতে হয় দারিদ্রতাকে, অশিক্ষাকে, স্বাস্থ্যহীনতাকে, প্রতি পাঁচ বছর অন্তর প্রতিশ্রুতি আর নগদে বিক্রিত সাধারণ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারের অপপ্রয়োগকে,  নিঃশব্দে মেনে নেওয়া রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস আর ভেদাভেদির রাজনীতিতে বলি হয়ে যাওয়া অবুঝ শিশুকে আর অত্যাচারিত মানুষগুলির আতঙ্কিত চোখগুলিকে।  তবুও তারা অমলিন,  ক্লান্তিহীন জীবনের দুঃখকে নিয়তির অমোঘ নির্দ্দেশ বলে  মেনে নিয়ে  জীবন জীবিকা নির্বাহ করে। প্রাসাদসম অট্টালিকার পাশে এক জীর্ন কুটিরে মৃত্যুর জন্য দিন গোনে। 

ক্ষমতার প্রশ্নে রাষ্ট্রই একমাত্র সর্ব্বোচ প্রতিষ্ঠান। 

    রাষ্ট্রকে যদি গাড়ি বলে মনে করা হয়, তাহলে তার চালক তো বহুজন হতে পারেনা, তাই চালক হবে একজন। যে শৌর্যে হবে  সিংহ, আকর্ষনে থাকবে চুম্বকের ন্যায় গুণ, ব্যক্তিত্ব থাকবে আকাশ চুম্বি, বাক্চাতুরীতে যেন গুপী বাঘার সেই ভূতের রাজার আশীষে  বলীয়ান একমাত্র মনুষ্যসন্তান। 

হে বন্ধু, তোমার আলোকে আলোকিত কর সে যে আমারই  প্রার্থনা -

অর্থনীতির প্রশ্নে শাসক আর তার দমকে ধরে রাখতে পারেনি। ধরাছোয়ার নাগরদোলায় কর্পোরেটের সাথে একই ডালে দুলছে।  মুক্ত হস্তে তুলে দিচ্ছে  মূলধন আর  প্রাকৃতিক সম্পদের ডালি, সমৃদ্ধ করছে তাদের বাগানকে, উচ্ছেদ করছে পূর্বের ভোগসত্তাধারীদের । শুধু দিয়েই ক্ষান্ত নয়, দুস্টু শ্রমিকদের সুদীর্ঘ সংগ্রামের মধ্যে পাওয়া ধর্মঘটের  অধিকারকে  অবৈধ করে দিচ্ছে আর ঐ দীর্ঘ দিন ধরে ভোগ করা জনজাতিদের বনজ সম্পদের প্রতিও অধিকারকে দাড়ির (।) সযত্ন ব্যবহারে উপবাসী করে দিচ্ছে। 

সো যাও নেহি তো রাবন  আ জায়গা -

পাশের দেশের  রাবণরা  যখন তখন ধেয়ে আসতে পারে, এখন উচিত তোমার সমস্ত সত্ত্বা ভুলে গিয়ে রাষ্ট্রের কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়া।  রাষ্ট্রই এযুগের কান্ডারী, যারা সাধারণ মানুষকে রাবনদের হাত থেকে বাঁচাতে পারে। তার পরিবর্তে রাষ্টের চাই জনগনের নিরঙ্কুশ আনুগত্য। 

অধিক সন্ন্যাসীতে  গাজন নষ্ট-

যেই তত্ত্বে এক নায়কই রাষ্ট্রের চালিকা শক্তি হতে পারে, তাহলে এক জাতি, একই সংস্কৃতি, একই ভাষা, একই ধরনের শিক্ষা  ইত্যাদি  হবেনা কেন ? অধিক সন্ন্যাসীতে যদি গাজন নষ্ট হয়, তাহলে বহুর  এক সন্ন্যাসী থাকায় শ্রেয়।  বহুজনে বহুমত আর বহুমতে বিভাজন আর বিভাজনে ধ্যান ভঙ্গ।  সুতরাং শক্তিশালী রাষ্ট্রগঠনের পক্ষে এই ধরনের আবদারকে প্রশ্রয় দেওয়া রাষ্ট্র আদর্শের পরিপন্থী, শেষ দিয়েই  শুরু হওয়া উচিত।  

অতীতের মলিনতাকে ধুয়ে মুছে শুরু হোক পথ চলা -

এই  যে রাষ্ট্রের মন্ত্রীকুল, রাষ্ট্র নামক গাড়িটা আজকে ধংসের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছে। যতগুলি পুরানো যন্ত্রাংশ আছে তাদের পাল্টাও। শিক্ষানীতি, অর্থনীতি , সমাজনীতি ইত্যাদি সব পাল্টাও। লেখা হোক নতুন আগমনী গান। 

বলি, রাত কত হলো  !  আগামী দিনে   মুসোলিনির যোগ্য উত্তরসূরি  কি  পাওয়া গেল ?  ইতিহাস উত্তর দেবে। 

আজ থেকে কয়েক যুগ পরে রাষ্ট্র বিজ্ঞানের গবেষকরা তাদের রাসায়নাগারে ইতিহাসের সংগ্রহীত সেই কিট দিয়ে পরীক্ষা করবে  সেদিনের নিরিখে  আজকের দিনের  বিভিন্ন দেশের নায়কদের। তাদের মোডাস অপারেন্ডি সাথে মিলিয়ে মিলিয়ে বলবে    কোনটা কোন জাতীয় ছিল। 

০৫/০৮/২০২৩ পর্যন্ত   ১৭০ টি  ব্লগ পোস্ট করা  হয়েছে 

আত্মদর্শনমূলক ব্লগ - 

  • ওপারের সংগীত 
  • ঐকতান 
  • সভ্যতার নামে  প্রহসন 
  • নাড়ী ছেড়ার গান 
  • আত্মত্যাগ কখনো কখনো আত্মহত্যার সামিল হয় 
  • দলিতের সভ্যাভিমান 
  • একটি প্রান্তিক মানুষের মৃত্যু সভা 
  • ২১শে ফেব্রুয়ারীর মূল্যবোধ  (১৫২)
নিছক প্রেমের গল্প -
  • বনবিতান 
জীবনের সংগ্রামের পাশাপাশি  মানুষের সংগ্রামের কথা   -
  • চে গুয়েভারা দ্য রেভলিউশনারী আইকন অল দ্য টাইম ( ৪টি পর্বে )
পৌরাণিক - বিশ্লেষণমূলক  
  • আমি মহাভারতের পৃথা (১৭টি পর্বে )
  • ব্যাসদেবের জীবনের অপ্রকাশিত ঘটনা 
  • মহাভারতের রাজনীতি ও নারীদের নীরব বলিদান (৬ টি পর্বে )
  • মহাভারতের যাজ্ঞসেনী (৪৬টি পর্বে )
নগর দর্পন -
  • ধর্ম ও শাসক 
  • সমাজের রাজন্যবর্গ 
  • হালচাল 
  • সহাবস্থান 
  • নারদের মর্তে ভ্রমণ ( ১৮+৬=২৪ টি পর্বে )
  • মনীষীরা কি আজকের রাজনীতির কাঁচামাল 
  • ক্ষুদ্র আমি তুচ্ছ নই এই সুন্দর ভুবনে 
  • রজ্জুতে সর্প দর্শন 
  •  কুরুক্ষেত্রে  একটি  বিনিদ্র রাত (১-৪ পর্ব )
নিছক প্রেমের গল্প -
  • বনবিতান 
দর্শন, ইতিহাস ও রাজনীতি  আশ্রিত   ব্লগ -
  • অহংকারের রসায়ন (৮টি পর্ব - এখনো চলছে )
  • আসা আর যাওয়া 
  • সংঘর্ষ 
  • উত্তর মীমাংসা 
  • আগামী 
  • আমরা বাস করি আনন্দে 
  • সৃষ্টির মুলে দন্দ্ব 
  • অখন্ড যখন খণ্ডিত হয় 
  • কোথায় পাব তারে 
  • গোলক ধাঁধা 
  • চির যৌবনা 
  • রূপ ও স্বরূপের লুকোচুরি 
  • একটি অক্ষরের গল্প 
  • মহাভারতের যাজ্ঞসেনী (৪৫ টি পর্বে -এখনো চলবে )
  • সরণি 
  • পরম্পরা 
  • মেলবন্ধন 
  • সন্ধিক্ষণ 
  •  অনুভূতির বহুগামিতা
  • অসুখ 
  •  সংকট কারে কয় 
  • অন্ধজনে দেহ আলো   
  • প্রেমহীনতা কি  সামাজিক ব্যাধি  
  • ১৬২ হিউস্টনের  ডাইরি (১০ তম পর্ব )
  • ১৬৩   রাম কি এখনও  বনবাসে আছেন ?
  • ১৬৪ হ রে ক রে ক  ম বা (১)
  • ১৬৫ এক্সটেন্ডেড মহাভারত 
  • ১৬৬  স্মাইল রিপ্লেসমেন্ট প্রজেক্ট (১ম )
  • ১৬৭  হাসির  পুনঃস্থাপন (২) 
  • ১৬৮ আমাকে দেখুন 
  • ১৬৯  বিয়ে কি নারীর  নিরাপত্তার না শোষনের পাকাপাকি হাতিয়ার ?
  • ১৭০ আর কত গুন থাকলে তাকে  জাতীয় নায়ক  বলা যায়  





 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

(২৩১) মানুষ থেকে নক্ষত্রে উত্তরণ

(২৩৩) একটি ফোঁড়ার জন্মবৃত্তান্ত -

(২১০ ) ঝড়-বৃষ্টির একাল সেকাল