(১৭৮) মিথ্যার বেসাতি আর একরাশ অলীক ধারণা (প্রথম পর্ব ) -
(১৭৮) মিথ্যার বেসাতি আর একরাশ অলীক ধারণা (প্রথম পর্ব ) -
এক যে ছিল কারিগর
লেখা বা বলার আস্বাদ কোনটা পাঠক বা শ্রোতার মনে কখন সাময়িক আবার কখন বা দীর্ঘস্থায়ী। লেখা বা ভাষণের মধ্যে স্বাদের তারতম্য অবশ্যিই আছে। যেমন, কোনটা রসমধুর, আবার কোনটা ভীষণ ঝাল, কোনটা ভীষণ হালকা, কোনটা ভীষণ তিতকুটে, কোনটা আবার জ্ঞানধর্মী ইত্যাদি ইত্যাদি। স্থায়িত্ব নির্ভর করে গ্রহীতা কোন স্বাদে আকৃষ্ট তার উপর বা বক্তার বক্তব্যের স্বাদ গন্ধ মিশ্রনের ক্ষমতার উপর।
আমি কান পেতে রই
বক্তার বলার তারতম্যের সাথে শ্রোতার মনের অন্তর্নির্মিত(ইনবিল্ট) গভীরতার সাথে একাত্ব হোতে যদি বেগ না পায়, তাহলে সেটা পাঠক কিংবা শ্রোতার হৃদয়ে সেই সময়ের জন্য একটা জায়গা করে নিতে পারে। কোন বিষয়টি ক্ষণস্থায়ী বা দীর্ঘস্থায়ী হবে সেটা নির্ভর করে তার কার্য কারণের উপর। খানিকটা হৃদয়স্পর্শী গানের সুরের মতো।
সে আছে প্রাণের ওপারে -
বিষয়বস্তু আর উদ্দেশ্যের মেলবন্ধন, কিংবা দাতা আর গ্রহীতার অন্তর্নিহিত সম্পর্কই স্থায়িত্বের মাপকাঠি। সব কিছুর বিচার বিশ্লেষণের কর্তা হচ্ছে বুদ্ধি। বুদ্ধি সমৃদ্ধ হয় জ্ঞানে। জ্ঞান চৈতন্যের বিকাশ ঘটায়। চেতনার আলোতে বুদ্ধি আলোকিত হয়। কিন্তু অহংকারের প্রাচীর সেখানে বাধা স্বরূপ দাঁড়িয়ে আছে। এটাই অন্তর্নিহিত মেকানিজম।
অহংকার আমার শক্তি আর মায়া তার সৈনিক
যেমন, বাতাস ছাড়া গাছের পাতা স্বাভাবিক ভাবে নড়েনা যদিনা কোন বাধা না থাকে। আবার সামনে যদি বিশাল প্রাচীরের দ্বারা বাতাস বাধা প্রাপ্ত হয় তাহলে সেই পাতা পূর্বের ন্যায় নড়তে পারেনা। জ্ঞানই হচ্ছে সেই বাতাস আর প্রাচীর হচ্ছে সেই অহংকার।
চক্ষু কিংবা কানের মাধ্যমে মানুষ যা কিছু গ্রহণ করে সেটা গিয়ে অস্থায়ী স্টোরে গিয়ে অপেক্ষা করে এবং বুদ্ধির বিবেচনার নির্ভর করে যে সে স্থায়ী স্টোরে জায়গা পাবে কিনা ? যদি কেউ সেই সময়ে জায়গা করে নেয় কিন্তু দীর্ঘকালীন স্থায়িত্ব নির্ভর করে বস্তুর চরিত্রের উপর। অর্থাৎ গৃহীত বস্তুটির চরিত্র যদি সত্য হয় তবে স্থায়িত্ব পায়, আর বস্তুটি যদি মিথ্যা বস্তু হিসাবে প্রতিপন্ন হয় তবে সময়ের সাথে সে পরিবর্তিত হয়ে পূর্বেকার চরিত্র হারিয়ে ফেলে। তার ফল স্বরূপ সে মনের স্থায়ী জায়গা থেকে হারিয়ে যায়।
অচেনা সে এক অনুভূতি -
বহুদিন বাদে আজকের স্বামী সেদিনের প্রেমিক তার স্ত্রীর মধ্যে একসময়ের প্রেমিকার মধ্যে প্রথম দিনগুলির অনুভূতি যদি খুঁজতে যায়, তবে মিলবে কুয়াশা মাখানো আবছা কতগুলি ছবি। যেগুলি মুছে গিয়েও হারিয়ে যায়নি সামাজিক বাধ্যবাধকতায় কিন্তু সে স্থানে পলি পড়ে গিয়ে প্রেম সেইখানে তার গতিশীলতাকে হারিয়ে ফেলেছে।
আজকের মন্ত্রীর মধ্যে সেদিনের নেতার ছবিটা যদি কোন ক্যাডার খুঁজতে যায়, তবে মিলবে এক বিরাট দীর্ঘ নিশ্বাস। ঠিক তেমনি আজকের সন্তানদের কাছে সেদিনের তাদের শৈশবের আনন্দ খুঁজে পাবার চেষ্টা বৃথা।
হারাতে চাইনা কিন্তু সব অজান্তে হারিয়ে যায় -
তার মূল কারণ হিসাবে বলা যেতে পারে মানুষের নলেজ প্রসেস একটা গতিশীল নদীর ধারার মতো প্রতিনিয়ত অন্তর্নিহিত বাধা বিপত্তিকে উৎরে গিয়ে সে সংগ্রহ করে নিয়ে আসছে জ্ঞানের ভান্ডারকে। তার ভিত্তিতে পুরাতন ধারণার জায়গায় নতুন বা সংশোধিত ধারণা জায়গা করে নেয়। তাই এই জড় জগৎটা সব সময় পরিবর্তনশীল। ক্রমপরিবর্তনশীল বস্তু কখনই সত্য বস্তু হতে পারে না আবার সত্য বস্তুর কোন অবস্থায় পরিবর্তন হয় না।
এ এক আজব দেশ যেথায় জ্ঞানী থাকে কুটিরে আর অজ্ঞানী থাকে রাজমহলে -
এটাই আমাদের প্রতিপন্ন করে যে , আমরা এই জগতে সর্বদাই মিথ্যার পিছনে মানুষ ঘুরে মরছে। একদল অজ্ঞানী শাসক দেশ তথা পৃথিবীকে শাসন করছে। সর্বদাই সাধারণ মানুষকে ভুল পথে চালিত করছে। শুধু তাই নয়, সব থেকে বড় অপরাধ যে সকল মহাপুরুষ মানুষের জীবনের সঠিক পথের সন্ধান দিয়েছেন তাদের যেনতেন প্রকারেন আড়াল করে রেখেছেন।
রাষ্ট্রের মায়াজাল -
যেহেতু রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে বিজ্ঞান বলা হয় বটে, কিন্তু আসলে ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি বা ম্যাথমেটিক্সের মতো কোন বিষয়ের উপর গবেষণা করতে গেলে যে বাইরেই পৃথিবীর সাথে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন একটি রসায়নাগার থাকার যে প্রয়োজনীয়তা আছে, সেটা রাষ্ট্র বিজ্ঞানের পক্ষে সেরকম উপযুক্ত পরিবেশ খুঁজে পাওয়া যাবে না। সুতরাং ইপ্সিত উত্তর না মেলার সম্ভাবনাটা বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোন থেকে সঠিক।
ক্রমশঃ
ব্লগার -রবীন মজুমদার
তারিখ - ২২/১১/২৩
কলিকাতা
২২/১১/২০২৩ পর্যন্ত ১৭৮ টি ব্লগ পোস্ট করা হয়েছে
আত্মদর্শনমূলক ব্লগ -
- ওপারের সংগীত
- ঐকতান
- সভ্যতার নামে প্রহসন
- নাড়ী ছেড়ার গান
- আত্মত্যাগ কখনো কখনো আত্মহত্যার সামিল হয়
- দলিতের সভ্যাভিমান
- একটি প্রান্তিক মানুষের মৃত্যু সভা
- ২১শে ফেব্রুয়ারীর মূল্যবোধ (১৫২)
নিছক প্রেমের গল্প -
- বনবিতান
জীবনের সংগ্রামের পাশাপাশি মানুষের সংগ্রামের কথা -
- চে গুয়েভারা দ্য রেভলিউশনারী আইকন অল দ্য টাইম ( ৪টি পর্বে )
পৌরাণিক - বিশ্লেষণমূলক
- আমি মহাভারতের পৃথা (১৭টি পর্বে )
- ব্যাসদেবের জীবনের অপ্রকাশিত ঘটনা
- মহাভারতের রাজনীতি ও নারীদের নীরব বলিদান (৬ টি পর্বে )
- মহাভারতের যাজ্ঞসেনী (৪৬টি পর্বে )
নগর দর্পন -
- ধর্ম ও শাসক
- সমাজের রাজন্যবর্গ
- হালচাল
- সহাবস্থান
- নারদের মর্তে ভ্রমণ ( ১৮+৬=২৪ টি পর্বে )
- মনীষীরা কি আজকের রাজনীতির কাঁচামাল
- ক্ষুদ্র আমি তুচ্ছ নই এই সুন্দর ভুবনে
- রজ্জুতে সর্প দর্শন
- কুরুক্ষেত্রে একটি বিনিদ্র রাত (১-৪ পর্ব )
নিছক প্রেমের গল্প -
- বনবিতান
দর্শন, ইতিহাস ও রাজনীতি আশ্রিত ব্লগ -
- অহংকারের রসায়ন (৮টি পর্ব - এখনো চলছে )
- আসা আর যাওয়া
- সংঘর্ষ
- উত্তর মীমাংসা
- আগামী
- আমরা বাস করি আনন্দে
- সৃষ্টির মুলে দন্দ্ব
- অখন্ড যখন খণ্ডিত হয়
- কোথায় পাব তারে
- গোলক ধাঁধা
- চির যৌবনা
- রূপ ও স্বরূপের লুকোচুরি
- একটি অক্ষরের গল্প
- মহাভারতের যাজ্ঞসেনী (৪৫ টি পর্বে -এখনো চলবে )
- সরণি
- পরম্পরা
- মেলবন্ধন
- সন্ধিক্ষণ
- অনুভূতির বহুগামিতা
- অসুখ
- সংকট কারে কয়
- অন্ধজনে দেহ আলো
- প্রেমহীনতা কি সামাজিক ব্যাধি
- ১৬২ হিউস্টনের ডাইরি (১০ তম পর্ব )
- ১৬৩ রাম কি এখনও বনবাসে আছেন ?
- ১৬৪ হ রে ক রে ক ম বা (১)
- ১৬৫ এক্সটেন্ডেড মহাভারত
- ১৬৬ স্মাইল রিপ্লেসমেন্ট প্রজেক্ট (১ম )
- ১৬৭ হাসির পুনঃস্থাপন (২)
- ১৬৮ আমাকে দেখুন
- ১৬৯ বিয়ে কি নারীর নিরাপত্তার না শোষনের পাকাপাকি হাতিয়ার ?
- ১৭০ আর কত গুন থাকলে তাকে জাতীয় নায়ক বলা যায়
- ১৭১ ভাবমূর্তির রকম ফের-
- ১৭২ জাতের নামে বজ্জাতি (আই ওপেনার )
- ১৭৩ কুরুক্ষেত্রে একটি বিনিদ্র রাত (৫ম পর্ব )
- ১৭৪ রঙ্গমঞ্চের ওপারে
- ১৭৫ কেন এ ছদ্মবেশ -
- ১৭৬ কেন এই হিংসাদ্বেষ-
- ১৭৭ নফরত কি দুনিয়া -
- ১৭৮ মিথ্যার বেসাতি আর একরাশ অলীক ধারণা (প্রথম পর্ব ) -
মন্তব্যসমূহ