(১৮৮) কর্তাবাবু আর পাঁচটা ভূতের গল্প

 (১৮৮) কর্তাবাবু আর পাঁচটা ভূতের গল্প  


অনুষ্ঠান বাড়িতে অতিথি আপ্পায়ন করতে গিয়ে বাড়ির কর্তা দেখলেন আয়োজনের জন্য বহু উপকরণ সংগ্রহ করতে হবে।  এই ভাবনা থেকে কর্তামশাই  কি কি  সামগ্রীর  প্রয়োজন পড়বে তার একটা ফিরিস্তি তৈরী করতে বসলেন।  বর্তমানে শুধু থাকার মধ্যে মাথার উপর একটা বিরাট আকাশ রয়েছে। কর্তাবাবু  আকাশের কাছে তার মহৎ ইচ্ছার কথাটা পারলেন। আকাশ এই কথা শুনে ভীষণ চিন্তায় পড়ে গেলেন, অথচ তিনি কর্তামশাইকে কথা দিয়ে দিয়েছেন। চিন্তান্বিত আকাশকে দেখে কর্তাবাবু বললেন-

- ভায়া এত চিন্তা করছো কেন ;

- আকাশ বলল এ ধরনের কাজতো আমি পূর্বে করিনি। 

- তোমার ভাণ্ডারে কি কি আছে, তা তো আমি জানিনা, কারণ সেগুলি এমনিই  সুক্ষ যে চোখে দেখা যায় না, সবাইকে তোমার মতোই মনে হয়।  তবে এক কাজ কর, যা আছে সেগুলিকে  একত্রিত কর।

-  এই বলে কর্তাবাবু ইতস্ততঃ  পায়চারি করতে লাগলেন।  হঠাৎ, আকাশের উল্লাস শুনে, দৌড়ে গিয়ে  যা দেখলেন, তা দেখে কর্তাবাবুর চক্ষু চড়কগাছ।  আকাশের মধ্যে লুকিয়ে থাকা সম্পদগুলি একত্রিত হয়ে  এতবড় একটা শক্তি হতে পারে তাকে অনুভূতির মাধ্যমে বোধগম্যও করা যেতে পারে, তা ছিল স্বপ্নাতীত।  এবার একটা নামকরণ তো এর করতে হবে।  আজ থেকে এর নাম দিলেন "বায়ু" কেননা এ বইতে  পারে তাই। আকাশও নামটা অনুমোদন করলো।  আচ্ছা আকাশ ! অতিথিরা শুধু বায়ু খেয়ে বাঁচতে পারবে না, তাদের  খাদ্যের ব্যবস্থা করতে হবে, তা না হলে আমাদের গাল-মন্দ বলবে। 

- আপনার অনুপ্রেরণায় আমি সবই করতে পারি।  এই বলে নবজাত বায়ু নতজানু  হয়ে কর্তাবাবুকে প্রণাম জানালেন।  

- হ্যাঁ ! তোমাকে তৈরী করতে গিয়ে আকাশ কোনো কৃপণতা করেনি।  কি না দিয়েছে তোমার মধ্যে; একদিকে যেমন দিয়েছে  শক্তির  উপকরণ  আবার দিয়েছে অতিথি সেবার স্থায়ী সম্পদ আর কখনও ভোলেনি তাদের থাকার জন্য পায়ের তলায় শক্ত আবরনের প্রয়োজনীয়তা।  তোমার কাজ হল সেই একত্রিত সম্পদ থেকে সত্তাগুলিকে আলাদা করা। 

- যেমন কর্তাবাবুর আবদার, ঠিক তেমনিই কাজ।  বায়ু তার মধ্যে থেকে একটা শক্তিকে আলাদা করলো আর কর্তাবাবু তার নাম দিলেন "তেজ"। "তেজের" মধ্যে থেকে আরেকটি সম্পদ বেরিয়ে এলো , সাড়ম্বরে তার নাম দিলেন "জল " বলে।  জল তরল পদার্থ, তার মধ্যে স্থূল বা শক্ত  পদার্থ  বেরিয়ে এলো  তাকে নামাঙ্কিত করলো " ক্ষিতি " বলে। এবার সকলে মিলে মিশে সেই জায়গায় বসবাস করতে লাগলো। বর্তমানে যাকে পৃথিবী বলে সম্বোধন করা হয়।  কর্তাবাবু এবার বললেন, এবার অতিথিদের ডাকা যেতে পারে। অবশ্য যা জায়গা আর রসদ আগামী দিনে হবে, সেখানে ভাগ ভাগ করে ডাকতে হবে।  অর্থাৎ ভীষণ ব্যাল্যান্স করে তাদের আসা যাওয়া চলতেই থাকবে, ঠিক প্রলয় কাল পর্যন্ত।  

আগামী দিনে শাস্ত্রের মানচিত্র কেমন হবে, কাকে কি ভাবে সম্ভোধন করা হবে, সে সবই হিন্দু শাস্ত্রকারগন ভীষণ যত্ন সহকারে কর্তাবাবুর কাছ থেকে সংগ্রহ করে  নিলেন।  

কালবিলম্ব না করে ঋষিদের শীর্ষ পরিষদ এই পাঁচটি নতুন কমিটির মাথার উপর এক এক জনকে প্রতিষ্ঠিত করলেন।   

ক্রমশঃ 

ব্লগার -রবীন মজুমদার 

তারিখ -২৮/১২/২৩

rabinujaan.blogspot.com ক্লিক করে যে কোন সার্চ ইঞ্জিন থেকে অন্যান্য ব্লগগুলি পড়া যাবে। 






মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

(২৩১) মানুষ থেকে নক্ষত্রে উত্তরণ

(২৩৩) একটি ফোঁড়ার জন্মবৃত্তান্ত -

(২৩২)বোধোদয়