শুক্রবার, ৫ জানুয়ারী, ২০২৪

(১৯২) সৃষ্টি তুমি আজও কি রহস্যাবৃত -

(১৯২) সৃষ্টি তুমি আজও কি  রহস্যাবৃত -


ঋগ্বেদের প্রথম দিকে ঋষিগণ মানুষের অন্তরপ্ৰকৃতিতে বিচরণ করার যথেষ্ট সুযোগ হয়তো পাননি, তাই পরের দিকে তাদের এই সুপ্ত ইচ্ছার অন্বেষণ শুরু হয়েছিল। আর সেখান থেকে উঠে আসা রহস্যের গুপ্ত ভাণ্ডারটি কাব্যিক মাধুর্য্যে উপস্থাপন  করেছেন  ঋগ্বেদের ১০ম মন্ডলে  ১২৯ তম সূক্তে -  

 "হে  সৃষ্টিরূপী পরমেশ্বর!  তুমি হয়তো পূর্বেও  ছিলে কিন্তু  তোমার অস্তিত্ব তখন হয়নি প্রকাশ। তুমি  হয়তো পেয়েছিলে চেতন , কিন্তু এ জগতে সেটাই সত্য, যাকে করা যায় প্রত্যক্ষ।  "

 "হে সৃষ্টিরূপী পরমেশ্বর! তোমার  দিগন্তবিস্তৃত শুধুমাত্র জলেরই খেলা, তার উপর  যেন ভেলা নিয়ে ভেসে আছে বসুন্ধরা। না  ছিল কোন শব্দের প্রকাশমান, সবই যেন ' না ' এই বাচক রুপে সদাই  বিদ্যমান।  আছে শুধু আদি-অন্তহীন  মূক আর বধির আকাশ , সে যেন কালের এক অব্যক্ততারই   প্রকাশ । " 

"হে  পরমেশ্বর! তুমি কি অসীম সূক্ষতায় করেছো গ্রাস জগৎকে, সে যেন রয়েছে মৃত্যুরূপী এক গভীর অন্ধকারে। তোমার বৈরিতায় অমৃতের আনন্দ যেন করেছে  আত্মগোপন,  যামিনীর দৃঢ় আলিঙ্গন থেকে এখনো মুক্ত হয়নি দিবসের আলাপন। তাই সে পালন করতে পারেনি কালের নির্দ্দেশ, সেও অপ্রকাশিত হয়েছে শব্দের অভাবে। "  

"হে সৃষ্টিরূপী পরমেশ্বর ! সেদিন তুমি কি প্রত্যাখ্যান করেছিলে মরুতের (বায়ু) সহায়তা, তুমি কি ভেবেছিলে এই অখন্ড অবিনাশী আত্মা শুধুমাত্র সূক্ষতার গর্বভরে করবে মহাশূন্য পার ?"

" হে  পরমেশ্বর ! তুমি  বাধলে নিজেকে সূচিহীন অন্ধকারের কঠিন বন্ধনে, যেখানে হবেনা আলোকিত হাজার বাতির বিচ্ছুরণে, তাই রইল না কেউ দাবিদার, যারা বলতে পারে আমরাও অস্তিত্বের দাবিদার।   চতুর্দিকে করেছো খনন পরিখা তারি মধ্যে বয়ে যায় অনন্ত জলরাশি, তুমি সেথা আত্মগোপন করে হাসতে লাগলে আজি ।  "

" সূচীভেদ্য অন্ধকার ভেদ করে ধীরে ধীরে দেখা দিলো কামনার ঢেউ,  আছড়ে পড়লো  তোমার কঠিন মনের আস্তরনে। তোমার সূক্ষতায় মোড়া ইচ্ছাশক্তির তন্ত্রীতে  তন্ত্রীতে হানলো  আঘাত। সেই আঘাতে ঘসে পড়লো তোমার পুরাতন আবরণ,  অবারিত সেই দ্বার দিয়ে পুষ্পস্তবক দিয়ে বরণ করা হলো নবীনের এই আগমন।"

" হে  পরমেশ্বর ! কঠোর তপস্যায় যা  উন্মোচিত হলো ,  সেটাই তোমাকে  করলাম সমর্পন।" 

"হে  পরমেশ্বর !  একে একে সব নামিল ভুবনে বীর্যবান পুরুষের ঢল,  করিয়া মন্থন  আনিল লভিয়া  সৃষ্টির অমূল্য রতন। "

"হে  পরমেশ্বর !  আর তো জানি না, সত্য কি ঘটেছিল সৃষ্টির আদিতে, কি করেই বা তোমার লাঙ্গলের উৎস মুখ থেকে সূর্য, চন্দ্র ও নক্ষত্রের মতো প্রজাতির সৃজন হলো ? তারপরে তুমি আরো আমাদের বলো , ঠিক  কোন কালে তোমার স্পর্শে সৃষ্টির ইচ্ছাটা  দীর্ঘদিনের অলসতা ত্যাগ করে বাধাহীন গতিতে ফসল ফলানোর লক্ষ্যে এই ধরিত্রীতে কর্ষণে মনোনিবেশ করলে ?"

" হে পরমেশ্বর ! আজ আমার কি মনে হচ্ছে জানো,  কোথা থেকে কি যে হোল, তা হয়তো তুমি নিজেই জানো না। এই গোপন কথাটি সবার কাছে নাই বা প্রকাশ পেল, থাকেনা অজ্ঞাত।  "

ক্রমশঃ 

ব্লগার -রবীন মজুমদার 

তারিখ -০৬/০১/২৪

rabinujaan.blogspot.com ক্লিক করে যে কোন সার্চ ইঞ্জিন থেকে অন্যান্য ব্লগগুলি পড়া যাবে। 

কোন মন্তব্য নেই:

ujaan

(২৩৯)বহতি হাওয়া

(২৩৯)বহতি হাওয়া   "আধুনিক " এই শব্দটিকে নিয়ে বেশ বাগবিতণ্ডা হয় মাঝে মাঝে, কোন বাক্যের প্রিফিক্স হিসাবে তাকে  বসানো যায়। আধুনিকতাকে...