(২১১) জগাখিচুড়ি -প্রথম সংখ্যা
কিই বা যায় আসে -
দুপুরের কাছে আত্মসমর্পন এখন নিত্য দিনের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। আবার পাশাপাশি, রাত্রিকে আলিঙ্গন করা একদম উঠে গেছে। নিউটাউনে রাত্রি থেকে সকালে উত্তরণের যে মজাটা বেলেঘাটায় ছিল , এখানে সেটা অনুপস্থিত। এখানে আবাসিক বাড়িগুলির আশেপাশের গাছগুলিতে পাখিরা ঠিক নির্ভর যোগ্য আস্তানা মনে না করার জন্য এখানে বোধহয় বাসা বাঁধেনি। পাশাপাশি বেলেঘাটার নিম আর জাম গাছটাতে পাখিদের বেশ আনাগোনা হয়। অনেকগুলি পর পর সাজানো জলের আঁধারে যেমন একেরপর এক শব্দ তরঙ্গ ওঠে, ঠিক তেমনি প্রায় ভোরের আশেপাশে প্রথম কাকের ডাকের সাথে তাল মিলিয়ে দূর থেকে অন্যান্য কাকদের যোগ্য সঙ্গত বহু দিন শুনতে পারিনা। এখানে মোরগও নেই, যে সকাল হবার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ির প্রথম পুরুষের মতো, সংসারের অন্যান্য সদস্যদের জানান দেবার দায়িত্ব নিয়ে বিরামহীনভাবে পালন করে যাবে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিয়মিত একটা কাঠঠোকরা পাখি এসে নিমগাছের শক্ত আবরণকে তীক্ষ্ণ চঞ্চুর আঘাতে বিদীর্ণ করে কি যেন খুঁজতে চায়, জানিনা। এই বিশ্বে অনেক কিছুই ঘটে যায় , বোধহয় তার অর্থ খোজাটাই অর্থহীন। যে ঘটনার রূপকার সেইই একমাত্র তার ঘটনা প্রবাহের দাবিদার। দূর থেকে তাকে বুঝতে গেলে ভ্রমের সম্ভাবনা বেশী।
*****************************************
অনেক কিছুই আসে যায় -
বিগত প্রায় তিনমাস ধরে আকাশের দিকে তাকিয়ে ছিলাম আকাশের রঙের কোনো পরিবর্তন হয় কিনা। এই তো সেদিন, সেখানে আংশিক পরিবর্তনের শোভা দেখে মন ভরাতে হল। পরে ভাবলাম ভাবনাটা আমার বড় একপেশে ছিল। সবার মধ্যে এমনই একটা উন্মাদনা ছিল যে তারা আকাশের বুক থেকে যে কোন মুহূর্তে টকটকে সূর্য্যটাকে মুঠোয় করে পৃথিবীতে নামিয়ে নিয়ে আসবে। আমরা অপেক্ষা করছিলাম, ভাবছিলাম, সেই নিয়ে আসার দৌড়ে আমার প্রথম পছন্দের প্রতিযোগী কি পারবে সেই কাজটা করতে ? যুক্তি বিনা, বাস্তবতা ছাড়া অলীক স্বপ্ন দেখতে , কার না ভালো লাগে, অলস সময়টা এইভাবে কেটে যেতে পারে। দিন ভর বিচার বিশ্লেষণের রথে চেপে থাকতে একদম ভালো লাগেনা। দিনান্তে জনতা জনার্দনও ভালো লাগার থেকে প্রয়োজনকেই অধিক প্ৰাধান্য দিয়েছে বলে মনে হলো। আমরা যদি বিশেষ পক্ষপাতশূন্য হই, তাহলে এই নির্বাচনের যৌক্তিকতাকে অস্বীকার করতে পারবো না।
***********************************
স্বর্ণ সীতার পূজার বোধ হয় সমাপ্তি হলো -
জীবন্ত সীতাকে যাঁরা বনবাসে দিয়ে জনসমক্ষে স্বর্ণসীতার পূজা মনুর যুগে হতে আজও চলে আসছে। মানুষের স্বাধীনতাকে যাঁরা বনবাসে পাঠায় তারাই আবার মহাসমারোহে জনসমক্ষে গণতন্ত্রের পূজা পালন করে।
*********************************
সংবিধান কি একটা অজ্ঞান মানুষদের বেড়ি পড়াবার অদৃশ্য খাঁচা ?
যে মানুষগুলি জন্মলগ্ন থেকে অজ্ঞাত কারণে অনুভব করে, আমি সকলের থেকে আলাদা। সে কি করে অপর ব্যক্তির সাথে নিজেকে এক ভাবতে শিখবে। রাষ্ট্র যদি জোর করে ভাবায় তুমি আর তোমার পাশের বাড়ির মানুষটা এক, তখন অজান্তেই সে তুলনামূলকভাবে বিচার করতে শুরু করবে ; দিনান্তে তার হিসাবে মিলাতে পারবেনা। ইতিবাচক সাড়া না পেয়ে তার মধ্যে জন্ম নেবে অভিমান। তাহলে কি অভিমান মানুষের একটা মিথ্যা অনুভূতি ? সেই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে বিভাজনের ক্রমবিবর্তনবাদের মধ্যে।
***********************************
ব্লগার -রবীন মজুমদার
তারিখ -০৮/০৬/২৪ ভোর ৪:২৪
https://rabinujaan.blogspot.com ক্লিক করে যে কোন সার্চ ইঞ্জিন থেকে অন্যান্য ব্লগগুলি পড়া যাবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন