(২৫২) ইচ্ছাপূরণ
(২৫২) ইচ্ছাপূরণ
.jpeg)
যৌবনের কি বয়স হয় ? একদল মানুষ তথাকথিত বিগত যৌবনের অংশীদারিত্ব স্বীকার না করে, এক চুটকিতে সংখ্যাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আঁচলে মুখ না লুকিয়ে যদি স্বপ্ন দেখে আর স্বপ্ন দেখাতে পারে তবে অবশ্যিই তারা যৌবনের দূত।
নামের সাথে কামের মেলবন্ধন হলে নামকরণের স্বার্থকতার একটা বৃত্ত সম্পূর্ণ হয়। মরচে পরে যাওয়া ইচ্ছাগুলি একদিন যখন গভীর ভাবনার সংস্পর্শে এসে উদাত্ত কন্ঠে বলে উঠে - আমরা আমাদের জন্য কিছু বলতে চাই, বলার সাথে সামঞ্জস্য রেখে কিছু করতেও চাই আর তার অভিমুখ হবে মানুষের পদে পদে ইচ্ছার অপমৃত্যুর বিরুদ্ধে একটা সর্বগ্রাসী আন্দোলন। সেই পুঞ্জীভূত ইচ্ছাগুলিকে ভাষার আগুনে সেঁকে সর্বজনে প্রকাশ করা আর তাকে বাস্তবায়িত করার নামই হচ্ছে "ইচ্ছাপূরণ "।
এই পৃথিবীতে যত না মানুষ অসুস্থতায় মৃত্যু বরণ করেছে, তার থেকে আত্মপ্রকাশ করতে না পেরে গুমরে গুমরে কত না মানুষ মরমে মরে যায়, সেটা কোন খাতায় লেখা থাকেনা। ধরাযাক, কারোর দুধসাদা সুন্দর দাঁত আছে , সে উপযুক্ত পরিবেশের অভাবে জীবনে কোনদিন তাঁর হাসিকে প্রকাশ করতেই পারলো না, অথচ তার ভীষণ ইচ্ছা ছিল তাঁর অতীব সুন্দর দাঁতটাকে সবাইকে দেখানো। কোন এক সময় যৌবনে ফেলে আসা মানুষগুলির বড্ড ইচ্ছা ছিল গান কিংবা অভিনয়ের কিন্তু বাস্তবে সংসারের যাঁতাকলে পরে তার ইচ্ছাগুলি শিকেয় তুলে দিয়েছিলো। আগামী দিনে তারাই হবে এই মঞ্চের সম্ভাব্য ভাগিদার।
আমরা সবাই জানি, ভাবনা তার বিচিত্রপথে যাবার সুবিধার্থে সে জন্মলগ্ন থেকেই সর্বত্রগামী। সে একাধারে সৃষ্টি আবার ধ্বংসও বটে। অন্ততঃ ইতিহাস সেটা বলে। 'সু' আর 'কু' এর চিরন্তন যুদ্ধের কথা কে না জানে। বাস্তবে আমরা যতই বলিনা কেন সব ইচ্ছা পূরণের জন্য উপযুক্ত পরিবেশের অভাবে আবার সে ভাঁড়ারের ঘরে তালা বন্দী হয়ে থাকে। ভাবনা যেটা পারে, প্রকাশ সেটা পারেনা।
স্বল্প পরিসরের এটাই বলা যেতে পারে. ইচ্ছা প্রকাশের পথে অন্যতম প্রধান অন্তরায় হলো পরিবেশ আর সেটি সমাজ এবং রাষ্ট্রের নিয়মকানুনের ইচ্ছাধীন। আবার হোঁচট। বাধাকে অতিক্রম করাই, মানুষের স্বভাবগত ধর্ম। ইচ্ছাকে যদি ডানা মেলতে হয় অর্থাৎ বাস্তবায়িত করতে হয় , তার জন্য আছে কিছু নির্দ্দিষ্ট প্রোটোকল বা ধারা আছে।
আমরা আলোচনা করতে করতে আমাদের ইচ্ছানদী পারাপারের কিনারায় এসে পৌঁছেছি। এবার আমাদের চিহ্নিত করতে হবে কোন যানে চেপে আমাদের জমে থাকা কাঁচামাল দিয়ে উৎকৃষ্ট উৎপাদন করব আর সেই উৎপাদিত সামগ্রীকে ফেলে আসা যৌবনের কান্ডারীদের কাছে এই ভাবনার রসদ হিসাবে পৌঁছে দেব। পৌঁছে দেবার মাধ্যম তো অবশ্যিই চাই। তাই আলোকপাত করতে হলো বর্তমানে অধিক প্রচলিত মাধ্যমকে চিহ্নিত করতে। ক্রমবর্ধমান টেকনোলজির উৎপাত আজ ভারতবর্ষের ৯৫ কোটি মানুষের হাতে পৌঁছে গেছে, তার মধ্যে প্রায় ২১ কোটি সিনিয়র সিটিজেন আছে। তাই আর দেরি নয় , এই মাধ্যমের উপর ভর করে পাড়ি দিতে হবে।
তাই আর দেরি নয়, সঙ্গে ক্যামেরা আর বিষয়বস্তুকে সঙ্গে করে পাড়ি দিতে হবে পারা না পারার মধ্যবর্তী নদীকে।
আপাততঃ আমাদের টার্গেট অডিয়েন্স হচ্ছে জীবনযুদ্ধের অবসরের ক্লান্তিতে থাকা প্রান্তিক মানুষরা। তাদের দুয়ারে তাদেরই সমগোত্রীয় মানুষের সহমর্মিতা জানানোর প্রচেষ্টা এই "ইচ্ছা পূরণের "।
আমরা আমাদের মতো করে তাদের শোনাতে পারি ভালো লাগার মন্ত্র। গান, কবিতা, শ্রুতি নাটক , গল্প বলা , নৃত্যকলা, গল্প পড়া, গীতি আলেখ্য, ডিবেট ইত্যাদি পরিবেশনের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে তাদের দোরগড়ায় পৌঁছাতে চাই।
প্রশ্ন থেকেই যায়, আমাদের উৎপাদিত সামগ্রী কি কি এবং তার কাঁচামাল আমরা কোথা থেকে সংগ্রহ করব ইত্যাদি ইত্যাদি। মনে রাখতে হবে, আমরা সেই মহান কৃষক নই, যে মাটি তৈরি থেকে শুরু করে, বীজ এনে তাকে বুনে শস্য উৎপাদন করব। আমরা আসলে সেই মানুষ, যারা যেথা পাই যত বর্ণনার বাণী কুরাইযা আনি আমাদের অন্তরের দীনতা ঘুচাতে অর্থাৎ সংগ্রহ করে নিয়ে এসে যথাস্থানে জোড়া লাগিয়ে মূর্তি নির্মাণ করতে পারি।
এই বিশ্বচরাচরে কবি-সাহিত্যিক কম পড়েনি। শুধুমাত্র কপিরাইটকে মাথায় রেখে, তাদের সৃষ্টিকে আমরা রূপদান করতেই পারি। ( এর জন্য একটা গাইড লাইন তৈরি করা হবে ) অবশ্যিই কোয়ালিটি কন্ট্রোলকে মাথায় রেখে।
ব্লগার -রবীন মজুমদার
তারিখ -১০/০৩/২৫
rabinujaan.blogspot.com ক্লিক করে যে কোন সার্চ ইঞ্জিন থেকে অন্যান্য ব্লগগুলি পড়া যাবে।
মন্তব্যসমূহ