(২৬২) এই বৈশাখে


 (২৬২)এই বৈশাখে 


অন্তরে মিশালে তবে তার অন্তরের পরিচয় 

মোর ভাবনারে কি হাওয়ায় মাতালো, আজ ১লা বৈশাখে বিগত দিনগুলি অনুভূতিগুলি নিয়ে মাতবার  বিশেষ সুযোগ।   নিত্য আমরা কত টুকরো টুকরো বাধা বিপত্তিকে সঙ্গে নিয়ে  ঘুরে বেড়াই। সেখানে একের সাথে অন্যের এক মনগড়া ব্যাবধান রচিত হয়। সবাইকে নিয়ে পথ চলতে গিয়ে সেই স্থুল ব্যবধান গুলি কখন যে ঘুচে যায়, তা আমরা বুঝতেই পারিনা। কখন কি শোনা গিয়েছে যুদ্ধ ক্ষেত্রে রাইফেল হাতে একটা সৈনিকের পাশে অপর একটা সৈনিক লড়াই করে, সেখানে কি পাশের সহযোদ্ধাকে জিজ্ঞেস করে, তোমার জাত কি কিংবা  তুমি কোন বর্ণের মানুষ। কখনই জিজ্ঞাসা করেনা, কারণ প্রত্যেকে একটা নির্দিষ্ট  উদ্দেশ্যের জন্য সংঘর্ষ করছে। আসলে নিদ্দিষ্ট উদ্দেশ্যই সবাইকে এক সূত্রে বেঁধে রাখে।  এই মিলনের মন্ত্রে যারা আমাদের সহযাত্রী, আজ এই পুন্য দিনে তাঁরা  সবাই আমাদের কাছে স্মরণীয়। আসলে এদের সবার মধ্যে মানুষ নিজেকেই খোঁজে।  তবে হোক না সেই অন্বেশন, তাদের ভাষায় আমাদের কথা গুলি কখন গানের  সুরে কিংবা আবৃত্তির মূর্ছনায় অথবা কথায় কথায়। আসলে সত্যকে কখনো ভাগ করা যায় না, সে আদিতে ছিল মৌলিক আর আজ কিংবা কাল   তার পরিবর্তন হবে না। আমরা সেই সত্যের পূজারী যা শত পরিবর্তনের মাঝে অপরিবর্ত থাকবে। 

ব্যবধান 

এক যে ছিল দেশ আর এক যে ছিল সময়, যে দেশে রাজপথ দিয়ে রাজা আর পণ্ডিত মশাই হেঁটে গেলে রীতি ছিল পন্ডিতমশাইকে  সর্বাগ্রে রাস্তা ছেড়ে দেবার। আজকে পণ্ডিতমশাইকে রাস্তা ছেড়ে দেবার পরিবর্তে সামনে প্রাচীর তুলে দেওয়া হচ্ছে।   

নব কলেবরে ব্রাহ্মণ্যবাদ 

 শাসক দুই প্রকার। একদল শাসক বলে শাসন যদি করতে চাও, তবে জনগনের গোলাম বনে যাও। আর একদল ভাবে শাসক যদি বনতে চাও তাহলে জনগণকে গোলাম বানাও। ব্যবধানটা আসলে চিন্তার জগতে। চিন্তার জগৎ গঠনের রসায়ন আছে। জ্ঞান থেকে  অজ্ঞানের যতখানি দূরত্ব ঠিক ততখানি দূরত্ব প্রথম শ্রেণীর শাসকের সাথে দ্বিতীয়  শ্রেণীর শাসকের। এটা ভাববার যথেষ্ট অবকাশ আছে, যদি দ্বিতীয় শ্রেণীর শাসকদের  জ্ঞান অর্জনের প্রতি কোনো প্রীতি থাকতো তাহলে অবশ্যি সেটা তাদের  চর্চার অন্যতম বিষয়বস্তু হতো।  পক্ষান্তরে ভীতি আছে, সেটা প্রমাণিত। 

মহা আশঙ্কা জপিছে মৌন অন্তরে 

দিগ্ দিগন্ত অবগুন্ঠনে ঢাকা, তাই যে শিক্ষা জ্ঞানকে উজ্জীবিত করে আর জ্ঞান হলে তাঁরা বড্ড প্রশ্ন করে। সেটা  তাদের কাম্য নয়।  যেমন, বয়োঃজ্যেষ্ঠ্যরা তাদের শিশু সন্তানদের বারণ করে  সেই কাজ গুলি করতে, যেটা আসলে তাদের অমূলক  ভয় থেকে উৎপত্তি, ঠিক  সেই কারণে শাসক তার শিশুসম জনগণকে শিক্ষা থেকে দূরে রাখে। অবশ্য সেই  প্রাচীন কালের মতো শিক্ষাকে বিশেষ শ্রেণীর মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে চায়। সুতরাং তারা অবশ্যিই শিক্ষা প্রচারকদের কাছ  থেকে তার আদরের জনগণকে দূরে রাখবেন।  

শুধু ভঙ্গি দিয়ে যেন না ভোলায় চোখ 

কান্না মানুষের একটি বিশেষ অভ্যন্তরীণ অনুভূতির বাহ্যিক প্রতিক্রিয়া। ছোটবেলায় সেই অতৃপ্ত বাসনায় যখন কোন শিশু কেঁদে উঠত তখন মা শিশুকে ভোলাবার জন্য খেলনা বা বাইরেই কোন পশু পাখির দিকে দৃষ্টি ঘুরিয়ে ভোলাবার চেষ্টা করতো। এই ছেলেভুলানির প্রাচীন অস্ত্রটা শাসকদের ভীষণ পছন্দের হাতিয়ার।  যোগ্য সময়ে,  জনগনের কান্নাকে ভুলানোর জন্য ব্যবহার করা হয়।  কিন্তু অধিক ব্যবহারে তার ধার নষ্ট হয়ে যায়।  


ব্লগার -রবীন মজুমদার 
তারিখ -১৫/০৪/২৫

rabinujaan.blogspot.com ক্লিক করে যে কোন সার্চ ইঞ্জিন থেকে অন্যান্য ব্লগগুলি পড়া যাবে। 

মন্তব্যসমূহ

নামহীন বলেছেন…
খুব ভালো লাগলো।

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

(২৬৯) রবি সৃষ্টির বৈচিত্রতা (প্রথম নিবেদন )

(২৩১) মানুষ থেকে নক্ষত্রে উত্তরণ

(২৪২) নারীর একাল ও সেকাল