২৯১ ইতিহাসের পূর্ণ আলোকে মেঘদূত দর্শন - একাদশ পর্ব
২৯১ ইতিহাসের পূর্ণ আলোকে মেঘদূত দর্শন - একাদশ পর্ব
রামায়ণ ও কালিদাসের মেঘদূত (১)
ইতিহাস এগিয়ে চলে প্রাচীনকে কাছে টেনে নিয়ে তাকে বর্তমানের মতো গড়েপিঠে তোলার মধ্যে। এতে অতীতের কোন অবমাননা হয় না , বরং সেটাই তার ন্যায্য অধিকার এবং ইতিহাস সেই ধারাই বহন করে আসছে। বর্তমানের যদি সংজ্ঞা দিতে হয়, তাহলে বলতে হয়, রাশি রাশি জড় করে থাকা অতীতের আত্মবিসর্জনের মধ্যে যে হোমশিখা জাগ্রত হয়, সেখান থেকেই উঁকি মারে বর্তমানের সোনালি আভা। এই ভাবেই গত হয় পূর্বের কাল বর্তমান কালের গহ্বরে। এই নবীন প্রবীনের আত্মসমর্পনের পালা নিরবিচ্ছিন্ন গতিতে ভবিষ্যতের পানে ধেয়ে যাচ্ছে।
যে সাহিত্যের বীজ একদিন প্রোথিত হয়েছিল ঋগ্বেদের বাগানে, সে একদিন স্বাদে, গন্ধে বিকশিত হয়েছিল। যুগান্তে তাদেরই আত্মবিসর্জনে নবপল্লবে উৎসারিত হয়েছিল ঋষি বাল্মীকির অন্তঃপুরে। তারপর বাল্মীকির বাগানের সেই বীজ অমর অঙ্কুরে প্রস্ফুটিত হয়েছিল কালিদাসের অন্তরস্থ বাগানে ফুলে ফলে। এখানেই শেষ হয়নি কালের যাত্রা, এর মধ্যে কত নাম না জানা বাহক হয়তো ছিল কিন্তু উল্লেখযোগ্য ছিল ঊনবিংশ থেকে বিংশ শতাব্দীতে রবীন্দ্র ভাবনার সাবলীল বিচ্ছুরণের ঘনঘটা। আর এখানেই একইসাথে প্রকৃতি ও উপনিষদ যত্ন করে নিজেদের জায়গা করে নিয়েছে।
পূর্বসূরির কাছ থেকে যা যা সম্পত্তি কালিদাস অর্জন করেছিলেন, প্রতিটি রত্ন তিনি যত্ন সহকারে ব্যবহার করছেন এবং উত্তরসূরি হিসাবে অতীতকে যথাযথ মর্যাদা সহকারে প্রতিষ্ঠা করেছেন। বাল্মীকির এই দান ছিল কালিদাসের কাছে প্রকৃতির দানের তুল্য। মেঘদূত কাব্যে, সামগ্রিকতা বা পারপার্শিকতা কখনো ব্যক্তি নির্ভর হয়ে উঠেনি। মানবাত্মা আর প্রকৃতি যে একসূত্রে বাধা, সেই ভাবনাটা কখনই কাহিনীর অগ্রগতিতে লক্ষ্যচ্যুত হয়নি। পদে পদে প্রাচীনকে আত্মস্থ করে নব রূপে উপস্থাপন করে অতীতকে য্থায্থ স্বীকৃতি দিয়েছেন। যে নিসর্গ প্রীতি , প্রকৃতির সাথে আত্মীয়তা স্থাপন ঋগ্বেদে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, উত্তরপর্বে বাল্মীকির কলমটি একইভাবে কালিদাসের হস্তে সুদৃঢ় ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
চলবে ০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০
ব্লগার -রবীন মজুমদার
তারিখ -১৭/০৭/২৫
ভালো লাগলে পরিচিতদের কাছে শেয়ার করুন। খারাপ লাগলে ইগনোর করুন।
rabinujaan.blogspot.com ক্লিক করে যে কোন সার্চ ইঞ্জিন থেকে অন্যান্য ব্লগগুলি পড়া যাবে।
মন্তব্যসমূহ