পোস্টগুলি

এপ্রিল, ২০২৫ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

(২৬৫) শব্দ তুমি কি অপ্রতিহত -

ছবি
  (২৬৫)   শব্দ তুমি কি অপ্রতিহত  -    বহুদিনের    আগের কথা, সৃষ্টি কর্তা যখন আমাদের মানুষ বানিয়ে মর্ত্যে পাঠালেন, তখন সবই দিলেন, শুধু একটা জিনিস ছাড়া।  পৃথিবীতে আসার পর মানুষকে বেশ কিছুদিন প্রভিশনাল পিরিয়ডে  রেখে দিয়ে অপেক্ষা করলেন, দেখতে চাইলেন ,  ভাষা ছাড়া  মানুষ কি ভাবে বাঁচতে পারে, তার প্রতিক্রিয়া দেখতে।  দূর হতে তোমারে দেখেছি - দূর থেকে সৃষ্টি কর্তা দেখলেন কথা বলার জন্য মানুষের সেই প্রাণান্তকর আকুতি। তাই দেখে নিজেকে আর ঠিক রাখতে পারলেন না। মুখে বসিয়ে দিলেন শব্দকে আর সেই থেকে মানুষকে তার আমৃত্যু পর্যন্ত ব্যাবহার করার সত্ত্ব দিয়ে দিলেন। প্রকৃতির দানে জ্ঞানেন্দ্রিয় আর কর্মেন্দ্রিয় সচল হয়ে উঠল। এই পর্যন্ত সব ঠিক ছিল।   এলো মানুষ ধরার দল গর্বে যারা অন্ধ তোমার সূর্য্যহারা অরণ্যের চেয়ে -   সৃষ্টির এই অমোঘ প্রক্রিয়াকে অস্বীকার করে  ক্ষুদ্র গোষ্ঠী  এক অভিনব আবদার নিয়ে হাজির হলো। তারা বললো, বাপু আমরা  ঈশ্বরের  প্রতিনিধি, তোমাদের ঈশ্বর কি দিয়েছেন জানিনা, কিন্তু আজ থেকে  ওই তোমাদের ইন্দ্রিয়...

(২৬৪) তাই চেয়ে চেয়ে মরি

ছবি
  (২৬৪) তাই চেয়ে চেয়ে  মরি  ভারতীয় সমাজে নারীর উত্তরণ ও অবমননের মানচিত্রটাকে চিত্রিত করতে   গেলে শুধু মাত্র নারীকে আলাদা করে উপস্থাপন করলে  সমগ্র পটভূমিটা একটা বিচ্ছিন্ন দ্বীপের আকার ধারণ করবে। তৎকালীন সাহিত্য এবং ইতিহাস থেকে যৎকিঞ্চিৎ সহযোগিতা পেয়েছি তারই আলোকে এই প্রবন্ধটি লেখার দুঃসাহস হয়েছে। সমাজ যদি একটা সম্পূর্ণ দেহ হয়ে থাকে তাহলে  নারী  একটি অপরিহার্য্য অঙ্গের  সমতুল্য।  *************************************** ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায়, মানুষ নিজেই একটা প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানটি যুগে যুগে সময়ের চাহিদায় নিজেকে বদল করেছে। সময়ের চাহিদার সঠিক বিশ্লেষণের সাথে জড়িয়ে আছে তার পরিবর্তনের কারণ। আজকে যেমন শিল্প ভিত্তিক সভ্যতার বিকাশের পিছনে মানুষের চাহিদাই প্রধান কারণ। তাই মানুষের পায়ের নখ থেকে মাথার  চুল পর্যন্ত যা কিছু আছে, তাকে পূরণ করার লক্ষেই অসংখ্য শিল্প গঠন।   তারই লক্ষ্যেই উৎপাদন, বিপণন এবং সমগ্রটাকে নিয়ে অর্থনীতি। সেটি পূর্বেও ছিল কিন্তু বর্তমানকালে রাষ্ট্র, সমাজ এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের প্রধান চালিকা শক্তি এই অর্থনীতি...

(২৬৩) হর্ষবর্ধন আর গোবর্দ্ধন

ছবি
(২৬৩) হর্ষবর্ধন আর গোবর্দ্ধন  প্রতারণা এমন কোন দুর্লভ বস্তু নয়। সেটা অবশ্য খোলা বাজারে কিনতে পাওয়া যায় না। সেকালে এবং একালে একই ভাবে সেটা  পাওয়া যেত। সে একান্তই অন্তঃকরণের সামগ্রী।  কয়েনের একপিঠে যেমন সততা অবস্থান করে তার বিপরীত পিঠটা প্রতারণার জন্য বরাদ্দ থাকে।  কিন্তু যাদের প্রতারণা করা হয় তারা কিন্তু বিশেষ সততার সাথে প্রতারকদের সৎ বলে বিশ্বাস করে থাকে। যেমনটি দর্পনের দিকে তাকালে যে প্রতারকের প্রতিচ্ছবি প্রতারক হিসাবে আসবে আবার সৎ মানুষের প্ৰতিবিম্বতে প্রতারক প্রতিফলিত হবে না। উদ্দেশ্য পূরণের রাস্তাটা যখন সুগম হয় না, তখন মানুষ প্রতারণার আশ্রয় নেয়। এটি বৃহৎ পরিসরে দুর্বল রাজনীতিবিদ এবং সমাজের মাথাদের সাধারণ মানুষকে বোকা বানানোর উৎকৃষ্ট অস্ত্র হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।  প্রেম করতে গেলে শিক্ষিত হতে হয়না। এটা মনুষ্য জন্মের সাথে প্রকৃতি ফ্রি দিয়ে থাকে। আবার ঘৃণার ক্ষেত্রে ও তথৈবচ। উভয়ের জন্ম একই সূত্র থেকে, সেই অন্তঃকরণ। প্রেম যখন ফলদায়ী হয়না, তখনিই কিছু মানুষের হৃদয়ে ঘৃণার উদ্বেক হয়।  মজার ব্যাপার হল যারা সৃষ্টি করেন তারা কিন্তু সিদ্ধান্ত নেন না কোনটা  কখ...

(২৬২) এই বৈশাখে

ছবি
  ( ২৬২) এই বৈশাখে  অন্তরে মিশালে তবে তার অন্তরের পরিচয়  মোর ভাবনারে কি হাওয়ায় মাতালো, আজ ১লা বৈশাখে বিগত দিনগুলি অনুভূতিগুলি নিয়ে মাতবার  বিশেষ সুযোগ।    নিত্য আমরা কত টুকরো টুকরো বাধা বিপত্তিকে সঙ্গে নিয়ে  ঘুরে বেড়াই। সেখানে একের সাথে অন্যের এক মনগড়া ব্যাবধান রচিত হয়। সবাইকে নিয়ে পথ চলতে গিয়ে সেই স্থুল ব্যবধান গুলি কখন যে ঘুচে যায়, তা আমরা বুঝতেই পারিনা। কখন কি শোনা গিয়েছে যুদ্ধ ক্ষেত্রে রাইফেল হাতে একটা সৈনিকের পাশে অপর একটা সৈনিক লড়াই করে, সেখানে কি পাশের সহযোদ্ধাকে জিজ্ঞেস করে, তোমার জাত কি কিংবা  তুমি কোন বর্ণের মানুষ। কখনই জিজ্ঞাসা করেনা, কারণ প্রত্যেকে একটা নির্দিষ্ট  উদ্দেশ্যের জন্য সংঘর্ষ করছে। আসলে নিদ্দিষ্ট উদ্দেশ্যই সবাইকে এক সূত্রে বেঁধে রাখে।  এই মিলনের মন্ত্রে যারা আমাদের সহযাত্রী, আজ এই পুন্য দিনে তাঁরা  সবাই আমাদের কাছে স্মরণীয়। আসলে এদের সবার মধ্যে মানুষ নিজেকেই খোঁজে।  তবে হোক না সেই অন্বেশন, তাদের ভাষায় আমাদের কথা গুলি কখন গানের  সুরে কিংবা আবৃত্তির মূর্ছনায় অথবা কথায় কথায়। আসলে সত্যকে কখনো ভাগ করা যায়...

(২৬১) ভারতীয় সমাজে নারীর উত্তরণ ও অবমননের মানচিত্র - ষষ্ঠ পর্ব

ছবি
( ২৬১)  ভারতীয় সমাজে নারীর উত্তরণ ও অবমননের মানচিত্র - ষষ্ঠ পর্ব    পঞ্চম পর্বের পর ০০০০০০০০০০০০০০০০০০ যুগে যুগে  কুসংস্কার শাসকের শোষণের অন্যতম হাতিয়ার  হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। শাসকের রন্ধনশালায় স্বার্থানেষী ব্রাহ্মণ পাচকদের রন্ধন প্রক্রিয়ায় অত্যন্ত সুস্বাদু এবং সহজেই পারিপাকযোগ্য করে পরিবেশন করার একটা ধারাবাহিকতা আছে, যেটি শত পরিবর্তনের জোয়ারে নিজের উপর তার প্রভাব পড়তে দেয়নি।   বিদেশী শাসনের কুফলে ভূমিষ্ঠ হয় শাসিত জাতির মানসিক পরিমণ্ডলে এক ধরনের হীনমন্যতা।  আর সেই অসম্মান জন্ম দেয় উগ্র জাতীয়তাবোধের। দৈহিক  শক্তি প্রদর্শনের দুর্বলতা কখনই প্রমান করেনা একটা জাতির দুর্বলতাকে। দুর্বলতা আসলে মনের একান্ত সম্পদ, যা দীর্ঘদিনের অভ্যাসের ফসল।  জাতীয়তাবোধ যখন উতুঙ্গে পৌঁছে যায়, তখন সে হয়ে উন্মত্তের মতো নিজেকে আবদ্ধ রাখে বর্ষ প্রাচীন অবৈজ্ঞানিক ভ্রান্ত বোধের সুউচ্চ প্রাচীরে ঘেরা অলিন্দে। সেই প্রাচীনতাকে  সর্বদা রক্ষা করে আসে বলেই সে রক্ষণশীল।  তাই সে স্বভাবগত ভাবে বহমান সভ্যতার ভাঙাগড়ার খেলায় অংশ গ্রহণ করে না। যে আলো বাতাস সমাজের আঙিনার ...

(২৬০) ভারতীয় সমাজে নারীর উত্তরণ ও অবমননের মানচিত্র - পঞ্চম পর্ব

ছবি
  (২৬০)  ভারতীয় সমাজে নারীর উত্তরণ ও অবমননের মানচিত্র - পঞ্চম পর্ব  চতুর্থ পর্বের পর ০০০০০০০০০০০০০০০০০০০   কৌতূহল  পরম  বিষম  বস্তু। একবার যদি মণিকোঠায়  পাখি হয়ে উড়ে বসে , তারপর যেই সে উড়তে শুরু করে মন তার পিছনে দৌড়াতে থাকে, কখন তাকে  খাঁচায় পুড়বে বলে।  সে পাখিটা কোন সাধারণ পাখি নয়, তার পিছনে দৌড়াতে দৌড়াতে এসে আমরা পৌঁছিলাম প্রায় সাড়ে তিনহাজার বছর আগে।   শীতের শেষ রাত্রি, কুল কুল শব্দ করে সিন্ধু নদী বয়ে যাচ্ছে, ঠিক নদী  পারে এক প্রাচীন ঋষি কুয়াশার ঢেউয়ের বিছানো গদির উপর উপবিষ্ট হয়ে ঋগ্বেদের মন্ত্র সুর করে পাঠ  করে যাচ্ছেন। দুষ্ট কুয়াশা বারংবার  ঋষিকে আড়াল করতে উদ্দত,  তিনি তাদের আড়ালে কখনো আবছা আবার কখনো প্রকট। তিনি সেদিকে নজর না দিয়ে আবৃত্তির ঢংএ বলে যাচ্ছেন - আব হি বরদে দেবী যৎচ্ছরিতম  আবাদিনী গায়েত্রী ছন্দসাম মাতা  ব্রহ্মযোনি নমঃহস্তুতে।   বহু সুরের মহামিলনে একটি সুরই মহাসুর হয়ে উঠে। এই মূল সুরটাকে মনে ধরে গেলো আর  কলমের আগায় রেখে  তারই ছবি  আঁকা।  সময়ের ধারার কাছে ...