পোস্টগুলি

মে, ২০২২ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

মীমাংসা (১২৮)

ছবি
মীমাংসা (১২৮)   যখন জীব ধীরে ধীরে সাংসারিক মোহ থেকে মুক্ত হতে শুরু করে, তখন তার মনের মধ্যেকার দ্বৈতভাবটাও ধীরে ধীরে সরতে শুরু করে এবং ত্যাগের প্রক্রিয়া যখন সমাপ্ত হয় তখন আলোর দরজাটা উন্মুক্ত হয়ে যায়।      গত সংখ্যার পর  ০ ০ ০ ০ ০ এই মায়ার পৃথিবীতে, যখন আমরা নিজেদের  স্বপ্ন দিয়ে তৈরী করা সৌধগুলি বাস্তবের সংস্পর্শে এসে একের পর এক ভাঙতে দেখি  তখন সেই ধংসস্তূপের মধ্যে থেকে শুধু একটা প্রার্থনা ঘুরে ফিরে আসে, তা হল শান্তির জন্য আকুল আবেদন। সেই আবেদনে সারা দিয়ে বাইরের পৃথিবীতে খুঁজতে খুঁজতে ক্লান্ত পথিক যখন নিজেকে একান্তে আপন অন্তরে খুঁজতে শুরু করে, তখনিই সে জ্ঞানের আলোকে তার কাঙ্খিত বস্তুর সন্ধান পায়।  সেই পথে হাটতে হাটতে অন্তরের যা কিছু অসত্য আর অজ্ঞান বৃক্ষের পাতাগুলি একে একে ঝরে যায় আর সেই স্থান দখল করে নেয় নতুন করে গজিয়ে উঠা জ্ঞানবৃক্ষের ফলগুলি। সারা দিনের শেষে শুধু একটা প্রশ্নই ঘুরে ফিরে আসে, যাকে এতদিন  সত্য বলে জানতাম সে সবই ছিল ভ্রম।    যা জীবনে জানা নেই, যা দেখা নেই সেই অজানা আ...

একদা পল্টু বাবু (১২৭)

ছবি
  একদা পল্টু বাবু (১২৭) মানুষ কিংবা সংগঠন প্রত্যেকেই উত্তরসূরির মধ্যে নিজেকে বা নিজেদেরকে দেখিতে চান ; ইহা তাহাদিগের সহজাত প্রবৃত্তি। আগামী প্রজন্ম কি হইবে  তাহা  পরিবারের বা সংগঠেনের  নেতৃত্ব স্থানীয় সদস্য বা সদস্যরা মনে মনে  ঠিক করিয়া থাকেন। যেমন, যে পরিবারের কর্তা ব্যক্তি যদি  ডাক্তার হইয়া থাকেন, তবে তিনি চাইবেন তার সন্তানরা তাঁহারই মতো ডাক্তার হউক। সেইরকমই ভাবিয়া অন্যান্য পেশার কর্তাব্যক্তিরা সেইরূপ চাইয়া থাকেন। ঠিক তেমনি পলটু বাবু প্রসিদ্ধ মনোহারী দোকানের কর্নধার, তিনি প্রসিদ্ধ ক্রেতাদের উপযুক্ত মূল্যের বিনিময়ের  ওজনে  কম মাল সরবরাহ করার কারনে।  তাই তার এই অভ্যাসটা যাতে তার পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে বর্তায় তাহার জন্য তিনি সেই রূপ গুরুমশাইকে অনেক খুঁজিয়া কৃতকার্য হইলেন না।  এটাই স্বীকার্য যে,পারিবারিক শিক্ষার অন্তে পাঠশালার শিক্ষাগুরুই ছাত্রদের আগামী দিনের নাগরিক তৈয়ারী করিয়া থাকেন। পল্টু বাবু তাহা বিলক্ষণ জানিতেন। তিনি এও জানিতেন,যে, দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ...

দূরের চিঠি - ১২৬ চতুর্থ সংখ্যা (শেষ সংখ্যা )

ছবি
 দূরের চিঠি - ১২৬                                 চতুর্থ  সংখ্যা  (শেষ সংখ্যা ) আজ প্রতিজ্ঞা প্রস্তুত হোক ঘরে ঘরে দানবরূপী  প্রতিক্রিয়া বন্ধ হোক চিরতরে  নামনি, যদিও 'প্রতিক্রিয়া' শব্দটির ব্যবহার একটু জটিল, আমরা ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে বাইরের পৃথিবী থেকে যা কিছু সংবাদ গ্রহণ করি, সেটা আমাদের চিত্তে গিয়ে পৌঁছায়। চিত্ত সংগঠিত হয় মন, বুদ্ধি এবং অহংকারের সমারোহে।  এক শান্ত শিষ্ট দিঘি বা  যেখানে   ফসল  ফলে সেই জমি হিসাবে  মনকে  কল্পনা করতে পারো আর সেইখানে খেলা করে অহংকার আর বুদ্ধি। যেমন দিঘির জল আন্দোলিত হয় বাইরের থেকে নিক্ষিপ্ত পাথরের টুকরায়, সেই রকম মনও চঞ্চল হয় ইন্দ্রিয়ের দ্বারা গৃহীত সংবাদে। মায়া  যেখানে অহংকারের জন্ম দেয় এবং বুদ্ধির উপর অহংকার এক দীর্ঘ ছায়া ফেলে। উৎপাদিত হয় ভ্রমের। একমাত্র জ্ঞানই সেই অহংকারের মেঘকে সরিয়ে বুদ্ধিকে জাগ্রত করে। কেননা আকাশ মেঘের থেকে অনেক বড়ো। আবার জ্ঞান জন্ম দেয় চেতনার আর চেতনা হল...

দূরের চিঠি - ১২৫ তৃতীয় সংখ্যা

ছবি
  দূরের  চিঠি    -  ১২৫                                      তৃতীয় সংখ্যা  শুরু হল মায়ার খেলা  নামনি,  আমিও তোমাদের মতো অচিরেই সেই মায়াবী প্রকৃতির দাসত্ব করতে শুরু করলাম। আমাকে ঘিরে পরিবার পরিজনদের যে আবর্ত রচনা হলো, আমার মনে হল আমি এক সূর্য, যে শুধুই আনন্দের  সুধা   বর্ষণ করে আর তোমরা সেই পৃথিবী যারা আমাকে পরিক্রমা  করে সেই  আনন্দের অংশীদার  হও।  যখন আমি অকারনে  হেসে উঠতাম  তখন তোমাদের চাহনিতে একটা পরিতৃপ্তির ছবি যেমন ভেসে উঠতো  আবার যখন কেঁদে উঠতাম তখন তোমাদের চোখে মুখে ফুটে উঠতো নীরব এক উৎকন্ঠার  চাহনি। সেই দেখে আমার মধ্যে এক মিশ্র অনুভূতির সঞ্চার হতো, সেটা তোমরা বুঝতে পারতে কিনা জানিনা। আমার জানার  প্রাথমিক  পাঠটা  পরিবারের আচার আচরণকে ঘিরেই  জ্ঞানের ভান্ডার সমৃদ্ধ হতো। পরে আরো ঐশ্বয্যময় হয়েছিল পরিবারের চৌহদ্দির বাইরের থেক...

দূরের চিঠি - ১২৪ দ্বিতীয় সংখ্যা

ছবি
   দূরের  চিঠি    -  ১২৪  দ্বিতীয় সংখ্যা  ভুবন মিলে  যায় সুরের রণনে  নামনি, আজকে যখন  ওপারের  শঙ্খধ্বনির শব্দটা  ক্রমেই কাছে , আরো কাছে এসে  আমার হৃদয়ে অনুরণিত হচ্ছে , আমি সেই শঙ্খনাদের অর্থ জানি, এটা তাদের  আমাকে বরণ করার   আনন্দধ্বনি। এই  সুরের রণনে একে একে   খসে যেতে লাগলো কৃত্রিমতার মুখোশগুলি  আর সেখান থেকে উন্মোচিত হল  চেতনার , যিনি জগৎ সংসারে আত্মা বলে পরিচিত। এই আত্মার স্বভাব হচ্ছে অপরিবর্তনীয় । সেখানে তাই  হারিয়ে যাবার কোন বেদনাও নেই। শুধুই আনন্দই সেখানে বিরাজমান । সেটাই আমার গন্তব্যস্থল। আর আজ যেখানে আছি সেটাতো  নকল বুদির গড় ,  তাইতো মুখোশ পড়া সম্পর্কগুলি একটা সময় পর্যন্ত আসল বলে মনে হয়, কিন্তু সেটা সাময়িক। যাঁর  কোন স্থায়িত্ব নেই তাই  সে নকল। সে যখন সেই মুখোশ খুলে মঞ্চ থেকে বিদায় নেয়, তখন সবাই সেই মুখোশকে আঁকড়ে ধরে কান্নায় ভেঙ্গে পরে। আমিও তোমাদের কাছে সেই মুখোশ পরা 'বাবাই' যে এই ...

দূরের চিঠি - (১২৩) প্রথম সংখ্যা

ছবি
  দূরের  চিঠি    - (১২৩)                              প্রথম সংখ্যা  জন্ম ১৯শে  জুলাই, ১৯৮৫। তিরোধান ৩০শে জুলাই, ১৯৯০   নামনি  প্রিয় নামনি  , আসে কোন তরুণ অশান্ত  আজ সকাল থেকে আকাশটা যেন পণ করেছে কিছুতেই মেঘকে ছুটি দেবেনা। পার্ক নার্সিং হোমের পাশে এ জে সি বসু রোডে প্রায় এক হাটু সমান জল জমে গেছে।   বাইরে বিরামহীন  বর্ষনের সুরটা  আমার কাছে আজ  সার্বজনীন  বেদনার অনুভূতিকে বহন করে আনছে। এ যেন প্রিয়জনের বিদায়ের একটানা সানাইয়ের বিষাদের সুর  বেজে যাচ্ছে।  ছিন্ন পাতার সাজাই তরণী, একা একা করি খেলা     ৩০শে  জুলাই, ১৯৯০, আজকের   থেকে ঠিক  পাঁচ বছর ১১ দিন আগে   বহু প্রলোভন দেখিয়ে এই বিশ্ব প্রকৃতি   আমাকে  এই পৃথিবীতে আমন্ত্রণ করে নিয়ে এসেছিলে। আজ আমি  পার্ক নার্সিং হোমের ৯ নং বেডে  তোমার  কাছে শুয়ে আছি।...