বৃহস্পতিবার, ১৩ জুন, ২০২৪

(২১৭) জগাখিচুড়ি -তৃতীয় সংখ্যা

 (২১৭) জগাখিচুড়ি -তৃতীয়  সংখ্যা 


 আর্নেস্তো চে গুয়েভারা কি রাজনৈতিক আদর্শের নিয়ন্ত্রক  ?

 বিপ্লবীসহ সুবুদ্ধি  সম্পন্ন মানুষের কাছে অবিসংবাদিত আইকন চে গুয়েভারা। আজ পর্যন্ত তাঁর বিকল্প কেউ হয়ে উঠতে পারেননি। অবশ্য চে' সারা জীবন ধরে যাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে ইতিহাস হয়ে গেছেন, তারাই আবার তাঁর মৃত্যুর পরে সেই প্রতিকৃতি ও অন্যান্য শারীরিক অলংকারগুলিকে  মূলধন করে সারা বিশ্ব জুড়ে বিপণন করে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করে আসছেন।  সারা পৃথিবীতে রক্তক্ষয়ী রাজনৈতিক আন্দোলন  সংগঠিত  করে যাঁরা নিজ দেশে  সমাজতন্ত্র  প্রতিষ্ঠা করে ছিলেন, তাঁরা কিন্তু বিপ্লব পরবর্তী  অভ্যন্তরীণ সংস্কারের মধ্যে জড়িয়ে পড়ে অন্যের সংসারে চুলা জ্বলছে কিনা সেই খবরটা নেবার পর্যন্ত  সময়  পাননি।  তাতে কেউ হয়ত তাদের  জাতীয়তাবাদী বলেন নি কিন্তু আন্তর্জাতিকতাবাদী  বলেও দাবি করেন নি। বিপ্লব পরবর্তী সময়টা যেন অবিবাহিত  ব্যক্তির বিবাহ করার মতো।  সেই যে একবার হেঁশেল ঢুকে যায়, সেখান  যখন বের হয় তখন গানসেলুট আর দেশের পতাকা আর কিছু ফুলমালা  ছাড়া অন্যকিছু জোটে না। এই খানেই চে গুয়েভারা ছিলেন ব্যতিক্রমী। সংসার করেও সংসারে বন্ধনে জড়িয়ে পড়েন নি।  অন্যের সংসারে খাদ্যের যোগান আছে কিনা, সেই ভাবনায় ঘরে ঘরে ঘুরে বেড়িয়ে ছিলেন। 

যে সময়কালে চে' অন্যের হেঁশেলগুলি পর্যবেক্ষন করছিলেন, ঠিক সে সময়ে এই পৃথিবীর নব্য নবাব আমেরিকা,  সমগ্র ল্যাটিন আমেরিকার কোণে কোণে  রাজনৈতিক হারেম খুলে  রেখেছিলেন। এই উৎসাহী ভদ্রলোক বলিভিয়ার হারেমে গিয়ে উকিঁ মারার অপরাধে মার্কিনী খোজাদের শূলের আঘাতে প্রাণ বিসর্জন দিয়ে ছিলেন। জীবিত চে-গুয়েভারার  থেকে মৃত চে' যে কত ভয়ঙ্কর সেটা নবাবরা আজও টের পাচ্ছেন। 

                            *****************************

সৎ-এর  সংখ্যা একান্তই কম তাই তাঁদের চাক্ষুস করার প্রবণতা বেশী-

প্রকাশ্যে হোক কিংবা গোপনে হোক প্রিয়াকে দর্শন করাটা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তির মধ্যে পড়ে। প্রিয় সেই-ই হয় যাঁর মধ্যে মানুষ নিজেকে আবিষ্কার করে, নিজের ভাবনার প্রতিফলন দেখে। নির্ভিকতায় অবিচল, সত্য প্রতিষ্ঠার পিপাসী, নিপীড়িত মানুষের প্রতি গভীর সহানুভূতিশীল মানুষগুলির প্রতি সাধারণ মানুষের অশেষ কৌতূহল, এই আত্মকেন্দ্রীক মানুষের ভিড়ে।  কেননা নিজেদের সেই অপ্রকাশিত লুক্কায়িত ইচ্ছাকে যাঁরা অবলীলায় প্রকাশমান করেছে, তাঁদের আদর্শের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের উদ্দেশ্যই দৃষ্টিপাত।  সেখানেও মানুষ অসংখ্য অপ্রয়োজনীয় আকরিকের মধ্যে একমুষ্টি হীরাকে খুঁজে পাবার আনন্দ উপভোগ করে। কিস্তু সেই উপভোগটা সীমাবদ্ধ থাকে ভালোলাগার আনন্দের  মধ্যে, কেননা অব্যক্ত অনুভূতি যেন কোন অবস্থায় ব্যক্ত রূপে শাসকের দরবারে  পৌঁছালে ধনে মানে  পৈত্রিক প্রাণটাকে আর ধরে রাখা যাবে না। 

হতে পারে, তাঁদের রাজনৈতিকভাবে রাস্তাটা পরিপক্ক ছিল না, কিন্তু আজথেকে প্রায় ৫৭ বছর পূর্বে দেখা একদল ঝকঝকে তরুণদের আদর্শের কোন খামতি ছিল না।   সম্পূর্ণ কাঁচের আস্তরণের আড়াল থেকে আজও মানুষ প্রত্যক্ষ করলো , মুষ্টিমেয় কিছু আদর্শ নির্ভর তরুণ-তরুণীকে, কিন্তু পারলো না তাঁদের সাথে  অন্তরে অন্তর মিলাতে।  বাধা ছিল আর বাধা তো থাকবেই, সে যে মনের অন্তরালে পর্দানবিশ আর তাকে ঘিরে বসে আছে জীবনযাত্রার প্রথাগত নেতিবাচক ভাবনা। সৎ সদাই সংখ্যায় দীন কিন্তু তারা হীন নয়। তাই দীন হলেও সেই দীনতার মধ্যে একটা গর্ব আছে যেটা সংখ্যাধিক্য হীনদের ভিড়ে কখন হারিয়ে যায়নি।   


*****************************


 ব্লগার -রবীন মজুমদার 

তারিখ - ১৪/০৬/২৪

 https://rabinujaan.blogspot.com ক্লিক করে যে কোন সার্চ ইঞ্জিন থেকে অন্যান্য ব্লগগুলি পড়া যাবে

কোন মন্তব্য নেই:

ujaan

(২৩৯)বহতি হাওয়া

(২৩৯)বহতি হাওয়া   "আধুনিক " এই শব্দটিকে নিয়ে বেশ বাগবিতণ্ডা হয় মাঝে মাঝে, কোন বাক্যের প্রিফিক্স হিসাবে তাকে  বসানো যায়। আধুনিকতাকে...