রবিবার, ৩০ মার্চ, ২০২৫

(২৫৯) ভারতীয় সমাজে নারীর উত্তরণ ও অবমননের মানচিত্র -চতুর্থ পর্ব

  (২৫৯)  ভারতীয় সমাজে নারীর উত্তরণ ও অবমননের মানচিত্র -চতুর্থ   পর্ব 

তৃতীয়  সংখ্যার পর  ..................................................

 ফিরে দেখা  ১

যাকে  মন খুঁজে খুঁজে পাগল, সে থাকে লোকচক্ষুর আড়ালে। সেদিনের গল্প শুনতে গেলে, তখনকার কি কি কাহিনী ছিল, তার মধ্যেই খুঁজতে হবে। ইতিহাসে যা চাই, তার সঠিক উত্তর মেলেনা, কিন্তু সূত্র পাওয়া যায়।  সেই সূত্র ধরেই ঋগ্বেদের পাতা উল্টানো। উল্টাতে গিয়ে দেখি, সোনা যেমন, বহু উপাদানের সাথে মিলেমিশে একাকার হয়ে থাকে, ঠিক তেমনি, প্রার্থনা আর স্তবের মন্ত্রের সাথে মাখামাখি করে সমাজে পুরুষ ও নারীর অবস্থানের সূচনাগুলি  লুকিয়ে আছে। 

ঋগ্বেদটি বড্ড সুসজ্জিত, বিক্ষিপ্ত মন্ডলগুলিকে কেউ যেন সুশৃঙ্খলভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে পরিবেশন করেছে, রচনার পরবর্তী সময়ে। ব্যসদেব মহাশয় যে তার সুযোগ্য চার শিষ্যদের দিয়ে বেদকে সুসংগঠিত করেছিলেন তার প্রমান  মিলেছে। শুধু এই ঋগ্বেদ সংহিতায় আছে ১০টি মণ্ডল  ২০,৪০০ সুক্ত আর সব মিলিয়ে লাইন আছে প্রায় নব্বই হাজার। 

 তখনকার দিনে সাধারণ মানুষ তার কামনা বাসনাকে পূরণ করার জন্য বিকল্প কোনো প্রতিষ্ঠান না থাকাতে দেবতাদের উপর নির্ভরশীল ছিল। সেই জন্য প্রত্যেক দেবতাদের প্রতি প্রার্থনা মন্ত্র উচ্চারিত হতো।  সেখানেই শেষ নয়, সেই দেবতাদের  ভজাবার  জন্য ছিল অসংখ্য স্তব। ঋষিরা সেগুলি রচনা করতো আর সাধারণ  থেকে শুরু করে আপামর মানুষ যজ্ঞকালে সেই মন্ত্র পাঠ করতো পুরোহিত সহযোগে। যা বাস্তবে  ঘটতো তাকে নিয়েই তৎকালীন সাহিত্য। 

এক একটা মন্ডল এক একজন ঋষির ঘরানায় রচনা করা হয়েছে। আর সামাজিক ঘটনাবলীগুলি লুকিয়ে আছে কিছু কিছু শ্লোকের উপমায়।  ঋষিরা রচনা করতে গিয়ে বাস্তবতাকে কখনো অস্বীকার করেন নি। তদানীন্তন সমাজব্যবস্থার সার্বিক চরিত্রের উপর দাঁড়িয়ে আছে সামাজিক জীবদের অবস্থান।  কিংবা আরেকটু এগিয়ে গিয়ে বলা যেতে পারে, মানুষ যে ভাবে তাদের সমাজটাকে গঠন করেছিল এবং তার বিবর্তনের উপর দাঁড়িয়ে ছিল সমাজে পারস্পরিক সম্পর্কের ভিতটা।    

 সমাজের অভ্যন্তরীন ব্যবস্থার দিকে নজর দিলে, তাহলে দেখাযাবে সাম্যভাব মোটেই ছিল না।  বর্ণাশ্রম, নারী ও পুরুষের মধ্যে ফারাক, শিক্ষা একশ্রেণীর হাতে কুক্ষিগত ছিল, এককথায় শ্রেণী বৈষম্যকে সমাজ মান্যতা দিয়েছিলো । সীমিত জ্ঞানের ভান্ডার দিয়ে  প্রাকৃতিক জগতের ভাঙাগড়ার রহস্যকে সাধারণ মানুষ ভেদ করতে জানতো না আর সেই অন্ধকারের পথ ধরে কুসংস্কার সমাজে দানা বেঁধেছিলো। 

একটা আদর্শ  সমাজের সাথে একটি পিছিয়ে পড়া সমাজের তুলনামূলক বিচারের নিরিখে সামাজিক বিবর্তনের যথার্থতা প্রমান করা যায়। উদাহরণ স্বরূপ  ডাটা সংগ্রহ করে,  তাকে কোডিং করে, টেবিল তৈরি করে, প্রত্যকটা ভেরিয়েবলের ভ্যালু  বসিয়ে অতীত ও বর্তমানের তুলনাকে শতাংশের হিসাবের একটি  পরিসংখ্যান দিয়ে যেমন সমাজের অগ্রগতির/ অধোগতির  বর্ণনা করা যেতে পারে, তেমনি আগামীর সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেওয়া যেতে পারে। জারি থাকুক  তার সন্ধান।  



ক্রমশঃ 

ব্লগার -রবীন মজুমদার 
তারিখ -৩১/০৩/২৫
rabinujaan.blogspot.com ক্লিক করে যে কোন সার্চ ইঞ্জিন থেকে অন্যান্য ব্লগগুলি পড়া যাবে। 


কোন মন্তব্য নেই:

ujaan

(২৬১) ভারতীয় সমাজে নারীর উত্তরণ ও অবমননের মানচিত্র - ষষ্ঠ পর্ব

( ২৬১)  ভারতীয় সমাজে নারীর উত্তরণ ও অবমননের মানচিত্র - ষষ্ঠ পর্ব    পঞ্চম পর্বের পর ০০০০০০০০০০০০০০০০০০ যুগে যুগে  কুসংস্কার শাসকের শোষণের অন...