রবিবার, ৯ জুন, ২০২৪

(২১৩) ভারতবর্ষ কি এখনো রামায়ন ও মহাভারতময় (প্রথম পর্ব)

 (২১৩) ভারতবর্ষ কি এখনো রামায়ন ও মহাভারতময় (প্রথম পর্ব)    -

 

 পুরাণকে টপকে গিয়ে  রামায়ন ও মহাভারতের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করা মোটেই সম্ভব নয়।  কোথাও অতিরঞ্জন, কোথাও বা অলৌকিকতা আবার রূপকের বেলাগাম ব্যবহার এবং পরিশেষে প্রিজারভেটিভ হিসাবে ধর্মের ইনগ্রেডিয়েন্ট দিয়ে  ইতিহাসকে আগামীর কাছে পৌঁছে দেবার মহান দায়িত্ব তুলে নিয়েছিলেন সেদিনের পুরাণ রচয়িতারা।  তাঁরা জানতেন, সব কিছু ধ্বংস হয়ে গেলেও ধর্ম ধ্বংস হবেনা, তাই খুব সচেতন ভাবে ইতিহাসের সংরক্ষণের জন্য এই পথটা বেছে নিয়েছিলেন। (পুরাণের উপর কিছু তথ্য সমৃদ্ধ ব্লগ পূর্বে দেওয়া আছে ) 

সাধারণ মানুষের মধ্যে থেকে অতিমানব বানানো ভীষণ কঠিন কাজ কিন্তু অতিমানব হিসাবে পরিচিতি  নিয়ে মানবসমাজে অবতীর্ন হলে তাঁর   গ্রহণ যোগ্যতা  অনেক বেশী। এক কথায় ব্র্যান্ড ইমেজ। যাঁর আসনটা হবে সাধারণের থেকে বেশ খানিকটা উঁচুতে। যেই পুরাণটি দায়িত্ব নিয়ে এই অসাধারন কাজটিকে সহজ করেছিল, সেটি  হলো "গরুড় পুরাণ"। সেখানে ভগবান  বিষ্ণুর অবতার  অর্থাৎ ভগবানের মানব সংস্করণ হিসাবে দশ জনকে মনোনীত  করেছিলেন, তাদের মধ্যে সপ্তম অবতার হলেন রাম।  ( পরশুরামের পরে এবং  বলরামের আগে ) 

যে কোনো কার্যের মুলে আছে কারণ। এই রামায়ণ ও মহাভারত রচনার পিছনে মূল উদ্দেশ্য হল নৈতিকতা ও ধর্মকে সমাজে স্থায়ীরূপে প্রতিপালন। নিরেট  উপদেশ বিতরণের জন্য উপস্থাপন করলে তাঁর স্থায়িত্ব নিয়ে প্রকাশককে প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হতো। বিজ্ঞাপনের লক্ষ্য  উপভোক্তার কাছে বস্তুকে পৌঁছে দেওয়া এবং তাকে উপস্থাপনার ক্ষেত্রে উপভোক্তার জীবন দর্শনটা বিজ্ঞাপন সংস্থা স্টাডি করে বিজ্ঞাপিত করে।  আর সেই দিন ভারতীয় ঋষিরা দিব্যদৃষ্টিতে অবলোকন করে এই দুটি মহাকাব্যকে দীর্ঘ জীবনদানের পরিকল্পনাকে একই সুবে বেঁধে আজও প্রাসঙ্গিক করে তুলেছেন এবং আগামীতে থাকবে বলে আশা করা যায়।   

সহজকে যদি একবার পেয়ে যায়, কঠিনকে সেই চৌহদ্দির মধ্যে প্রবেশ করতে দেয় না - এটা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। ধর্মের মতো একটা কঠিন বিষয়কে  সহজ করে  জনমানসে পরিবেশন করার জন্য খানিকটা কাহিনীর  আশ্রয় নিয়ে হবে বৈকি, তাতে বেদের যে চারটি বর্গকে প্রতিষ্ঠার কাজটি ভীষণ সহজ  হবে।  তাই দেখা যায় কাহিনীর গতিপথ ধরে  পাঠক যতই এগিয়ে যায়, ততই দেখা যায় এক অদৃশ্য শক্তি গোটা  গল্পের আকাশ বাতাসকে নিয়ন্ত্রণ করছে।  সেটাই  ঋষিদের কাম্যবস্তুর মন্ত্র   - ধর্ম, অর্থ, কাম ও মোক্ষ সমাজে স্থাপনা । 

"রামায়ন" এই শব্দটি ভাঙাচোরা করলে দুটি শব্দ বেরিয়ে আসে , তাহলো 'রাম' এবং 'য়ন' অর্থাৎ যাত্রা , গোটাটা মিলালে রামের যাত্রাপথ। সমাজবিজ্ঞানীদের দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করলে, বলা যায়, রাম ব্যক্তিগতভাবে তার  সমাজে কিভাবে সমন্বয় করেছিলেন সেটাই তাঁর  মূল্যায়ন।  এই কাহিনীর শেষটাকে যদি  প্রথমেই টেনে নিয়ে রামায়নের বদলে ' সীতায়ন' বলা হয়, তাহলে সেটা কতখানি  যুক্তিযুক্ত হবে, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে কাহিনীর গভীরে প্রবেশ করতে হবে। 

 ব্লগার -রবীন মজুমদার 

তারিখ -১০/০৬/২৪ ভোর ৪:৩৪ 

 https://rabinujaan.blogspot.com 

ক্লিক করে যে কোন সার্চ ইঞ্জিন থেকে অন্যান্য ব্লগগুলি পড়া যাবে


কোন মন্তব্য নেই:

ujaan

(২৩৯)বহতি হাওয়া

(২৩৯)বহতি হাওয়া   "আধুনিক " এই শব্দটিকে নিয়ে বেশ বাগবিতণ্ডা হয় মাঝে মাঝে, কোন বাক্যের প্রিফিক্স হিসাবে তাকে  বসানো যায়। আধুনিকতাকে...