পোস্টগুলি

সেপ্টেম্বর, ২০২১ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

আমি মহাভারতের পৃথা - অষ্টম পর্ব

ছবি
  আমি মহাভারতের পৃথা - অষ্টম পর্ব   প্রকৃতির রাজ্যে বসন্ত তার আগমনের বার্তা তার সৃষ্ট জগতের সব কুশীলবের কাছে পৌঁছে দেয়। তার বাহ্যিক রূপ  প্রকাশিত হয়  গাছে গাছে, ফুলে ফলে, দক্ষিণের বাতাস প্রাণীকুলের কাছে সেই বার্তা বহন করে তাদের অনুভূতিকে জাগ্রত করে । হঠাৎ আকাশবাণী এলো  , হে মর্ত্যবাসীগন সাবধান! বসন্ত এসে গেছে। প্রকৃতির রাজ্যে  যতি চিহ্নের কোন ব্যবহার নেই, শুধুই বাঁধ ভাঙ্গার গানের সাথে তাল মিলিয়ে নৃত্য করতে করতে  প্রকৃতির বুকে হারিয়ে  যাওয়া ছাড়া।  সেদিনও শাল পলাশ ফুল গাছে গাছে ফুটেছিল , দখিনা বাতাস বহন করেছিল কত বিস্মৃতির আড়ালে থাকা  মধুর স্মৃতিকে। এক  মাদকতার জোয়ারে প্রাণীকুলের দেহ মন অবশ হয়ে গিয়েছিল । সে উন্মত্ততা মানেনা কোন বয়সের বাধা বা  না কোন মুনিঋষির অভিশাপ। সে শুধু প্রচন্ড মহিমায় উদগ্র কামনার জোয়ারে  সব  বাঁধাকে ভাসিয়ে নিয়ে যেতে যায়।   ধীরে ধীরে পান্ডু আর মাদ্রীর ছবিটা  পৃথার দৃষ্টির অন্তরালে হারিয়ে গেল। ক্রমেই তারা গভীর থেকে গভীরতর অরণ্যে প্...

আমি মহাভারতের পৃথা : সপ্তম পর্ব।

ছবি
  আমি মহাভারতের পৃথা : সপ্তম  পর্ব। অসম্পূর্ণতাই  মানব জীবনের অন্তিম  পরিণতি। এক জীবনে পূর্ণতার স্বাদ কখন পাওয়া যায় কিনা  জানা নেই। পূর্ণতার আকাঙ্খাই হচ্ছে  সৃষ্টির  কাঁচামাল, বেঁচে থাকার রসদ । জীবনে সবকিছু পেয়ে গেলে সেই ব্যক্তির  ইন্দ্রিয়ের কোন কাজ থাকবেনা, ইন্দ্রিয়ের কোন কাজ না থাকলে গ্রন্থিগুলির কাছে পৌঁছাবে না তাদের দৈনিন্দন অন্নের ভান্ডার । রসদের  অভাবে বন্ধ হবে দেহের যান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং তার   সুদূর প্রসারী প্রভাবে অভ্যন্তরীন ক্ষেত্রে চূড়ান্ত বিরোধিতার সম্মুখীন হবে দেহের  রাজা প্রাণবায়ুর । শরীরের  অভ্যন্তরে তীব্র কর্ম হীনতার  সমস্যা দেখা দেবে আর তার প্রতিক্রিয়ায় দেহের রাজা প্রাণকে    বাধ্য হয়ে  তাকে  দেহ নামক দেশ  ছেড়ে  অন্যত্র চলে যেতে হবে। বাস্তবে তাইই হয়, কেননা দেহের অভ্যন্তরীন জগতে অতন্দ্র প্রহরীরা বিদ্রোহ করলে বা পরাজিত হলে  তো প্রাণবায়ু   দেহ ছেড়ে পালিয়ে যায়। আবার পরিমিত আহার যেমন শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায...

আমি মহাভারতের পৃথা : ষষ্ঠ পর্ব

ছবি
আমি মহাভারতের পৃথা : ষষ্ঠ পর্ব।  লবনের আস্বাদ  যেমন রান্নার রসনাকে বাড়িয়ে  তোলে, ঠিক তেমনি সাহিত্যের আদিরস পাঠককে  কাহিনীর  প্রতি তার আকর্ষণকে  বাড়িয়ে তোলে। পাঠকের সেই    আকাঙ্খাকে  মাথায় রেখে লেখনীও তার চরিত্র নির্মাণের ও গল্পের  বিন্যাসে তাকে মোহময় করে তোলে। সেই সাহিত্য এককালীন পাঠক পায় বটে কিন্তু সাহিত্য তার  দীর্ঘ জীবন পায়না।    সমাজে যখন কোন  নারী চরিত্রের বিশুদ্ধতার প্রশ্ন যখন  উত্থাপিত হয়, তখন পুরুষশাসিত সমাজের কর্তারা যারপরনাই  মুখরিত  হয়ে উঠেন। কেননা, তাদের কৃতকর্ম থেকে  সমাজের দৃষ্টিকে আড়াল করার ক্ষেত্রে সেটাই হয়ে উঠে  সবথেকে উৎকৃষ্ট উপাদান।  যৌনতাকে বাদ দিয়ে যে চরিত্রকে  যে আকর্ষণীয় করা যায়, এই অনন্য কৃতিত্বের অধিকারী মহাভারতের কবি ব্যাসদেব।  পাঠকের রসনা তৃপ্ত হয় সাহিত্য রচনার গুনে। ক্লাসিক সাহিত্যের সংজ্ঞা নিয়ে বিতর্কের অন্ত নেই। তাই বিতর্কের উর্ধে উঠে  বলা যেতে পারে, যে সাহিত্য...

আমি মহাভারতের পৃথা - পঞ্চম পর্ব

ছবি
  আমি মহাভারতের পৃথা - পঞ্চম  পর্ব    অবশেষে হস্তিনাপুরের রাজপ্রাসাদকে   শেষবারের মতো   বিদায় জানিয়ে  দুই রানী পৃথা এবং মাদ্রীসহ  পান্ডুর  অরণ্য যাত্রা শুরু হোল । ধীরে ধীরে লোকালয় অতিক্রম করে নির্জন গহন অরণ্যে  পৃথারা ক্রমেই এগিয়ে যেতে লাগলো। পুরজনের কোলাহল কখন যেন থেমে গিয়ে থম থমে এক নিস্তব্ধতার পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। বসন্তের বাতাসে   পৃথাদের পাদস্পর্শে  অরণ্যের  লতানো গাছগুলি  একে অপরের গায়ে হেলে পড়ে যেন তাদের অতিথি আগমনের প্রতি সম্ভাষণ জানাচ্ছে  ,   পাখীর  কলধ্বনি  যেন  দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসানে  তাদের পরম আত্মীয়রা নিজ গৃহে  ফেরার আনন্দে তাদের উচ্ছাস ধরে রাখতে পারছে না।   আবার মাঝে মাঝে বনের প্রাণীরা  যতদূর তাদের আওয়াজ যায় ঠিক ততদূর পর্যন্ত  বিভিন্ন সাংকেতিক শব্দে পৃথাদের   অস্তিত্বের  সংবাদ প্রেরণ করছে।  পৃথাদের গন্তব্যস্থল সেই বহুদূরে শ্বাপদ সংকুল পথ অতিক্রম করে শতশৃঙ্গ...

আমি মহাভারতের পৃথা - চতুর্থ পর্ব

ছবি
    আমি  মহাভারতের পৃথা - চতুর্থ পর্ব   কল্পনার সাথে বাস্তবের চিরন্তন সংঘাত :   যে সুখ থেকে জীবনের শুরু থেকে পৃথা বঞ্চিত ছিলেন, আশা করেছিলেন শ্বশুরবাড়িতে তা পুষিয়ে নেবেন। বাস্তব ভীষণ নিষ্ঠূর, তার পরিবর্তে তাকে এক নতুন বধ্যভূমিতে নিয়ে এসে দাঁড় করাল। এক্ষেত্রে তার রূপ যৌবন আর ব্যক্তিত্ব তার জীবনে এগিয়ে যাবার পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াল। পান্ডুর মতো বাস্তব জীবনের অনভিজ্ঞ ছাত্র  স্বভাবতই জীবন যুদ্ধের পোড় খাওয়া পৃথার বংশবদ হবে তা আর নতুন কি। তার পরিনাম হিসাবে বিবাহের গন্ধ যেতে না যেতে শ্বশুরমশাই সতীন নিয়ে এসে পৃথার একাধিপত্য হরণ করার চেষ্টা করলেন।  পরিবারই  রাজনীতির আঁতুরঘর :  পরিবার রাজনীতির প্রথম রঙ্গমঞ্চ। নব বধূর আচার আচরণকে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরায় প্রতিটি গতিবিধি মনের ফ্রেমে বন্দী করে রিভিউ করে বিশ্লেষণ করে পরিবারের অন্যান্য মাতব্বর সদস্যরা।  যারা ছায়ার সাথে যুদ্ধ করে কখন কাকে শত্রু বানিয়ে ফেলে তা আগে  থেকে বোঝা কখনই সম্ভব হয়ে উঠেনা। কোন কোন ক্ষেত্রে অপরাধীই জানেনা তার অপরাধটা কোথায় ; অথচ তার মৃত্যু দণ্ডের...

আমি মহাভারতের পৃথা - তৃতীয় পর্ব

ছবি
আমি মহাভারতের পৃথা - তৃতীয় পর্ব  কুদরত যখন শিশু হস্তান্তরের মাপকাঠি হয়ে যায় : যখন কোন  পিতা তার কন্যাকে  বিক্রি করে তার পশ্চাতে থাকে অভাব। সেই অভাবজনিত কারন বহুবিধ হতে পারে।  এখানে শূরসেনের অভাব ছিল কংসের বিরুদ্ধে নিজ রাজ্যের শক্তি বৃদ্ধি করার জন্য অপর রাজ্যের  সাথে মিত্রতা বৃদ্ধি, বুদ্ধিমান রাজা জানতেন সন্তান কামনায় রাজা কুন্তিভোজের  কাতরতা । তার সেই দুর্বলতাকে নিজের রাজনৈতিক চরিত্র সিদ্ধি করতে গিয়ে  তিনি  কুন্তিভোজকে নিজ সন্তান দান করে এক দীর্ঘ মেয়াদি পারস্পরিক বোঝাপড়ার বন্দোবস্ত করলেন। এখানে পৃথার সাথে ওই নিঃসম্বল পিতামাতার শিশুর সাথে কোন তফাৎ নেই।  পৃথার কাছে পিতার অর্থ   :  পৃথার কাছে চিরাচরিত  'পিতা'  নামটি    একটি শব্দবন্ধ মাত্র। তার স্বাদ, গন্ধ থেকে তিনি আজীবন বঞ্চিত ছিলেন। এই নামটি পিতৃগৃহে এবং পালকপিতার গৃহেও   তার জীবনে নতুন কোন অর্থ বহন  করে আসেনি।  পর কখনও  আপন হয়না :  যে প্রবল পরাক্রান্ত ঋষি দুর্বাসার আপ্যায়নে রাজদুহিতা পৃথাকে কুন্তিভো...

আমি মহাভারতের পৃথা - দ্বিতীয় পর্ব

ছবি
  আমি  মহাভারতের পৃথা - দ্বিতীয় পর্ব  দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে দিগন্তের রবির কিরণ   কুরুক্ষেত্রের প্রান্তরে     নব  প্রভাতের সূচনা করল । গত কাল যারা অতিথির  (অগ্নির আরেক নাম)  হাত ধরে স্বর্গের যাত্রা পথে অপেক্ষামান অবস্থায় ছিলেন,  আজ তাদের নিয়ে  যাত্রার প্রবন্ধ  রচনাতে মহাকাল দন্ডায়মান। স্বজনহারা এই মহাশশ্মানে প্রিয়জনদের শেষ যাত্রার সাক্ষী হিসাবে  পৃথা আজ ও উপস্থিত হয়েছেন সেই ধর্মক্ষেত্র কুরুক্ষেত্রে।  বর্তমান জানতে  চাইলো  অতীতের কাছে  থেকে  এই পরিণতির জন্য উত্তরদায়িনী কে ?   একে একে অতীত থেকে পাতাগুলি ভীষণ অবিনস্ত ভাবে নাড়া দিতে  লাগলো পৃথার ভাবনার অলিন্দে।  তার      কোনটি      যেমন জীবনের      খোলা চিঠি ,  কোনটি  আবার    আবরণে যত্নে ঢেকে রাখা। মহাভারতের রূপকার কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন ব্যাসদেব   পৃথার জীবন থেকে যা কিছু সংগ্রহ করেছেন সেটাই তিনি মহাকাব্যের পাতায়...

আমি মহাভারতের পৃথা --প্রথম পর্ব

ছবি
আমি  মহাভারতের পৃথা -প্রথম পর্ব     -   আগুনের প্রজ্জ্বলিত লেলিহান শিখা লক্ষ্যের চূড়ান্ত শিখরে পৌছিয়ে তার ধীরে ধীরে তার সব জৌলুশ  হারিয়ে  ফেলে নিকষ কালো ধোয়া হয়ে উড়ে গিয়ে সেই মহাকাশের বিশাল বক্ষে আশ্রয় গ্রহণ করে আর শুধু এই  পৃথিবীর মানুষদের জন্য রেখে যায়  প্রিয়জনের অস্তিত্বের অস্তিত্ব হারানোর  একরাশ স্মৃতির বোঝা।   অস্তিত্ব সম্পর্কে ধারণা হারানোটাই হচ্ছে মৃত্যু। অস্তিত্ব না থাকলে যেটা  থেকে  যায় সেটাই  হচ্ছে স্মৃতি । অগ্নি এই কাজটি নিরলসভাবে করে যাবে যতক্ষণ না শেষ নিস্প্রান দেহটা  কুরুক্ষেত্রের  মাটি থেকে মুছে না যায় ।  সবে শেষ হল  দীর্ঘ আঠারো দিনের রক্তক্ষয়ী মহা যুদ্ধের। কুরুক্ষেত্রের এই মাটিতে মৃত্যু সবাইকে এক করে দিয়েছে।  আজ তারা কেউ রথী নয় , কেউ  তাদের  মহারথী বলেও  সম্বোধন করবেনা, সৈনিককেও  কোনদিন অস্ত্র নিক্ষেপ করতে হবেনা , আর বাহনদের বইতে হবে না তাদের ইহকালের বোঝা, মৃত্যু এসে তাদের ...

নারদের মর্ত্যে ভ্রমণের পাক্ষিক বিশ্লেষেণ - তৃতীয় সংখ্যা Fortnight Analysis - Indian Education System (3rd part)

ছবি
   নারদের মর্ত্যে ভ্রমণের পাক্ষিক বিশ্লেষেণ  - তৃতীয় সংখ্যা  Fortnight Analysis -   Indian Education System (3rd part)   নারদ  - স্বরলিপি যেমন অবিনস্ত  সুরগুলিকে আস্টেপিস্টে বেঁধে মধুর গানে রূপান্তরিত করে ঠিক তেমনি লক্ষ্য পূরণের   ক্ষেত্রে  এই ছয় ধরনের টুপি পরা চিন্তন পদ্ধতি হচ্ছে    স্বরলিপির ব্যাকরণ ,  তার  ঐকতান হচ্ছে সংগীত রূপ সিদ্ধান্ত।  টীম অর্থাৎ নির্দ্দিষ্ট আদর্শের ভিত্তিতে লক্ষ্য পূরণের উদ্দেশ্যে সমবেত একটি গোষ্ঠী। কিভাবে ঐক্যমতের ভিত্তিতে সমস্যার সমাধানের জন্য বহুমতের  ধারণা থেকে ক্রমানুসারে  এক  অভিন্ন  দৃষ্টিভঙ্গিতে রূপান্তরিত করতে হয়  এবং সেই ধারণাকে   সিক্স থিংকিং   হ্যাট   "   পদ্ধতিই একমাত্র  বাস্তবায়িত করতে পারে।  (এডওয়ার্ড ডি বোনো'র বিখ্যাত  বই থেকে উদ্ধৃত করে তিনি বলতে শুরু করলেন।)  রঙের ভিন্নতা  নির্দেশ করে স্বতন্ত্রতার ঠিক তেমনি  নির্দ্দিষ্ট রঙের টু...