পোস্টগুলি

ডিসেম্বর, ২০২১ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

মহাভারতের যাজ্ঞসেনী- ২৩তম অধ্যায় || (৮৬)

ছবি
  মহাভারতের যাজ্ঞসেনী- ২৩তম  অধ্যায়  ||     (৮৬)    "  জয় "  পরিমার্জন হয়ে মানবিক মূল্যবোধের অন্তর্ভুক্তিতে নতুন নাম "  ভরত  " নামে পরিচিতি হলো  এবং জনশিক্ষার আদর্শ গ্রন্থ হিসাবে প্রতিষ্ঠা পেলো । পরবর্তী সময়ে " মহাভারত  "নিজেকে  ধর্মশাস্ত্র, অর্থশাস্ত্র এবং মোক্ষশাস্ত্র  হিসাবে বর্ণনা করছেন কিন্তু কখন নিজেকে মহাকাব্য আখ্যা দেয় নি। "ভরত "নামাঙ্কনের পর ভৃগুবংশীয় ব্রাহ্মণদের কিছু নৈতিক আদর্শ   মূলপর্বের সাথে যুক্ত হয়ে নব কলেবরে বিস্তার লাভ করে গোটা কাব্য গ্রন্থটি  "মহাভারত"  নামে পরিচিত হয়। --------------২২তম অধ্যায়ের পর-----  ধন্য হিন্দুদের  শাস্ত্র  নারী পুরুষের অধিকারকে বন্টন করতে গিয়ে পুরুষ শাসিত সমাজ যৎসামান্য অধিকার নারীদের দিয়ে বাদবাকি সবই তুলে রেখেছিল পুরুষদের জন্য। সেখানে আছে পুরুষের অসীম কতৃত্ব  আর নারী জীবনকে পূর্ণ মাত্রায় আসক্তি মিটাবার নিরবিচ্ছিন্ন অধিকার।  যখন প্রশ্ন উঠেছে যদি সম্পত্তি বা অর্থ এবং স্ত্রী এই দুইয়ের মধ্যে কোনটা বি...

মহাভারতের যাজ্ঞসেনী- ২২তম অধ্যায় || (৮৫)

ছবি
     মহাভারতের যাজ্ঞসেনী- ২২তম  অধ্যায়  ||     (৮৫)    সাহিত্যের সাথে বিজ্ঞান, দর্শন, গণিত ইত্যাদির একটা সুনির্দ্দিষ্ট চারণভূমি আছে। যে যার স্বীয় পরিমন্ডলে বিরাজমান। সুতরাং, সাহিত্যকে নির্মাণধর্মী বিষয়ের দৃষ্টিভঙ্গী থেকে বিশ্লেষণ করলে পাঠক   সাহিত্যের প্রতি সুবিচার করতে পারবেন কি ? এই প্রশ্নটা বার বার মহাভারতে ঘুরে ফিরে আসবে ...........   একবিংশ অধ্যায়ের পর ---- মানব হৃদয়েই যদি সাহিত্যের জন্ম হয়, তাহলে হৃদয়ে তার সংবাদ পৌঁছাল কি করে। অবশ্যিই তাতে ইন্দ্রিয়ের হাত আছে।  আবার যদি প্রশ্ন করা হয়, ইন্দ্রিয় কোন খান থেকে খবর সংগ্রহ করলো, এর উত্তর একমাত্র হতে পারে বাস্তবের পটভুমি থেকে। বাহ্য প্রকৃতির সেই আহ্বান বা সুর যখন অনুরণিত হলো কবির অন্তঃপ্রকৃতিতে, সেই সুরের মূর্ছনা কবির সৃষ্টিতে মুখরিত হয়ে উঠলো সাহিত্যাকারে।  মহাভারতের কবি সেই সময়ের আবেদনে, পাঠকের  অলৌকিকতার প্রতি  অতিৎসাহেকে   সম্মান প্রর্দশনের এতটুকু কার্পণ্য না করে উদার হস্তে মহাভারতের যাজ্ঞসেনীকে উপস্থাপন করেছেন অতিরিক্ত রূপক সহযোগে।...
ছবি
মহাভারতের যাজ্ঞসেনী- একবিংশ   অধ্যায়  ||     (৮৪)    যদি সমস্যাই না থাকতো তাহলে সমস্যা থেকে মুক্তির জন্য পরবর্তী সময়ে মুনি ঋষিরা মানবজাতির মঙ্গলের জন্য এত বিশাল তত্ত্ব   ভান্ডার তৈরি করার মানসিক তাগিদ অনুভব করতেন না। বরং এর উল্টোটাই বলা যেতে পারে, যে নিশ্চয়ই সমাজে এক জ্বলন্ত সমস্যা ছিল এবং এখন আছে যার নাগাল এখন মানুষ বুঝে উঠে সমাধানের রাস্তা পাবার প্রচেষ্টাটা, অনন্ত সময় ধরে  হেজে যাওয়া পুকুরের শেওলায় আটকে পড়ে আছে----- পূর্ব অধ্যায়ের পর। ...... মহাভারতের পাতায় যাজ্ঞসেনীকে খুঁজতে গিয়ে বর্তমানের পটভূমিকায় সেই চরিত্রটির  গুরত্ব কতখানি তাঁর সমর্থন যোগ্য বিবরণের একান্ত প্রয়োজন। সেখানে আছে ইতিহাস, সাহিত্য, পুরান, দুইদুটি মহাকাব্য, প্রত্নতাত্ত্বিক ও নৃতাত্ত্বিক গবেষণা, শিলালিপি এবং বৌদ্ধ সাহিত্যে।   "খ্যাপা খুঁজে ফেরে পরশপাথর "- ঠিক তেমনি সাহিত্যে বিষয় খুঁজে নিয়ে এসে তাকে কাটাছেড়া করা পাঠকের জন্মগত অধিকার।সাহিত্যে ব্যাকরণ (syntax বা master ফাইল বা ড্রয়িং) থাকলে তবেই তো তার নির্মাণ পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা চালানো...

মহাভারতের যাজ্ঞসেনী- বিশতম অধ্যায় || (৮৩)

ছবি
  মহাভারতের যাজ্ঞসেনী- বিশতম  অধ্যায়  ||     (৮৩)    "কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের অন্যতম প্রেরণাদাত্রী যাজ্ঞসেনীর অসাধারনত্বকে বোঝাতে গিয়ে, জন্মের শুরুতেই অভিনবত্ব এনে দিয়েছিলেন। শুধু তাই নয় সে যুগে যজ্ঞের আগুনের  বেদী থেকে বেরিয়ে আসা  অগ্নিকন্যা  যাজ্ঞসেনীর সেই  অগ্নিকন্যা  শব্দটি আজ নারীজাতির অসাধারণত্ব বোঝাবার প্রতিশব্দ হয়ে মানুষের মনের শব্দকোষে স্থায়ী জায়গা করে নিয়েছে"- পূর্বের অধ্যায়ের পর। .....   মহাভারতের সমাজ : সেই যুগে সমাজ মেনে নিয়েছিল পুরুষদের বহুবিবাহ। আবার সমাজ অভিযোগ করেনি, যখন  কোন  সদ্য বিধবাকে মাঝরাতে ঘুম থেকে তুলে তার দেবর মধুর সম্ভাষনে সেই  নারীকে  নবজীবনের আশ্বাস শুনিয়ে নিজের সুপ্ত ইচ্ছা পূরণ করতো। সীমাহীন আগ্রহ ছিল সে যুগে পুরুষদের পর নারীর প্রতি এবং তাকে পূর্নতা দেবার যাবতীয় প্রচেষ্টা চালাতো। এই সব ঘটনার বিবরণ আছেরে পড়েছিল ঋগ্বেদে বহু উপমার ব্যবহারে।  সেদিনের সাহিত্যের কাছে মানুষ ঋণী, কেননা তার তৎকালীন সমাজে শ্ৰেণী বিভাজন এবং বর্ণ বৈষম্যে যে ছিল, সেই কথা তুলে ধরেছিলেন...

মহাভারতের যাজ্ঞসেনী- উনিশতম অধ্যায় || (৮২)

ছবি
  মহাভারতের যাজ্ঞসেনী- উনিশতম  অধ্যায়  ||     (৮২)  "অধিকাংশ সাধারণ মানুষ জন্মগত ভাবেই শান্তিপ্রিয়। সেটা কালও ছিল আজও আছে। সেটা তাদের অপরাধ কিনা জানা যায়নি কিন্তু তার জন্য প্রয়োজনীয় খেসারতকে তারা উচ্চমূল্যে কিনে যাচ্ছে , সেই ট্রাডিশন সমানে চলছে"- গত সংখ্যার পর। .................   ঋগ্বেদ শুধু মন্ত্র, স্তব ইত্যাদির মধ্যে নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখেনি, সেখানে ছিল সাধারণ মানুষের আশা আকাঙ্খার কথা লিপিবদ্ধ করে সাহিত্যের প্রাসঙ্গিকতাকে  অনেকখানি বাড়িয়ে দিয়েছিল। যেই মঞ্চ থেকে এই সামাজিক কল্যাণের মন্ত্র উচ্চারিত হতো তা ছিল সাধারণ মানুষের বিশ্বাসের কেন্দ্রবিন্দু, সেটি হলো যজ্ঞ, বলা বাহুল্য অগ্নি ব্যতিরেকে সব যজ্ঞই অসুম্পূর্ন।  সাধারণ মানুষ সেদিন বিশ্বাস করতো এই দৃশ্যমান জগৎ যজ্ঞের মাধ্যমেই সৃষ্টি হয়েছে।  একধারে অগ্নির বহুমুখী কার্যকলাপ  ও অলৌকিকতার প্রতি অন্ধ বিশ্বাস    এবং যজ্ঞের প্রতি সাধারণ মানুষের প্রগাঢ় নির্ভরতা, এই সবের মেলবন্ধনের প্রভাব সাহিত্যে বিশেষভাবে পরিলক্ষিত হয়। মহাভারতের কবির সামনে যাজ্ঞসেনীকে মহাভারতের ...

মহাভারতের যাজ্ঞসেনী-অষ্টদশ অধ্যায় || (৮১)

ছবি
  মহাভারতের যাজ্ঞসেনী-অষ্টদশ  অধ্যায়  ||     (৮১) একটি বাক্য মহাভারতে উল্লিখিত হয়েছে যে, "যজ্ঞের বেদীর  আগুন থেকে যাজ্ঞসেনীর আবির্ভাব" - সেই বাক্যের ব্যাখ্যার লক্ষ্যে আমাদের পরিক্রমা শুরু। এই  অনুসরণ চলতে থাকবে যতক্ষন পর্য্যন্ত তার যথাযথ উত্তর না মিলবে, আমাদের যাত্রা বন্ধ হবেনা। হয়ত পাঠকদের একঘেয়েমি আসতে পারে, সেখানে আমরা দুঃখিত। বর্তমানে আমরা আছি এবং কিছুদিন  থাকতে হবে ঋগ্বেদের যুগের সামাজিক ধ্যান ধারণার মধ্যে তার  উত্তর খোঁজার মধ্যে, যেমন, বাক্যটি যথার্থ রূপক কিনা, আর যদি রূপক হয় তাহলে তৎকালীন পাঠক অলৌকিকতাকে কত খানি বিশ্বাস করে আনন্দ উপভোগ করত। সাহিত্যেরসের দৃষ্টিকোণ থেকে পন্ডিতদের বিশ্লেষণ ইত্যাদি।  সাধারণ মানুষ জানতো যে কিভাবে প্রশংসা করলে একটি দেবতাকে তুষ্ট করা যায়। মাত্রাহীন প্রশংসায় আপলুত দেবতাটি মনে মনে ভীষণ দুর্বল এবং আবেগতাড়িত হয়ে সেই অসহায় ভীরু মানুষগুলির জন্য যারপরনাই মঙ্গল কামনায় ব্যস্ত হয়ে পড়তেন। তার সাথে  সশরীরে উপস্থিত হলে তো কথাই নেই।  সঙ্গে সঙ্গে অপরিমিত মদ্যপানের আতিশয্যে ...

মহাভারতের যাজ্ঞসেনী-সপ্তদশ অধ্যায় || (৮০)

ছবি
  মহাভারতের যাজ্ঞসেনী-সপ্তদশ অধ্যায়  ||     (৮০) সমাজে সম্পর্কের বুনিয়াদ যেখানে বিনিময় মূল্যে নির্ধারিত হয় , সেখানে যারা উপকৃত হবেন তারা তো উপকারীদের প্রশংসায় ভরিয়ে দেবে, এতে আশ্চর্য্যের কিছু নেই.... ষষ্ঠদশ অধ্যায়ের পর। ................................ ভারতীয় সমাজে আমরা যে নীতিবোধ বা ধর্মের কথা পরবর্তী সাহিত্যে শুনে থাকি , সেটা কিন্তু সেই যুগের   সাহিত্যে খুঁজে পাওয়া যায় নি । একথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, মন প্রস্তুত না থাকলে ধর্মের জায়গা হয়না। একদিকে মনে বসে আছে  নিজেদের  অস্তিত্ব রক্ষা করার প্রশ্ন (এখানে "প্রশ্ন" শব্দটা মনে হয় সঠিক কেননা   "প্রস্তুতি " শব্দটা  ইঙ্গিত করে একটি জানা বিষয়কে , অজানা আকস্মিক পরিবেশের প্রস্তুতি শুধু মাত্র আতঙ্ক হতে পারে )    আর  অন্যদিকে মনের অধিকাংশ জায়গা জুড়ে আছে ভয়। ধর্মকে জায়গা দেবার মতো কোন খালি জায়গা নেই। (  যেমন, আজকের ধনতান্ত্রিক সমাজ ও তাবেদার সরকারগুলি  জনজীবনে  এমন আর্থিক অনটন এক প্রকার জোর করে ঢুকিয়ে দিয়েছে যে, সা...

মহাভারতের যাজ্ঞসেনী-ষষ্ঠদশ অধ্যায় || (৭৯)

ছবি
  মহাভারতের যাজ্ঞসেনী-ষষ্ঠদশ অধ্যায়  ||    (৭৯) গত সংখ্যায় যা ছিল - বাস্তব ক্ষেত্রে বেদ সমাজে মানুষের  দৈনিন্দন জীবনের  মধ্যে ঢুকে প্রচলিত নিয়মকানুনকে সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন আচার আচরণের অভ্যাসের মধ্যে দিয়ে মানুষের মনকে  পবিত্র করার চেষ্টা করেছিল। সেই পদ্ধতি আজও প্রাসঙ্গিক। কিন্তু কোন যজ্ঞ মানুষ নিজ মোহ বা কামনা বাসনা থেকে মুক্তির জন্য করেছে  কিনা জানা নেই। যজ্ঞগুলিতে  আছে শুধু একগুচ্ছ কামনা আর বাসনার  চাহিদা পূরণের ছকবাঁধা রীতি নীতি। আবার এই সবের মধ্যে দিয়ে ঋষিরা মানুষের প্রকৃত জ্ঞান অর্জনের জন্য মানসিক গঠন করার লক্ষ্যেই  যজ্ঞ ও অন্যান্য নিয়ম রীতির প্রবর্তন করেছিলেন । বেদ, রামায়ণ, পুরান এবং মহাভারত ভারতবর্ষের প্রাচীন সাহিত্যের অন্তর্গত। তৎকালীন সামাজিক পরিস্থিতি ও সামাজিক জীবনকে বাদ দিয়ে আলোচনা করতে গেলে গোটা আলোচনাটাই অর্থশূন্য  এবং এক অসুম্পূর্ন আলোচনা বলে মনে হবে। বাস্তবে সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে  ভীষণভাগে প্রতিফলিত হয় সমসাময়িক সমাজব্যবস্থার উপর।  কোন রচনাটি কখন লেখা হয়েছি...