পোস্টগুলি

ডিসেম্বর, ২০২৩ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

(১৮৯) অন্ধকারের দিনগুলি

ছবি
  (১৮৯)  অন্ধকারের দিনগুলি  অন্ধকারটা  ঘন অন্ধকারময়     বর্ষার গভীর রাতে যখন নিশাচর  প্রাণীছাড়া আর সবাই গভীর নিদ্রায় আছন্ন। পরিপূর্ন পুকুরে জলজ প্রাণীরা  বর্ষার  বন্দনায় রাতের নীরবতাকে ভেঙ্গে  তাদের অতি পরিচিত ঘ্যাঙর ঘ্যান শব্দে আকাশ বাতাস মুখরিত করতো।  আর ঠিক  সেই সময়ে ব্রাহ্মণরা বৈদিক মন্ত্র আর তাদের অতিপ্রিয় সোমকে যজ্ঞে  উৎসর্গ করে মহাবিশ্বের কল্যাণ কামনায় স্বর্গীয় সত্তাকে আত্মিকভাবে   সেদিন আহবান জানাতো ।   কখনও  অন্ধকারের উৎস থেকে উৎসারিত আলো থেকে  আনন্দের রসদ  আবার তার নিষ্ঠুর স্নেহের মূর্ছনায় কাতর প্রাণ-  এই ছিল সেদিনের নিসর্গের কাছ থেকে মানুষের পাওনা।  কতনা ভালো-মন্দের মিশ্র অনুভূতি - আকাশ, রাতের তারা, চন্দ্র, সুগভীর রাত্রি, সূর্য, ঊষাকাল, ঝড়-বৃষ্টিকে  ইত্যাদিকে নিয়ে  কতনা  শিশুর মতো বিস্ময়,  প্রশ্ন অনেক ছিল কিন্তু সেসবের সব  উত্তর সেদিন মিলতো না।     একটুকরো জমিন আর তাকে ঘিরে বন জঙ্গল ও  জলে ঘেরা গ্রাম, সেখানেই ঋগ্বেদের ...

(১৮৮) কর্তাবাবু আর পাঁচটা ভূতের গল্প

ছবি
 (১৮৮)   কর্তাবাবু আর  পাঁচটা ভূতের গল্প   অনুষ্ঠান বাড়িতে অতিথি আপ্পায়ন করতে গিয়ে বাড়ির কর্তা দেখলেন আয়োজনের জন্য বহু উপকরণ সংগ্রহ করতে হবে।  এই ভাবনা থেকে কর্তামশাই  কি কি  সামগ্রীর  প্রয়োজন পড়বে তার একটা ফিরিস্তি তৈরী করতে বসলেন।  বর্তমানে শুধু থাকার মধ্যে মাথার উপর একটা বিরাট আকাশ রয়েছে। কর্তাবাবু  আকাশের কাছে তার মহৎ ইচ্ছার কথাটা পারলেন। আকাশ এই কথা শুনে ভীষণ চিন্তায় পড়ে গেলেন, অথচ তিনি কর্তামশাইকে কথা দিয়ে দিয়েছেন। চিন্তান্বিত আকাশকে দেখে কর্তাবাবু বললেন- - ভায়া এত চিন্তা করছো কেন ; - আকাশ বলল এ ধরনের কাজতো আমি পূর্বে করিনি।  - তোমার ভাণ্ডারে কি কি আছে, তা তো আমি জানিনা, কারণ সেগুলি এমনিই  সুক্ষ যে চোখে দেখা যায় না, সবাইকে তোমার মতোই মনে হয়।  তবে এক কাজ কর, যা আছে সেগুলিকে  একত্রিত কর। -  এই বলে কর্তাবাবু ইতস্ততঃ  পায়চারি করতে লাগলেন।  হঠাৎ, আকাশের উল্লাস শুনে, দৌড়ে গিয়ে  যা দেখলেন, তা দেখে কর্তাবাবুর চক্ষু চড়কগাছ।  আকাশের মধ্যে লুকিয়ে থাকা সম্পদগুলি একত্রিত হয়ে  এতবড় একটা শক্ত...

(১৮৭) প্রবচনের গল্প হলেও সত্যি

ছবি
 (১৮৭) প্রবচনের গল্প হলেও সত্যি      ইতিহাস রচনার পক্ষপাতিত্ব।   প্রত্নতাত্ত্বিক খননের ফলে যে সব দ্রব্য উদ্ধার করা হয়, তার থেকে যে ঘটনাকে উপস্থাপন করা হয়, তা অনুমান সাপেক্ষ বলে অনেকেই মনে করেন। ধরা যাক, মহেঞ্জাদারোর সভ্যতা আর্য্য না অনার্যদের সভ্যতা তাকে নিয়ে বহু বিতর্কের পর  অনার্যদের সভ্যতা বলে মেনে নেওয়া হয়েছে। 

(১৮৬) অমৃতের সন্ধানে

ছবি
(১৮৬) অমৃতের  সন্ধানে  পূর্ববর্তী পর্ব    (১৮৫) পুরাণের গতিশীলতার পর           আজকের মতো দিনটা শেষ হওয়ার সাথে সাথে আগামী দিনের অনিশ্চয়তার মেঘটা মনের আকাশটাকে প্রতিদিনের মতো সুখ-শান্তিকে আড়াল করে রাখে।  আশা ভরসার ক্ষীণ আলো যদিবা সেই মেঘকে ভেদ করে বর্ষিত হয়, তাতে করে আর যাই হোক শান্তির বাতাবরণ  খুঁজে পায় না।  কিন্তু অবিরাম এই অন্বেষণ জারি থাকে আর দিনের শেষে খালি হাতে ফিরতে হয়। মনটাকে নিয়ে বড়ই বিড়ম্বনা। তাই চিন্তা যে দু-দণ্ড  শান্তির সাথে আনন্দঘন  আলাপ করবে তার কোন যো নেই।           নিত্য দিন এই অভ্যাসে অভ্যস্ত পথিকের অনুসন্ধান থেমে নেই।  পথের দিশা না পেয়ে  ক্লান্ত পথিক ধর্মের দরজায় গিয়ে ধীরে ধীরে করা নাড়ে। দরজার দ্বার উন্মুক্ত হয়।  একদল তথাকথিত পেশাদার ধর্মগুরু ও তাদের নিচে থাকা মহুরীর দল ব্যাতিক্রমী পোশাকে আবির্ভূত হয়ে সব ধরনের সমাধানের উপকরণগুলিকে একটি  ডালায় সাজিয়ে এমনভাবে আহবান জানাচ্ছে, যেন তারা  দীর্ঘ সময় ধরে তারই  জন্যই অপেক্ষা করছিলো। এর ...

(১৮৫) পুরাণের গতিশীলতা

ছবি
(১৮৫) পুরাণের গতিশীলতা  আজ যখন অন্ন ধর্মের সমার্থক হয়ে রাষ্ট্রীয় বাতাবরণকে কৃত্তিম আলোর রোশনাই জ্বালিয়ে বিভ্রান্তির  সৃষ্টি করছে, তখন আরো বেশি করে ইতিহাস থেকে সত্যকে উদ্ধার করার প্রচেষ্টা চালাতে হবে।   যুক্তিবাদী দৃষ্টিভঙ্গি থেকে চুলচেরা বিশ্লেষণ করা আজ ভীষণ প্রয়োজন। প্রাচীন কাল থেকে ভারতবর্ষের ভিত্তি প্রস্তরটা স্থাপিত হয়েছিল ধর্মের উপর। সেই পরম্পরার আজও কোনো ব্যতিক্রম হয়নি।  পুরাণের স্থায়িত্ব এই বিশ্বাসকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে বলে, আজও তার প্রতি অধিকাংশ  মানুষের বিশ্বাস অমলিন।    পূর্ববর্তী ব্লগ ( ১৮৪)    অমরত্বের ব্যঞ্জনার পর ০০০০০০    দর্শন করার সাথে দর্শনের সংযোগ  যা কিছু শিল্প, সাহিত্যকলার মূল সৃষ্টিটা আবর্তিত হয় প্রকৃতিকে কেন্দ্র করে।  সেই প্রকৃতিকে কে কিভাবে দেখেছিল এবং তাতে করে মনের ভাবনার সাথে  চাক্ষুস উপলদ্ধির মিশ্রনের উপস্থাপনাটা দর্শক দেখে থাকে।    ভারতীয় পৌরাণিকরা মূলতঃ দার্শনিক পরে ইতিবৃত্তকার।  তাই ঋষিরা কখনই নিজেদেরকে  দার্শনিকতার প্রভাব থেকে মুক্ত করে পুরাণটা  লেখেন নি। আ...

(১৮৪) অমরত্বের ব্যঞ্জনা

ছবি
( ১৮৪)   অমরত্বের ব্যঞ্জনা  খুব সংক্ষেপে পূর্ববর্তী ব্লগ  "গ্রিনরুমের অন্দরে"র পর -----    শিবের বহুমুখী প্রতিভার অল্পবিস্তর  আভাস দেওয়া হয়েছে।  আগামী দিনে তার সৃষ্টির বদান্যতায় স্বর্গ, মর্ত ও পাতালবাসীরা মুক্ত হবে দানবের হাত থেকে।  এতবড় একটা কর্মকান্ডের জন্য একটু তো দীর্ঘসূত্রতা হবেই। ।  এই কাহিনীর পিতৃত্বের দাবিদার পুরাণ। যদিও এই পুরাণকে সংকীর্ণ অর্থে  "মাইথোলজি " আখ্যা দিয়ে  ইংরেজ ঐতিহাসিকরা ভারতীয় পুরাণের মাহাত্মকে ক্ষুন্ন করতে উদ্যোগী। পুরাণের  অন্দরমহলে না প্রবেশ করলে সাহেবদের মতো আমাদেরও মনে হবে কি এক গাঁজাখুরি গল্প। তাই পুরাণের  হাত ধরে পুরাণে  ফিরে  যাওয়াটাই পুরাণের প্রতি সুবিচার হবে।  কর্ম দিয়ে যখন ভবি ভোলেনা ,  তখন তাকে ধর্ম দিয়ে ভোলাও ।। পুরাণের  সত্যতার যাচাইয়ের প্রক্রিয়া   একসনয়ে ভারতবর্ষ ছিল বহু ছোট ছোট রাজ্যে বিভক্ত। প্রত্যেক রাজাদের সভায়  মাগধ নামে  একজন ইতিবৃত্তকার থাকতেন, তাদের কাজই ছিল রাজাদের বংশ পরিচয় থেকে শুরু করে তাদের কীর্তিকলাপকে সংরক্ষিত করে রাখা।...

(১৮৩) গ্রিনরুমের অন্দরে

ছবি
  (১৮৩)  গ্রিনরুমের অন্দরে  সংক্ষেপে আগের সংখ্যা "গুনগুনানী"র  পর - তারকাসুরের দাপটে ত্রিলোক থর থর করে কাঁপছে। ইন্দ্রের নেতৃত্বে দেবতারা এর  প্রতিকারের জন্য  ব্রহ্মার দ্বারস্থ ।  একমাত্র উপায় ব্রহ্মার বরে বলীয়ান তারকাসুরের ঘোষিত মৃত্যু একমাত্র যোগী শিবের সন্তানের দ্বারাই হবে।   কিন্তু কিভাবে এই যোগীকে সংসারের প্রতি আকর্ষিত করা যায়। আবার সেই নারীকেই  টোপ বানিয়ে শিকারকে বাগে আনার কৌশলের ইতিবৃত্ত নিয়ে এই সংখ্যা।     চক্রান্ত যুগে যুগে    চক্রান্তের প্রাথমিক পর্বে কামদেবের যূপকাষ্ঠে যোগী শিবকে  বলি দেবার জন্য দেবতারা প্রস্তুত।  শিবের যোগী হিসাবে আত্মপ্রকাশের  দিনগুলি সেইদিনগুলির নিরিখে  কোন বিচ্ছিন্ন  ঘটনা ছিল না।  সৃষ্টির প্রতি ব্রহ্মার নিষ্ঠা   ঘটনাক্রমকে উপলদ্ধির  জন্য আরেকটু পিছনে ফিরে যেতে হবে।  সৃষ্টির আদিতে   ব্রহ্ম ছিলেন একা । যেই না সৃষ্টি শুরু হল তখন তাকে তিনটি উপাধি দিয়ে আলাদা করা হল যথাক্রমে  সত্ব , রজঃ ও  তম  নামকরণের মাধ্যমে। একই অঙ্গে বহু...

(১৮২) গুনগুনানী

ছবি
  (১৮২)   গু ন গু না নী         যুগে যুগে অভীষ্ট পূরণের জন্য দেবতা থেকে মানুষ ও অন্যান্য জীবদেরও নিজেদের মতো করে কৌশল রচনা করতে হয়েছে। সেখানে নৈতিকতা খুঁজতে গিয়ে ভুলভুলাইয়াতে হারিয়ে যাবার সম্ভাবনা বেশী।  তার থেকে বরং গল্পের নদীতে গা ভাসিয়ে দেওয়াটাই শ্রেয়।       অবশ্য সেই যুগে সাহিত্য রচনা করতে গেলে শীলতা বা অশ্লীলতা নিয়ে লেখককে কোন লেখাকে কেন্দ্র করে জবাবদিহি করতে হয়েছিল বলে জানা নেই। বরং সংস্কৃত শ্লোকের দাপটে অশ্লীলতাকে রূপক ও শিল্পকীর্তির সম-ব্যবহারে কখন যেন অশ্লীলতাকে পিছনে ফেলে সে যেন  নৈসর্গিক প্রকৃতির সাথে মিলেমিশে একাকার হয়ে  সাহিত্যের  নবকলেবরে আবির্ভূত হয়।  প্রসঙ্গটা ছিল যুগে যুগে ছলচাতুরির আশ্রয়ে নিতে দেবতা থেকে সামান্য প্রাণীও সুযোগ ছাড়েনি। শুধু তাই নয়, একটা পরম্পরা স্থাপন করে গেছে। সেদিন থেকে বর্তমানে সেটি একই ধারায় বিদ্যমান। অধর্মকে প্রশ্রয় দিয়ে বহুবিধ রূপক ও মিথ্যার  মোড়কে ধর্ম হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করার প্রক্রিয়াটি  আজও যেমন অব্যাহত, ভবিষ্যতে তার যে কোন পরিবর্তন হবে তার কোন ইঙ্গিত নেই।  ...

(১৮১) মুক্তি

ছবি
    (১৮১)  মুক্তি           মুক্তি এই শব্দটা এখনো পর্যন্ত মানুষের বহুধা বিভক্ত মতাদর্শ থেকে মুক্তি পায়নি। মানবসভ্যতার বয়স যদি ধরে নেওয়া হয় পাঁচ হাজার বছর, তবুও  প্রথম দিন থেকে  আজও সে চর্চিত বিষয়  হিসাবেই রয়ে গেল।  এই মুক্তিটা আসলে কোনটাকে বলা যেতে পারে ?  বহু রসায়নাগারে তাকে পরীক্ষা দিতে হয়েছে কিন্তু মানুষ তার  চূড়ান্ত উত্তর খুঁজে পাইনি অথবা বিষয়বস্তুর নির্বাচনের ক্ষেত্রে যথেষ্ট দূরদর্শিতা ছিল না। আবার, বাস্তবায়িত করার ক্ষেত্রে বিষয়ের অনুশীলনের জন্য যথার্থ নজর দেওয়া হয় নি।  কিংবা বইয়ের শব্দগুলিকে পাতা থেকে মুক্ত করে বীজের মতো জমিতে ছড়িয়ে দিয়ে  ফসল ফলানোর কথা কেউ ভেবে উঠেনি।  আবার যদিও বা চাষ করা হল, তখন কিন্তু  জমিটি চাষের কতখানি উপযুক্ত সেই ভাবনাটি না ভেবে আবাদ করে ব্যর্থ হয়েছে।    জমিতে বাইরে থেকে কীট পতঙ্গ এসে ফসলকে নষ্ট করে দিতে পারে, সেটা যথেষ্টভাবে আগে থেকে নজর দেওয়া হয়নি।               পন্ডিতেরা বলেন, মুক্তির পাশাপাশি বন্ধন জীবনের ...

( ১৮০ ) মিথ্যার বেসাতি আর একরাশ অলীক ধারণা (দ্বিতীয় পর্ব )

ছবি
(  ১৮০  )  মিথ্যার বেসাতি আর একরাশ অলীক ধারণা  (দ্বিতীয় পর্ব )                                     আকাশের দিকে  কিছু ছুড়ে ফেললে, সে আবার  ভীষণ যত্ন সহকারে আমাকেই তা ফেরত দিয়ে যায়। শুধু অনুভূতির তারতম্য ঘটে যায়।  কখন দুঃখকে যদি  ছুড়ে ফেলে দিই, তখন সেই-ই আবার আনন্দ হয়ে ফিরে আসে।  আবার যদি আনন্দকে হারিয়ে ফেলি সে আবার দুঃখ হয়ে ফিরে আসে। কর্ম করলে সে অর্থ হয়ে ফিরে আসে।  হতে পারে সেই অর্থ শব্দটি পার্থিব অর্থ অর্থাৎ টাকা-পয়সা  কিংবা অপার্থিব আনন্দও হতে পারে।   বাস্তবে, খানিকটা দৃশ্যময় আর খানিকটা অদৃশ্য যা অনুভূতিপ্রবণ কিন্তু গোটা ব্যাপারটাই বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, কোন এক জায়গায় তারা একে অন্যের সাথে মিলে যায় , কখন সজ্ঞানে আবার কখন অজ্ঞানে।   ভালো আর মন্দ এই দুইজনই  জন্মেছিল মনের অন্দরে।   উদ্ভূত পরিস্থিতির খেলায় তার রূপের  পরিবর্তন হলো, তাই তাকে ভিন্ন ভিন্ন নামে শুধু সম্বোধন করলাম মাত্র, তাতেই...