পোস্টগুলি

সেপ্টেম্বর, ২০২৫ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

৩৪৩ কেন আজ স্বামীজিকে নিয়ে চর্চা করার প্রয়োজনীয়তা আছে - (৯)

ছবি
    ৩৪৩   কেন আজ স্বামীজিকে নিয়ে  চর্চা করার প্রয়োজনীয়তা আছে - (৯ )                                                             যদি একমত হন, তবে বেশী করে সবার কাছে শেয়ার করু ন   নরেন্দ্রনাথ দত্ত—আমাদের সকলের চেনা নাম স্বামী বিবেকানন্দ। তিনি কেবল এক জন সন্ন্যাসী ছিলেন না, তাঁর থেকে বেশি বোধহয়। তাঁর ভাবনার আকাশ জুড়ে ছিল অগ্নিগর্ভ বিপ্লব। তাঁর সমগ্র জীবন ছিল যেন এক উত্তাল প্রশ্নমালার তরঙ্গ —যাঁরা এই ভারতবর্ষের মাটিতে মানুষ জন্ম নেয়, তাঁরা কি কেবল চিরাচরিত দেবদেবীর পুজো আর মন্ত্রোচ্চারণের মধ্যেই আবদ্ধ থাকবে? নাকি নিজেকে জাগাবে, জঞ্জালকে জ্বালাবে আর সেই আগুন থেকে শুদ্ধ এবং ধারালো  হয়ে বেরিয়ে  আসবে —নতুন মানুষ, নতুন সমাজ? অতিমানবের শিক্ষা : সমাজকে ফেরত ইতিহাস বলছে, অতিমানবেরা নিজেদের অর্জিত শিক্ষা কেবল ব্যক্তিগত মুক্তির জন্য রাখেননি। গৌতম বুদ্ধ থেকে শুরু করে বিবেকানন্দ পর...

৩৪২ এ যেন দানবের ভাষা -

ছবি
   ৩৪২  এ যেন দানবের ভাষা -  "উঃ কি যন্ত্রনা ! প্রতিটি পাতায় পাতায়। কি নির্মম সেই সব বাণী। সবই শূদ্র আর নারীকে ঘিরে। " - মনুস্মৃতি পড়তে পড়তে দর্শনের ছাত্রী ললিতার মধ্যে কি যেন অদ্ভুত এক যন্ত্রণার রাসায়নিক বিকিরণ শিরদাঁড়া হয়ে সরাসরি মাথার দিকে ধাবিত হলো। কিন্তু তার পড়া থেমে থাকলো না। পুরো বইটা কয়েকবার পরে, সেখান থেকে নোট নিয়ে ও তার ব্যাখ্যাগুলি একের পর এক সাজাতে লাগলো।  গ্রীষ্মের রোদ্দুরে পুড়ছে রতনপুর। গঙ্গার তীরের ধুলোয় ছাই রঙের বাতাস। পঞ্চায়েতের মাঠে আজও লাল রঙের সেই অস্থায়ী মঞ্চ। ললিতা দাঁড়িয়ে আছে সেখানে—শহর থেকে ফিরে আসা কলেজের মেয়ে, চোখে আগুন। চারপাশে গ্রামজোড়া মানুষ: বুড়ো কৃষক, মাছধরা জেলে, মাটির ঘরের মেয়ে, কিশোররা। ললিতা হাতে পুরনো বই— মনুস্মৃতি । পাতাগুলো হলদেটে, কোথাও কোথাও ছোট ছোট পোকারা হয়তো বা ভাষাগুলি তীব্র দহনে, সেই বই থেকে দূরে থেকেছে। তবুও  অক্ষরগুলো যেন সেঁকো বিষের মতো টলমল করছে।  সে গলা উঁচু করে পড়তে শুরু করল— “স্ত্রীলোকের স্বামী ভিন্ন পৃথক যজ্ঞ নেই। স্বামীর অনুমতি ছাড়া কোনো ব্রত বা উপবাস নেই।”  (৫/১৫৫)  মাঠে কানাকানি। কেউ হা...

৩৪১ তৃপ্তি

ছবি
৩৪১    তৃপ্তি  কলকাতার এক পুরনো পাড়ায় সন্ধের বাতাসে আজও মিশে থাকে গলির ভিজে গন্ধ, ধোঁয়া আর সস্তা ধূপের মিষ্টি কটু গন্ধ। সেই গলির মধ্যিখানে ঝাপসা আলোয় ঝুলে থাকা ল্যাম্পোস্টের নিচে দাঁড়িয়ে থাকে এক নারী—তৃপ্তি। বয়স এখন চল্লিশ ছুঁইছুঁই, তবু চোখে টান আছে, ঠোঁটে অনর্গল হাসির ভঙ্গি। সময়ের ধুলোমাখা অলংকার যেন। তৃপ্তির ঘরটিতে রাতের পর রাত খসে পড়ে বহু মানুষের গোপন ক্লান্তি। কখনো সে নিজেকে ‘বেশ্যা’ ভাবে না। ভাবে, এ যেন এক অদৃশ্য দেবালয়—তার শরীর সেই মন্দির। কেউ সেখানে পূজারী, কেউ নিছক অতিথি। কেউ আসে লজ্জা নিয়ে, কেউ কেবল ক্ষুধা নিয়ে। তৃপ্তির কাছে তারা সবাই একই। বিনিময়ে যে টাকা আসে, সে কেবল দেহটাকে টিকিয়ে রাখার দক্ষিণা। আজ রাতটা একটু অন্যরকম। গলির কোণ ঘুরে এসে দাঁড়ালেন অনিমেষ। চল্লিশোর্ধ্ব এই মানুষটির চোখে গাঢ় ক্লান্তি। দেহে অসুখ বাসা বেঁধেছে, স্ত্রী বিমলা বহুদিন ধরে শয্যাশায়ী—দুই শরীরের মধ্যে অনেক দিন ধরেই নীরবতা। “দেহের সুখ” শব্দটা মুখ ফস্কে বেরিয়ে গিয়েছিল একদিন—অনিমেষ পরে ভেবেছেন, সুখ কি কেবল শরীরের? নাকি কোনও অন্তরের আলোকধারা? তবু শরীরের অপূর্ণতাকে মেনে নেওয়া যায় না। তৃপ্তি দরজার আ...

৩৪০ কেন আজ স্বামীজিকে নিয়ে চর্চা করার প্রয়োজনীয়তা আছে - (৮)

ছবি
  ৩৪০   কেন আজ স্বামীজিকে নিয়ে  চর্চা করার প্রয়োজনীয়তা আছে - (৮ )                                                             যদি একমত হন, তবে বেশী করে সবার কাছে শেয়ার করু ন    চৈত্রের শুকনো হাওয়া যেন হঠাৎ ঝাঁপিয়ে এসে ছিন্নভিন্ন করে দিল চারদিক। ধুলো উড়ছে। মাঠের মাটির গায়ে যে ঘুমিয়ে থাকা বীজ, সে কি জানে—ওর বুকের ভেতরেই লুকিয়ে আছে কুঁড়ি ফোটার অদম্য শক্তি? তবু সে নড়ছে না, জেগে উঠছে না। যেন কেবল নির্দেশের অপেক্ষা। এই যে আমাদের মানুষ, আজকের এই সমাজ—ওরা কি ওই বীজ নয়? রীতি-নীতি, সংস্কার, ধর্ম—কথাগুলো বড় চেনা। কিন্তু এদের সঙ্গে কত অদৃশ্য দড়ি জড়িয়ে আছে, তা আমরা দেখি না। পুরনো নিয়ম মানা নাকি ধর্ম, তাই বলে অন্ধের মতো টেনে নিয়ে চলা? গাছের মতো স্থির থেকে যদি ধার্মিক হওয়া যায়, রেলগাড়ির মতো ছক কেটে চলা যদি ভক্তি হয়—তাহলে আমরা মানুষ কেন? পাথর তো কোনো দিন নিয়ম ভাঙে না। গরু কি পাপ করে? যন্ত্রের মধ্...

(337E) - Why It Is Necessary to Discuss Swamiji Today(7)

  (337E) - Why It Is Necessary to Discuss Swamiji Today(7) (If you agree, please share widely) 3 January 1898, Deoghar, Baidyanath Swamiji means a torrent of questions—reasons offered for every action, and then the resolve to enshrine those truths in one’s own heart.  Compassion and Love Two streams flow through the human heart—compassion and love. When we see only the physical body in another living being, the service we offer is mere compassion. But when we perceive the eternal soul behind that body, the same service becomes love. Hence Mahaprabhu Chaitanya said, “Compassion toward all beings, love toward God.” True devotion opens this very doorway between humanity and the Divine. Rules of Society Social rules arose to protect people, though their origins are now forgotten. In ancient times royal scribes called  Magadhas  recorded the events of the kingdom,  Sutas  recited them impartially, and sages wrote them down. Yet the sages were never lawmakers. Pe...

(338E) Rabindranath Tagore’s Vision of the Bhagavad Gita

(338E)   Rabindranath Tagore’s Vision of the Bhagavad Gita Within the spiritual treasury of Indian culture, the Bhagavad Gita holds a place of unique distinction. The dialogue between Krishna and Arjuna on the battlefield of the Mahabharata is not merely a sacred scripture but also a priceless gift to human thought. Yet Rabindranath Tagore never approached the Gita with blind devotion. To him it was at once exalted and open to questioning. He accepted with reverence its call to spiritual freedom, while also raising clear moral doubts. The first aspect that deeply moved Tagore was the Gita’s teaching of karma-yoga —the path of selfless action. The text does not urge renunciation of the world or escape from material life. Krishna repeatedly says, “Do your duty, but remain unattached to the results.” This ideal of detached action resonated with Tagore’s own humanistic philosophy. He believed that one can experience the divine while remaining fully engaged in worldly responsibil...

(339 E )Bhagavad Gita’s “Nishkama Karma” and the Left Movement in West Bengal: Points of Convergence and Divergence

 (339 E ) Bhagavad Gita’s “Nishkama Karma” and the Left Movement in West Bengal: Points of Convergence and Divergence  The Bhagavad Gita , one of the greatest texts of India’s spiritual heritage, offers a unique interpretation of action— nishkama karma , action without attachment to its fruits. In contrast, the Leftist politics of West Bengal draws primarily from Marxist ideology, where “action” means social and political struggle and the goal is to build a classless society free of exploitation. This essay explores where these two streams converge and where they fundamentally diverge. 1. Nishkama Karma in the Gita: The Core Idea Sri Krishna instructs Arjuna:  Perform your own duty ( swadharma ).  Do not be driven by greed or fear of results.  Action itself is supreme; attachment to results binds the soul. Here, the ultimate aim is liberation of the self, detachment, and moral purification. 2. The Leftist View of Action in West Bengal West Bengal...

৩৩৯ ভাগবত গীতার ‘নিষ্কাম কর্ম’ ও পশ্চিমবঙ্গের বামপন্থা : মিল ও অমিল

ছবি
৩৩৯     ভাগবত গীতার ‘নিষ্কাম কর্ম’ ও পশ্চিমবঙ্গের বামপন্থা : মিল ও অমিল  ভারতের আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ ভাগবত গীতা কর্মের একটি অনন্য ব্যাখ্যা দিয়েছে—‘নিষ্কাম কর্ম’। অর্থাৎ, মানুষ তার কর্তব্যকর্ম করবে কিন্তু কর্মফলের প্রতি আসক্ত হবে না। অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের বামপন্থী রাজনীতি মূলত মার্কসবাদী মতাদর্শে প্রভাবিত, যেখানে কর্ম মানে সামাজিক-রাজনৈতিক সংগ্রাম, আর লক্ষ্য হলো শ্রেণি-শোষণমুক্ত সমাজ গঠন। এই দুই ধারার মধ্যে কোথায় মিল, আর কোথায় মৌলিক অমিল, সেটাই এই আলোচনার বিষয়।  ১. গীতার নিষ্কাম কর্ম : মূল ধারণা শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে উপদেশ দেন—     👉 নিজের স্বধর্ম বা কর্তব্যকর্ম পালন করো,     👉   কিন্তু ফলের জন্য লোভ বা ভয় রেখো না।     👉 কর্মই প্রধান, ফলের প্রতি আসক্তি মানুষের বন্ধন। এখানে আত্মার মুক্তি, অনাসক্তি, এবং ব্যক্তিগত নৈতিক শুদ্ধি বড় লক্ষ্য। ২. পশ্চিমবঙ্গের বামপন্থী কর্মদর্শন বামপন্থীরা মূলত মার্কস, এঙ্গেলস ও লেনিনের ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ। শ্রেণি-সংগ্রাম ও উৎপাদনের মাধ্যমের সামাজিকীকরণ তাদের মন্ত্র। তারা ধর্মে...

৩৩৮ রবীন্দ্রভাবনায় শ্রীমৎ ভাগবত গীতা

ছবি
 ৩৩৮   রবীন্দ্রভাবনায়  শ্রীমৎ ভাগবত গীতা  ভারতীয় সংস্কৃতির আধ্যাত্মিক ভাণ্ডারে   ভগবদ্‌গীতা   এক অনন্য স্থান অধিকার করে আছে। মহাভারতের যুদ্ধক্ষেত্রে কৃষ্ণ ও অর্জুনের সংলাপে যে তত্ত্ব ও দর্শনের বিকাশ ঘটেছে, তা শুধু ধর্মগ্রন্থ নয়—মানবচিন্তারও এক অমূল্য ধন। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই গীতাকে অন্ধভক্তির চোখে দেখেননি। তাঁর দৃষ্টিতে গীতা যেমন মহান, তেমনই প্রশ্নসাপেক্ষ। আধ্যাত্মিক মুক্তির আহ্বান তিনি শ্রদ্ধার সঙ্গে গ্রহণ করেছেন, আবার নৈতিক দ্বন্দ্বের জায়গায় তিনি সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন। প্রথমত, গীতার যে দিকটি রবীন্দ্রনাথের মনে গভীর শ্রদ্ধা জাগিয়েছিল তা হল  কর্মযোগের বাণী । সংসারত্যাগ বা জড়বিশ্ব থেকে পালানোর শিক্ষা গীতায় নেই। কৃষ্ণ বারবার বলেছেন, “কর্ম করো, কিন্তু ফলের আসক্তি রেখো না।” এই অনাসক্ত কর্মের আদর্শ রবীন্দ্রনাথের মানবতাবাদী দর্শনের সঙ্গে মিলে যায়। মানুষের কর্তব্যের মধ্যে থেকেই ঈশ্বরচেতনাকে উপলব্ধি করা—এই সত্য তিনি নিজ জীবনের সাধনাতেই অনুভব করেছিলেন। গীতার অদ্বৈত ভাবনা, যেখানে জড় ও চৈতন্য এক ব্রহ্মতত্ত্বের প্রকাশ, রবীন্দ্রনাথের বিশ্বমানবের ধারণাকে ...

৩৩৭ কেন আজ স্বামীজিকে নিয়ে চর্চা করার প্রয়োজনীয়তা আছে - (৭)

ছবি
  ৩৩৭   কেন আজ স্বামীজিকে নিয়ে  চর্চা করার প্রয়োজনীয়তা আছে - (৭ )                                                        যদি একমত হন, তবে বেশী করে সবার কাছে শেয়ার করু ন    ৩রা জানুয়ারি, ১৮৯৮ দেওঘর, বৈদ্যনাথ  স্বামীজী মানেই একরাশ প্রশ্ন, কার্য্যকে বিশ্লেষণ করার জন্য একগুচ্ছ কারণের অবতারণা,  তারপরে তাকে অন্তরে প্রতিষ্ঠা।  দয়া ও প্রেম মানুষের হৃদয়ের দুটি প্রবাহ—দয়া ও প্রেম। যখন আমরা অপর জীবের মধ্যে কেবল দেহমাত্র দেখি, সেবার মধ্য দিয়ে আমাদের দয়া প্রকাশিত হয়; আর যখন সেই দেহের আড়ালে চিরন্তন আত্মাকে অনুভব করি, তখন সে সেবা প্রেম হয়ে ওঠে। তাই মহাপ্রভু চৈতন্য বলেছেন—“জীবে দয়া, ঈশ্বরে প্রেম।” মানুষের সাথে ঈশ্বরের এই দ্বারকেই উন্মুক্ত করে প্রকৃত ভক্তি। সমাজের নিয়ম-কানুন সমাজের নিয়ম এসেছে মানুষের নিরাপত্তার প্রয়োজনে, কিন্তু ইতিহাসের গভীরে তার জন্মকথা আজ বিস্মৃত। প্রাচীনকালে রাজসভায় ‘মাগধ’ নামক...

৩৩৬ কেন আজ স্বামীজিকে নিয়ে চর্চা করার প্রয়োজনীয়তা আছে - (৬)

ছবি
  ৩৩৬   কেন আজ স্বামীজিকে নিয়ে  চর্চা করার প্রয়োজনীয়তা আছে - (৬ ) যদি একমত হন, তবে বেশী করে সবার কাছে শেয়ার করু ন  স্বামীজীর পত্রাবলীর থেকে উদ্ধৃত - ২৪শে এপ্রিল , ১৮৯৭, দার্জিলিং  শ্রদ্ধাহীনতা  নিজের প্রতি শ্রদ্ধা হারবোনা বলে, কলকাতার গরমে বসে ভাবছি , এই "শ্রদ্ধাহীনতা" নামের সাথে এ এক অদ্ভুত মহামারীতে ধীরে ধীরে দেশটা আক্রান্ত হয়ে যাচ্ছে, সেখান থেকে উত্তরণের উপায় খোঁজা। এই পর্বে আজকের স্বামীজী পরিক্রমার অন্তে চেষ্টা করলাম একটু আড্ডার ঢঙে এই মহান মানুষটির জীবনবোধ থেকে কিছু অংশকে তুলে ধরে সমৃদ্ধ হবার।  আইরিশ প্যাটের ঘুম ভাঙা - প্রথমেই মঞ্চে প্যাট - একজন আইরিশ উপনিবেশের অবলা যুবক। তাকে দেখলে মনে হবে যেন কারোর গরুর গাড়ি থেকে সদ্য নেমে এসেছে। চেহারার মধ্যে দারিদ্রের স্পষ্ট ছাপ, হাতে একটা বাঁশের লাঠি আর তার আগায় একটা কাপড়ের পুটলি। লন্ডনের অলিগলিতে দিগ্বিদিক উদেশ্যহীনভাবে ঘুরতে ঘুরতে তার অন্তরের মধ্যে একটা শব্দ বেজে উঠছে -" তুই জন্মেছিস গোলাম হয়ে ,তুই মরবিও গোলাম হয়ে। " কাটা রেকর্ডের মতো প্রতিদিন সেই একই গান হৃদয়ে বেজে উঠছে, ফলে আত্মাও তৃষ্ণার্ত হয়ে পড়ছে।...

৩৩৫ মোহিনীর অঙ্কুরোদগম

ছবি
৩৩৫   মোহিনীর অঙ্কুরোদগম       বিকেলের পড়ার টেবিলে বসে মোহিনী আবার সেই একই অনুভূতিটা টের পাচ্ছে—পাতার শব্দ যেন বাতাসে ভেসে এসে ফিসফিস করছে, “তুমি কোথায় যেন হারিয়ে যাচ্ছো ?” । গণিতের অঙ্কগুলো সামনে খোলা, কিন্তু মন জানালা পেরিয়ে পাশের বাড়ির আমগাছের ডাল ছুঁয়ে ওই যে আকাশটা যেখানে মাটিকে স্পর্শ করছে, সেখানে গিয়ে কিছু যেন খুঁজছে।   ক’দিন ধরেই এই অদ্ভুত অদ্ভুত ভাবনাগুলি ঘুরেফিরে আসছে। কোনো রঙিন পাখির ডাক, বা রোদ্দুরের যে সোনাঝরা  ঝিলিক হয়, সেসব এতদিন তার দৃষ্টির বাইরে ছিল। তাদের উপস্থিতি যেন গোপন কোনও উত্তেজনা জাগায়। পড়ার ফাঁকেই সে টের পায়, নিজের ভিতর কিছু বদলাচ্ছে। আগে যেটুকু কৌতূহল ছিল পুতুলখেলা আর গল্পের বই ঘিরে, এখন তা ছুটে বেড়াচ্ছে নাম না জানা অনুভূতির আকর্ষনে, যার কোন ব্যাখ্যা নেই।  হঠাৎ পায়ের শব্দে ধরা পড়ে গেল সে। মা রান্নাঘর থেকে আসছেন। মুহূর্তেই মোহিনী বইয়ের পাতায় চোখ গুঁজে দিল, যেন দুনিয়ার সবচাইতে কঠিন অঙ্ক মেলাচ্ছে।  মা দরজায় দাঁড়িয়ে একবার তাকালেন। চোখে অদ্ভুত মিশ্রণ—স্নেহ, সতর্কতা, আর অজানা আশঙ্কা। কারণ মায়ের নজর এড়িয়ে যায়নি পা...

৩৩৪ কেন আজ স্বামীজিকে নিয়ে চর্চা করার প্রয়োজনীয়তা আছে - ৫

ছবি
  ৩৩৪  কেন আজ স্বামীজিকে নিয়ে  চর্চা করার প্রয়োজনীয়তা আছে - ৫ যদি একমত হন, তবে বেশী করে সবার কাছে শেয়ার করু ন  স্বামীজীর পত্রাবলীর থেকে উদ্ধৃত - ১৯শে নভেম্বর, ১৮৯৪ সালে জীবনের অর্থ সম্পর্কে এক চিঠিতে স্বামীজী যেটি লিখেছিলেন, তাকে অনুসরণ করে লেখা - ধর্মের পাতে একরাশ ঝাল ঝাল তরকারি - ধর্ম- যে নামটা শুনলেই চোখের সামনে ভেসে উঠছে এক স্বল্পবাস পরিহিত ব্রাহ্মণের গম্ভীর গলায় শ্লোক আওড়ানো, ঘন ঘন ঘন্টাধ্বনি, কাসর ঘন্টার একনাগাড়ে অন্তরস্পর্শী শব্দ, একরাশ ধুপকাঠি আগুনের সংস্পর্শে এসে নিজেকে উজাড় করে যতটা গন্ধ হৃদয়ে লুকিয়ে রেখেছিল, তাকে যুগপৎ একসাথে ছেড়ে দিয়ে নিজেকে মুক্ত করা, সেই ঘ্রানে মশাদের যারপরনাই নীরবে মূর্ছা। কিন্তু এই ধর্মের গল্প, অন্য সব ধর্মের গল্পের থেকে আলাদা। সেখানে ঘন্টা আছে বটে, কিন্তু সেই ধ্বনিতে পুরোহিতের স্বল্প কেশরাশি বেশ খাঁড়া হয়ে ওঠে।  যাঁরা অন্তরে বাহিরে পরাধীন তাদের ধর্ম কি হবে- সেটা কি কেউ বলতে পারে?  অবশ্যই বলা যায় , তাদের ধর্ম হবে স্বাধীনতা অর্জন।  তাই ধর্মের প্রধান শর্ত হচ্ছে স্বাধীনতা। বাস্তবে মানুষ কি পাচ্ছে, শুধু একের পর এক বাধা নিষেধ...