পোস্টগুলি

মার্চ, ২০২২ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

আগামী (১২১)

ছবি
আগামী (১২১) জীবনের বহু ক্ষেত্রের অপূর্ণতাকে কবি মেনে নিয়ে ছিলেন কিন্তু আশাহত হননি বরং একটা পরম্পরা তৈরী করে গিয়েছিলেন, যেই পথ দিয়ে পরবর্তী প্রজন্মের কবিরা তাঁর যাত্রার শেষ থেকে তাদের যাত্রা শুরু করবেন। জীবনের প্রান্তে পৌঁছে তিনি এই আত্মপোলদ্ধি করেছেন এতদিন ধরে যা কিছু বাইরে খুজেছিলেন, সেটা তার মনের অন্তরালে বাস করছে আর সেখানে পৌঁছানোর রাস্তাটা ভীষণ দুর্গম। গত সংখ্যার পর  ০ ০ ০ ০ ০ যদি ধরে নেওয়া হয় কবির জীবনের সেই অসমাপ্ত কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য আরেক এক নবীন কবি এই দুর্গমতার রহস্য ভেদের মন্ত্র লিখে ফেললেন  -   "দুর্গম গিরি কান্তার মরু, দুস্তর পারাবার হে !      লঙ্ঘিতে হবে রাত্রি নিশীথে, যাত্রীরা হুঁশিয়ার।  দুলিতেছে তরী, ফুলিতেছে জল, ভুলিতেছে মাঝি পথ   ছিঁড়িয়াছে পাল কে ধরিবে হাল, কার আছে হিম্মত। কে আছো জোয়ান, হও আগুয়ান হাঁকিছে ভবিষত  এ তুফান ভারী, দিতে হবে পাড়ি, নিতে হবে তরী পার।"  কবিতার লাইনগুলিকে যদি রূপক হিসাবে ধরা হয় , তাহলে তাকে এইভাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে - জীবনের যাত্রাপথের রাস্তাটা সর্বস্তরেই ভীষ...

ঐকতান (১২০)

ছবি
 ঐকতান  (১২০) জীবনের পথে কেন এই বৈচিত্রতা ? --- গত সংখ্যার পর  ০ ০ ০ ০ ০   সৃষ্টির রহস্যের মধ্যেই বৈচিত্রতা   লুকিয়ে আছে। যেখানে সৃষ্টির মূলেই আছে দ্বন্দ সেখানে বৈচিত্র শব্দটি সৃষ্টির সহজাত প্রবৃত্তি হতে বাধ্য  । জীবন যদি   একটি প্রবাহ হয় , তাহলে সেই প্রবাহের কোন না কোন  প্রক্রিয়া থাকতেই  হবে আর সেই প্রক্রিয়ার চরিত্রটাই হচ্ছে বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য। প্রকৃতির জগতে বৈচিত্র আছে বা থাকবে কিন্তু মানুষকে তাকে নিয়েই চলতে হবে আর এই বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যসাধনই  জীবনের খেলা। এই বৈচিত্রপূর্ণ বহু পথ এসে কিন্তু ঐক্যমতে মহাসাগরে  মিলে সৃষ্টির প্রক্রিয়াকে অব্যহত রেখেছে।  বৈচিত্রকে নিয়ে লক্ষে পৌঁছনো অসম্ভব। বৈচিত্রের লয় হয় ঐকতানে। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের "ঐকতান" কবিতার বিষয়বস্তুকে যদি সেই আঙ্গিকে ব্যাখ্যা করি তাহলে   - এই কবিতাটি কবির একটা স্টেটমেন্ট হতে পারে,একটা বিশ্ব প্রকৃতির একটা ক্যানভাস হতে পারে, অস্তিত্ববাদ( নিজের মনকে নিয়ে চিন্তাভাবনা) হতে পারে ,একটি শ্রেণী চেতনার ইতিহাস হতে পারে, একটা গনসংগীত হতে পার...

সহাবস্থান (১১৯)

ছবি
সহাবস্থান (১১৯) যে আদর্শকে সামনে রেখে ঋষিরা এই সত্য আবিষ্কারের জন্য নিজেদের জীবনকে উৎসর্গ করেছিলেন তাকে বাস্তবায়িত না করে অর্থাৎ তত্ত্বের সঠিক প্রয়োগ না করে ক্ষান্ত হবেন না --- গত সংখ্যার পর  ০ ০ ০ ০ ০ ধর্মীয় দর্শনের সত্যগুলি সাধারণমানুষের নাগালের বাইরে ছিল, কারণ ভাব সাগরের যে  উচ্চতায় সত্যবস্তুগুলি ভেসে বেড়াচ্ছিল তার তুলনায় সাধারণ মানুষের  কামনা আর বাসনাগুলি স্থানের দূরত্ব ছিল ধরা ছোয়ার বাইরে।   পার্থিব জগতের সৃষ্টিকর্তারাও নাছোড়বান্দা; তারও আধ্যাত্মিক সত্যগুলিকে বেদ আর উপনিষদের আলমারিতে রেখে  হিন্দু ধর্মের পৌরাণিক কাহিনীগুলি নিয়ে এলো বহুল প্রচারিত রামায়ন, মহাভারত আর পুরান থেকে। সেগুলি সাধারনের মধ্যে তার জনপ্রিয়তা আজ ও বর্তমান।   সৃষ্টির কাজকে অব্যাহত রাখতে মানব জীবনের চারটি পরস্পর সম্পর্কযুক্ত কর্ম পদ্ধতি নির্ধারিত করে দিল, তারা যথাক্রমে, ধর্ম, অর্থ ,কাম এবং মোক্ষ। কামনা-বাসনার কেমিস্ট্রি অনুযায়ী অর্থ যেখানে  সম্পদ গঠনের কাজে ব্যস্ত থাকে, সেখানে কাম ভীষণ ব্যস্ত থাকে সুখভোগের ফিরিস্তি তৈরী করতে। একটা পর্য্য...

আমরা বাস করি আনন্দে (১১৮)

ছবি
  আমরা বাস করি আনন্দে  (১১৮) সৃষ্টির প্রথমবস্থায় জগতের উপর মায়া ভীষণ ক্ষুদ্রাকারে ভাসতে থাকে।ধীরে ধীরে মায়ার ভিতর পুঞ্জিভূত হতে থাকে কামনা ও  বাসনা। উপযুক্ত পরিবেশের সান্নিধ্যে এসে সে কলেবরে বৃদ্ধি পেয়ে এক কৃত্তিম জগৎকে মানুষের সামনে হাজির করে এবং সেই জগৎকেই মানুষ প্রত্যক্ষ করে।  গত সংখ্যার পর  ০ ০ ০ ০ ০     জীবন আর সংগ্রাম এই দুটি শব্দ পাশাপাশি চলতে চলতে  গিয়ে কবে এক দিন একে অন্যের পরিপূরক হয়ে উঠেছে সেটি  বলা অসম্ভব। কখন সে অন্তঃপ্রকৃতিতে আবার কখন সে বাহ্যপ্রাকৃতিতে ভীষণ সমান ভাবে  সক্রিয়। মানুষ যখন চিন্তার জগতে প্রবেশ করে, তখন সে ভাবে যে " আমি আছি " আর পারিপার্শিক দৃশ্যমান পৃথিবীকে দেখে ভেবে নেয়, সঙ্গে " আমার জগৎ আছে " আর "আমি এই জগতের অংশ " এবং  জগৎই শেষ কথা। ঠিক এই জায়গায় থেকে যে দর্শনের জন্ম নেয় সেই দর্শনকে বলে ভৌতবাদ বা বস্তুবাদী দর্শন।  মানুষের চিন্তা ক্রমান্বয়ে আরো এগিয়ে চলে, চলতে চলতে ভাবে; আর বাস্তবের সাথে  সেই চিন্তাকে খাপ খাওয়াতে চায়, চিন্তার সাথে বুদ্ধি জোট বাধে, শুরু হয় চিন্তার থেকে উদ্ভূত ভাবন...

সভ্যতার নামে প্রহসন (১১৭)

ছবি
  সভ্যতার নামে প্রহসন (১১৭)  বর্তমানে পৃথিবীর মানব সমাজকে বিশেষণে ভূষিত করে যত্ন করে সম্বোধন করা হয় সভ্য সমাজ হিসাবে। এই উপাধি কে দিয়েছে, কেন দিয়েছে বা কারা দিয়েছে তা আজ ভেবে দেখা দরকার । আমরা ভারতবর্ষকে এক প্রাচীন সভ্য দেশ বলে থাকি । কিন্তু একথা কি আমরা ভেবে দেখেছি যে এ দেশের রাষ্ট্রীয় ব্যাবস্থা এ দেশে মানুষের সাথে মানুষের আচরণ বিধি  যা প্রচলিত আছে তা যদি সভ্যতা হয় তা হলে অসভ্য সমাজ বলব কোন সমাজ কে ?  যদি বলা হয় যে ভারতবর্ষ একটি অসভ্য দেশ তা হলে সঙ্গে সঙ্গে তথাকথিত শিক্ষিত সমাজ ও দেশের সরকার সমস্বরে বলে উঠবে, এ কথাটি  অসত্য কথা। কারণ ভারতীয় সভ্যতা হল পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন  শ্রেষ্ঠতম সভ্যতা। যদি বলা হয়  এসবের প্রকৃত ব্যাখ্যা কি? তখন তারা বলবেন,  কেন  বেদের মত শ্রুতি সাহিত্য , বুদ্ধ দেবের মত মহান পুরুষ , অশোকের মতো রাজা  ( অন্যন্য রাজার কথা উহ্য থাকবে) ,  শ্রীচৈতন্যর মত  মানব  প্রেমিক , শ্রীরামকৃষ্ণের মত   অবতার, স্বামী বিবেকানন্দর মত দার্শনিক সন্ন্যাসী , রবীন্দ্রনাথের মত  বিশ্ব বন্দিত কবি ও মানবতাবাদী, শরতচ...

সৃষ্টির মুলে দ্বন্দ (১১৬)

ছবি
  সৃষ্টির মুলে দ্বন্দ   (১১৬) মানুষ এই পৃথিবীতে প্রত্যক্ষ করতে পেরেছেন তার এবং তারও  বাইরে অস্তিত্ব আছে, সেটা কিন্তু মানুষের দেখার বা জানার বাইরে, তারাও কিন্তু এই চৈতন্য বা পুরুষের অংশমাত্র।  চৈতন্য হলো এক অখন্ডতার ধারণা , তাকে আলাদা করে ভাবা ভুল।  গত সংখ্যার পর  ০ ০ ০ ০ ০ অংশ কখনই সমগ্রের সমান হতে পারেনা, এইটা ভীষণ সহজ কথা। দৃশ্যমান জগৎই মানুষের পৃথিবী। কেন মানুষ এই চৈতন্যকে প্রতক্ষ্য করতে পারেনা ? দেখা আর না দেখার মাঝখানে পর্দা যদি না থাকতো তাহলে অস্বচ্ছতা থাকতোনা।সেই কারণে  ধরে নেওয়া যেতে পারে দৃষ্টির উপর নিশ্চয়ই কোন আবরণ পরে আছে। সেই আবরণটি কোথায় থাকে? ইতিপূর্বে আমরা জেনে গেছি , ইন্দ্রিয়ের পিছনে মন না থাকলে কোন কিছুকে দেখা বা জানা যায়না। প্রত্যক্ষ করা সব বস্তুকে বিশ্লেষণ করার দায়িত্ব বুদ্ধির আর যখন এই বুদ্ধির উপর অহংকার নামক পর্দা পরে যায়, তখন সে গিয়ে মানুষের বুদ্ধি বা চিন্তা শক্তিকে আছন্ন করে রাখে বা ভুল পথে চালিত করে।  মায়ার ছলনায় মানুষ জাগ্রত , স্বপ্ন ও সুষুপ্তি এই তিন অবস্থার অসাড়ত্বে বাস করে।...

অখন্ড যখন খন্ডিত হয় (১১৫)

ছবি
  অখন্ড যখন খন্ডিত হয়  (১১৫) ওঁ-কার আকাশের মতো সর্বব্যাপী। তুরীয় অবস্থা, যে দেহাতীত ও অনন্ত, সেই রকম ওঁ-কার ও অনন্ত। সমস্ত দ্বৈতভাবে ওঁ-কারে এসে বিলীন হয়ে যায়। যে হেতু দ্বৈতভাবের বিভ্রান্তি থেকে না, তাই সে শিব অর্থাৎ মঙ্গলময়।    গত সংখ্যার পর  ০ ০ ০ ০ ০   চৈতন্য  - বৈদিক সাহিত্যে আত্মা বা চৈতন্যকে পুরুষ বলে সম্বোধন করা হয়। চিন্তা ভাবনার ক্ষেত্রে  বিষয়বস্তু   ও তার বিচার্য ক্ষেত্রটি  সঠিকভাবে নির্বাচন না হলে সেটা অর্থহীন হয়ে পড়বে। এখন প্রশ্ন হলো  আত্মার ক্ষেত্র নির্বাচনের জন্য কি আলাদা আলাদা মানুষের আত্মা বা চৈতন্যকে নিয়ে এগোতে হবে , না  সমষ্টিগত মানুষের আত্মা নিয়ে চিন্তা-ভাবনাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। প্রথমত আত্মা বা চৈতন্য আলাদা আলাদা কখন হয়না, কেননা, জগতের সব আলাদা আলাদা  পুরুষ বা চৈতন্য সেই বিরাট পুরুষ বা চৈতন্যের মধ্যে বিলীন।  এই বিরাট পুরুষের মধ্যে কোনো প্রাণী হয়ত জেগে আছে , কেউবা নিদ্রা গেছে, কেউবা ক্ষুধার্ত , কেউবা খেলাধুলায় ব্যস্ত। এক এক করে প্রাণীদের যোগ ফলের প্রকাশ কিন্তু এই সমষ্টি পুরুষ নন...

কোথায় পাব তারে (১১৪)

ছবি
  কোথায় পাব তারে   (১১৪) সমস্ত বস্তুর ভিতরে ব্রহ্ম বা চৈতন্য বাস করে।  যেমন, রজ্জুকে সাপ ভাবা একটা কল্পনা মাত্র ঠিক তেমনি জগৎ ও কল্পিত।  একই বস্তুর ভিন্ন রূপ কল্পনা আর বাস্তব।  গত সংখ্যার পর  ০ ০ ০ ০ ০   উপনিষদ বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে পরমাত্মায় পৌঁছানোর পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করেছেন।  উপনিষদ বলছেন মোট চারটে ধাপকে অতিক্রম করে পরমাত্মার কাছে পৌঁছানো যায়।  সর্বশেষ অর্থাৎ চতুর্থ ধাপটিতে  তুরীয় বা পরমাত্মা বাস করেন।  তাকে আরেকটু সহজ ভাবে বোঝানোর জন্য বলছেন, জ্ঞানকে যদি অগ্নিরূপে কল্পনা করা হয়, তাহলে, সেই জ্ঞানরূপী অগ্নি প্রথম ধাপের জাগ্রত অবস্থাকে, দ্বিতীয় ধাপের  স্বপ্নাবস্থাকে দগ্ধ করে তৃতীয় ধাপ অর্থাৎ সুষুপ্তি অবস্থায়  পৌঁছায়। এই অবস্থাটি  বীজভাব বা বীজ থেকে  অঙ্কুরিত চারা গাছের মতো। জ্ঞানরূপী অগ্নি যদি সেই চারাকে যদি পুড়িয়ে দেয় , তাহলে, সে আর কখন বড় গাছ হিসাবে আত্মপ্রকাশ করতে পারবে না। জ্ঞানরূপ অগ্নি প্রত্যেকটি ধাপের অজ্ঞান অবস্থাকে দগ্ধ করে ফেলেছে।  তাই সংসাররূপ বৃক্ষ আর কখন জন্ম...

গোলকধাঁধা (১১৩)

ছবি
গোলকধাঁধা  (১১৩) যার কোন ক্ষয় হয়না , যা কোন দিন ফুরিয়ে যায় না , যা সর্বদাই বিদ্যমান থাকে বা এদিক থেকে ওদিকে চলে যায় না, তাকেই অক্ষর বলে।  আবার অক্ষরকে স্বর বলা যায়, আবার স্বরকে শব্দ বলা হয়।   গত সংখ্যার পর  ০ ০ ০ ০ ০ অক্ষর যখন শব্দ আর তার প্রকাশ যখন ভাষায়, তখন অক্ষর আর শব্দের মেল বন্ধনে  অতিক্রান্ত হয় আপাতপ্রতীয়মান বাধা।  ওঁ নামক অক্ষরকে কেন ব্রহ্ম বলা হয়।   অক্ষর সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা  বা জ্ঞান হলে বুঝতে পারা যায়। পরম  ব্রহ্মকে যদি অগাধ জলরাশির সাথে কল্পনা করা হয় তার অতি ক্ষুদ্রতম শক্তি  তরঙ্গ হচ্ছে ওঁ-কার। জলের যেমন তরঙ্গ আছে , বায়ুর তেমনি তরঙ্গ আছে কিন্তু ব্রহ্মের এই অসীম সাগরে মায়াতরঙ্গ অব্যক্তের পূর্বাবস্থা।   ( সাধারণভাবে অব্যক্ত শব্দটির অর্থ হলো যার বাইরে কোন প্রকাশ হয়না।  গীতায় অব্যক্তকে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে -" অব্যক্তাৎ  ব্যক্তয়ঃ সর্বাঃ "- এই দৃশ্যমান জগৎ অব্যক্ত অবস্থা থেকে ব্যক্ত অর্থাৎ প্রকাশিত হয়েছে। সুষুপ্তি অবস্থা অর্থাৎ যখন মানুষ জাগ্রত, স্বপ্নাবস্থাকে অতিক্রম করে গভীর ঘুমে অচেতন, যে সময়ে পার্থিব জগ...

চির যৌবনা (১১২)

ছবি
 চির যৌবনা    (১১২) স্থুল জগৎ থেকে ক্রমেই সুক্ষতর অংশে, তার থেকে বীজে , আবার বীজ থেকে আরো গভীরে, যেখানে ব্রহ্ম বা আত্মা বিরাজ করছে।  ওঁ-কারই এই সবের সাক্ষী, যারা বীজ, সুক্ষ এবং স্থুলরূপে প্রতীয়মান।  গত সংখ্যার পর  ০ ০ ০ ০ ০ কাজী নজরুল ইসলামের কবিতার উদ্ধৃতি বিশেষ ভাবে " অক্ষর  " এই  শব্দের সাথে ভীষণ প্রাসঙ্গিক  -  " আমি অজর অমর  অক্ষয় আমি অব্যয়।  জগদীশ্বর ঈশ্বর আমি পুরুষোত্তম সত্য , আমি তাথিয়া  তাথিয়া  মাথিয়া ফিরি স্বর্গ -পাতাল মর্ত্য।"  আমি শাশ্বত, আমার কোন মৃত্যু নেই, আমি কখনই শেষ হয়ে যাই না, তাই  আমার কোন পরিবর্তনও হয় না ,  স্বর্গ, মর্ত্য ও পাতাল আমার ইশারায় নৃত্য করে , আমিই সেই পুরুষোত্তম সত্য ।       অক্ষরকে  কি ভাবে জগৎ হিসাবে ভাবছে - যার কোন ক্ষয় হয়না , যা কোন দিন ফুরিয়ে যায় না , যা সর্বদাই বিদ্যমান থাকে বা এদিক থেকে ওদিকে চলে যায় না, তাকেই অক্ষর বলে।  আবার অক্ষরকে স্বর বলা যায়, আবার স্বরকে শব্দ বলা হয়।  উপনিষদে , যে অবস্থায় ওঁ-কার তুরী...

রূপ আর স্বরূপের লুকোচুরি (১১১)

ছবি
  মহাভারতের যাজ্ঞসেনী- ৪৭ তম  অধ্যায়  ||     (১১১) Searching for hidden Truth (15)   প্রথমভাগে ওঁ -কার দৃশ্যমান জগতের প্রতিনিধিত্ব করেছেন আবার দ্বিতীয়ভাগে সেই জগৎকে ব্রহ্ম বলে আখ্যা দিচ্ছেন। তাহলে ওঁ-কার আর ব্রহ্ম এক, আবার ব্রহ্ম ও আত্মা বা চৈতন্য এক, সুতরাং, ওঁ -কারই ব্রহ্ম বা আত্মা ।  গত সংখ্যার পর ০ ০ ০ ০ ০   রূপ  আর স্বরূপের লুকোচুরি (১১১) দর্শন - চোখ যেমন বাইরের সব বিষয়কে দেখে কিন্তু নিজেকে দেখতে পারে না। তাকে দেখতে গেলে আয়নার সাহায্য লাগে। ঠিক তেমনি আত্মাকে জানতে গেলেও অবলম্বন দরকার পরে , আর সেই অবলম্বন হচ্ছে  ওঁ-কার।  এর ব্যাখ্যা করতে গিয়ে উপনিষদ বহু উদাহরনের আশ্রয় নিয়েছেন।  রজ্জুতে সর্প ভ্রম - রজ্জু সম্পর্কে যার কোন জ্ঞান নেই, সেই অজ্ঞানতার হাত ধরে রজ্জু বা দড়িকে সাপ ভেবে কল্পনা করাটা  ভ্রান্তি। ঠিক সেই রকম আত্মা সম্পর্কে জ্ঞান না থাকার কারনে কল্পনা থেকে উদ্ভূত নাম-রূপ নিয়ে যে দৃশ্যমান জগৎ দাঁড়িয়ে আছে, তাকে   ব্রহ্ম বা আত্মা বলে মনে হয়।  ওঁ-কারের মধ্যে অ-কার , উ-কার, ম-কার এবং (ঁ) চন্দ...

একটি অক্ষরের গল্প (১১০)

ছবি
  মহাভারতের যাজ্ঞসেনী- ৪৬ তম  অধ্যায়  ||     (১১০) Searching for hidden Truth (14)   মায়াজাল থেকে উদ্ধার পেয়ে নিত্য আনন্দের জগতে পা দিতে গেলে 'ব্রহ্ম' অর্থাৎ সৃষ্টি সম্পর্কিত জ্ঞানকে অর্জন করতে হবে অর্থাৎ আত্মজ্ঞান লাভ। গত সংখ্যার পর........    একটি  অক্ষরের গল্প  (১১০) ওঁ-কার - পরিবর্তনের নিয়মানুসারে পূর্ব অবস্থার বিলুপ্তি  না হলে নতুন ব্যবস্থার জন্ম হয় না। যেমন, রাত্রির বিলুপ্তিতে দিনের সূচনা হয়। ঠিক তেমনি জাগ্রত, স্বপ্ন এবং সুষুপ্তি, আত্মার এই তিন  অবস্থার বিলুপ্তি না হলে আত্মা বা চৈতন্য প্রকাশিত হতে পারে না।  ওঁ-কার এই শব্দটি উচ্চারণ করার জন্য প্রথমে অ-কার বেরিয়ে আসে, এই  অ-কার প্রতিনিধিত্ব করে জাগ্রতাবস্থা বা বিশ্বপুরুষের।  ওঁ-কারের আদি অবস্থা তাহলে " অ"-কার, এবার এই " অ"-কারের বিলুপ্তির মধ্যে দিয়ে "উ"-কার অর্থাৎ যে প্রতিনিধিত্ব করে স্বপ্নাবস্থাকে বা তৈজস পুরুষের। তাহলে  ওঁ-কারের বর্তমান আদি অবস্থা হলো " উ"-কার আর এই অবস্থা অর্থাৎ স্বপ্নাবস্থার বিলুপ্তিতে  ওঁ-কার গিয়ে পৌছালো "ম"...

নাড়ী ছেড়ার গান। (১০৯)

ছবি
নাড়ী ছেড়ার   গান। (১০৯) কালের বয়স আজ কত ?  বয়স যাই হোক না কেন ,অবশ্য তাতে কিছু যায় আসেনা। বয়স মানে  অগ্রগতির খতিয়ান । আঙ্গিকের বা স্বাদ গন্ধ যাইই হোক না কেন, কার্যত পরিবর্তনের চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যাবেই। "উদ্বাস্তু "এমনিই একটা শব্দবন্ধ , যাকে মনে ,করা যেতে পারে যে,  বিশ্বপ্রকৃতির নিয়মের ধারই  সে ধারেনা, সে অস্বীকার করতে চায়  পরিবর্তনশীলতাকে এবং বস্তুত সে করেই থাকে।  অন্তত বারবার ঘুরে ফিরে একই চেহারা নিয়ে   ফিরে আসার মধ্যে , এই কথাটির সত্যতাকে অপরিবর্তনীয় রাখে।  গর্ভধারিনী অর্থাৎ প্রথম প্রাণের পদধ্বনি যেই মন্দিরে বেজে ওঠে। তারপরে   মা তার গর্ভগৃহ থেকে নাড়ীর সাথে স্থুল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে শিশুকে  প্রথম উদ্বাস্তু  করে এই বিশ্ব সংসারের  কোলে  তার সন্তানকে অনির্দিষ্ট পথের পথিক করে দেয়। তাই সেই শিশু জন্মের প্রথম লগ্নে আর্তনাদ করে কেঁদে উঠে। প্রকৃতির রাজ্যের চিরাচরিত এই  অভিন্ন সুরকে অর্থাৎ মা ও শিশুর, মাতৃভূমি ও সাধারণ মানুষ, পরিবার আর পরিবারের সদস্য ইত্যাদি যে পারস্পরিক নাড়ীর টানকে অস্ব...

মহাভারতের যাজ্ঞসেনী- ৪৫তম অধ্যায় || (১০৮) Searching for hidden Truth (13)

ছবি
  মহাভারতের যাজ্ঞসেনী- ৪৫তম  অধ্যায়  ||     (১০৮) Searching for hidden Truth (13)   গাহি সাম্যের গান -  যেখানে আসিয়া এক হয়ে গেছে সব বাধা-ব্যবধান -  যেখানে মিশেছে হিন্দু-বৌদ্ধ -মুসলিম -ক্রিশ্চান। ০০০০০০০ এই হৃদয়ের চেয়ে বড় কোন মন্দির-কাবা নাই।  তবে কেন এ পন্ডশ্রম, মগজে হানিছে শূল ? গত সংখ্যার পর........  Image Of Illusion  আধ্যাত্মিক জগতে সব জীব একই সূত্রে  যদি  বাঁধা   হবে তো, এত হানা হানি কিসের ? এর উত্তর খুঁজতে পৌঁছাতে হবে মায়ার রাজত্বে, যে শক্তির পশ্চাতে আছে সেই পরমব্রহ্মের হাত। অবশ্য এই বিশ্বের যা কিছু শক্তি এবং সৃষ্টি ; সবই  ওনার কাছ থেকে ধার করা শক্তিতে বলীয়ান ।  মায়া কি ? পার্থিব জগতে 'মায়া ' এক শক্তিশালী শক্তি। এই শক্তি ক্রমেই শক্তিশালী হয় যখন বুদ্ধির উপর অহংকারের ছায়া পড়ে। আবার অহংকারের ছায়া তখনিই পড়ে, যখন  সত্যের আসল রূপটা মিথ্যার মোটা পর্দায় ঢাকা থাকে।  এই না জানাটাই   মানুষের অজ্ঞান অবস্থা।এই  আত্মজ্ঞান না থাকাটা মনের জগতে এক চরম দুর্বলতা , সুযোগসন...