পোস্টগুলি

অক্টোবর, ২০২১ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

মহাভারতের যাজ্ঞসেনী -চতুর্থ পর্ব

ছবি
  মহাভারতের যাজ্ঞসেনী -চতুর্থ পর্ব                                                                                                                          অগ্নি দেবতা   দেখা বা শোনার ক্ষেত্রে বিষয়বস্তুর গ্রহণ যোগ্যতার বা বিচার বিশ্লেষণের মধ্যে যদি যুক্তি ও অনুভূতি না থাকে তাহলে পাঠক হয়ত মেনে নেবেন না,  কিন্তু মানিয়ে নেবেন। সাহিত্যে অতিব্যঞ্জনা থাকবেই আর তা যদি মহাকাব্য   হয় তাহলে তো কথাই নেই কিন্তু তার পাশাপাশি পাঠকের বাস্তববোধের সীমারেখার বাইরে কোন ঘটনা প্রবাহ  চলে গেলে, পাঠকের  অন্বেষণ জারি থাকবে তার পিছনে সঠিক যুক্তি বা ব্যাখ্যা  খোঁজার। আবার, মানব সভ্যতার ইতিহাসে বহু ঘটনা আছে, যা থেকে  অলৌকিকতার জন্ম নেয় কিন্তু হয়ত বাস্তবে তা আ...

মহাভারতের যাজ্ঞসেনী -তৃতীয় পর্ব

ছবি
  মহাভারতের যাজ্ঞসেনী -তৃতীয় পর্ব  অগ্নি দেবতার প্রতিমূর্তি   ( যজ্ঞের বেদীর আগুন থেকে যাজ্ঞসেনীর জন্ম  দ্বিতীয়   পর্বের  সূত্র ধরে -   অগ্নির বৈচিত্রতা )   অগ্নির বৈচিত্রতার  প্রসঙ্গে  বর্তমানের বিশ্লেষকরা যে সমস্ত তৎকালীন সাহিত্য (বেদ) , ধর্মপুস্তককে আশ্রয় করে তাদের তথ্য নির্ভর    বর্ণনার অবতারণা করেছেন, তার  আলোকে সংক্ষিপ্তসারে এখানে সেটি পরিবেশন করার চেষ্টা করা হয়েছে।  ভাবনার বিবর্তন : বেদের যুগে অগ্নি একাধারে স্বর্গের দেবতা এবং মর্ত্যে যজ্ঞের    পুরোহিত। পুরোহিত ছাড়া কোন কাজই সম্পাদন হতো না।  নিত্যদিন যিনি পূজা যাগযজ্ঞ করেন তিনি পুরোহিত নামে পরিচিত  আবার বিশেষ দিনে যিনি যজ্ঞে আহুতি দেন তাঁকে ঋত্বিক নামে ভূষিত করা হয়। ধীরে ধীরে যজ্ঞে একমাত্র "অগ্নিই শ্রেষ্ঠ " সেই ভাবটা সরে গিয়ে দেবী দূর্গা, মা চন্ডী, মা কালীর ক্ষেত্রে লক্ষণীয় হয়ে উঠে তাদের শ্রেষ্ঠতার  প্রদর্শনের ।   গীতার দশম অধ্যায় স্বয়ং শ্রী কৃষ্ণ বলেছেন, যাবতীয় বস্তু এই বিশ্ব ব্রম্মান্ডে আছে তার মধ্য...

64 মহাভারতের যাজ্ঞসেনী - দ্বিতীয় পর্ব

ছবি
    মহাভারতের যাজ্ঞসেনী -  দ্বিতীয়  পর্ব  মহাভারতের প্রথমপর্বে পাঠক দেখেছেন যে , পৃথা প্রশ্নাতীতভাবে নায়িকার স্থান অধিকার করে  নিয়ে ছিলেন। সামনে দাঁড়িয়ে থেকে পাঁচ পুত্রদের নেতৃত্ব ও  সংস্কার দিয়ে এসেছেন,  আবার যখন অপর এক ব্যক্তিত্ব সম্পন্না নারী যাজ্ঞসেনী পান্ডবদের বধূ হিসাবে পৃথার সংসারে যখন এলো, তখন তথাকথিত  শ্বাশুড়ি সুলভ চরিত্রে অবতীর্ণা না হয়ে অত্যন্ত বিচক্ষণ নারী হিসাবে পাণ্ডব পরিবারের  সংসারের চাবিটা তার হাতে তুলে দিল। একই পদে একই ব্যক্তি যদি দীর্ঘদিন ধরে আসীন হয়ে থাকে এবং তাকে রিপ্লেস করার মতো পার্সোনালিটি যদি সংসার নামক প্রতিষ্ঠানে তৈরি না হয়; তাহলে মর্ডার্ন ম্যানেজমেন্টের কনসেপ্ট অনুযায়ী সেই সংগঠনটি কখন ডায়নামিক ম্যানেজমেন্ট হয়ে উঠেনা আর  সেই পরিচালকমন্ডলীর গতিশীলতাই  সংগঠনকে সাফল্যের চূড়ান্ত শিখরে নিয়ে যায়। যাইহোক, মনস্বিনী পৃথা এই নতুনের আগমন আর পুরাতনের নির্গমন, এই প্রাকৃতিক সৃষ্টির প্রক্রিয়ার বাস্তব  ধারাকে যথেষ্ট মর্যাদা দিয়ে নবীনা যাজ্ঞসেনীকে  তাঁর উপযুক্ত আসনটি  ...

63 মহাভারতের যাজ্ঞসেনী - প্রথম পর্ব

ছবি
   63   মহাভারতের যাজ্ঞসেনী -  প্রথম পর্ব  যাজ্ঞসেনীসহ পঞ্চপাণ্ডব   যাজ্ঞসেনীর জন্মলগ্নে মহাভারত এমন এক পর্য্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল যে মহামতি ব্যাসদেব মহাভারতের অন্যান্য সহনায়িকাদের ন্যায় তার শৈশব থেকে প্রাক যৌবন পর্য্যন্ত একেবারে স্কিপ করে যজ্ঞের অগ্নি থেকে তার আবির্ভাব ঘটিয়ে পাঠকের সামনে নিয়ে উপস্থিত করেছিল।  অবশ্য রিসার্চ পেপারগুলির ক্ষেত্রে যেমন রেফারেন্স বুকের ব্যবহার সুবিদিত ঠিক তেমনি সেই সময়ে সাপোর্টিং বুক হিসাবে  বহু পুরান রচনা করতে হয়েছিল। যেখানে সন্ধান করলে পাঠক তার উত্তর খুঁজে পাবেন। অবশ্য বর্তমানের পটভূমিতে পাঠকের বিশ্বাস অবিশ্বাসের প্রশ্নের উত্তর দেবার দায় মহাভারতের কবির নেই।  কাব্যে যদি কিছু ব্যঞ্জনা না থাকে তাহলে স্টিল ছবি দেখে মন ভরাতে হবে।   মহাকাব্য রচনার মূল উদ্দেশ্য বেদের  নির্যাসকে  সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেবার আর পুরাণের  লক্ষ্য হল ধর্মকে গল্পের অবতারণা এবং  সরলীকরণ করে তার পরিণতি সমাজের সামনে  তুলে ধরা। খুব প্রাসঙ্গিকভাবে বেদের যুগের যজ্ঞ এবং...

উজানের পথে - ২য় পর্ব

ছবি
 উজানের পথে  - ২য়  পর্ব  (উজানের সাথে ১থম পর্বের পর ) সময়ের হাত ধরে জীবন একে একে শৈশব থেকে প্রৌঢ়ত্বের অস্তিত্ব ঘুচিয়ে বার্ধক্যের দিকে অগ্রসর হয়। যৌবনের না হেরে যাবার মানসিকতা একসময়ে মন  থেকে অন্তর্হিত হয়, তার পরিবর্তে মনের সেই খালি জায়গাটা দখল করে নেয়  মৃত্যুর চিন্তা,   আর তার সাথে যদি সেই দিনগুলিতে  আর্থিক সুস্থিতি না থাকে, তাহলে তো  অর্ধেক জীবনীশক্তি কোথায় যেন হারিয়ে যায়। খরার দিনে চাষী যেমন আকাশ পানে মেঘের প্রতিশ্রুতি খুঁজে বেড়ায় আর এক টুকরো কালো  মেঘের ঝলক তাদের মনে সহস্র আশার আলো সঞ্চারিত করে। অশোক আর স্বাতীর জীবনের আকাশে আজ সেই কালো মেঘ দেখবার আশায় ভীষণ চঞ্চল আর সেই সঞ্চারিত কালো  মেঘের রূপকার তার একমাত্র বিবাহিত এবং প্রতিষ্ঠিতা কন্যা  ঈশিতা। জীবনের হিসাবের খাতায় প্রতিদান বলে একটা কলাম নিজেদের অজান্তে পরিপূর্ণ হয়।  আশার উপর ভিত্তি করে তার জন্ম  আর প্রয়োজনের বাস্তবতার  উপর নির্ভর  করে তার প্রকাশ ।  বার্ধক্যকালীন অবস্থায় পিতামাতার   কিছু অপ্রকাশিত  দ...

উজানের পথে - প্রথম পর্ব

ছবি
উজানের পথে - প্রথম পর্ব  ব্লগ সম্পর্কিত  ধারণা সময়ের সাথে সাথে তার চরিত্রগত পরিবর্তন ঘটিয়ে ব্যক্তিগত দিনলিপি থেকে সামাজিক, রাজনৈতিক ঘটনাবলির থেকে আরো কিছুকে সঙ্গে করে এক  অনলাইন গণমাধ্যম হিসাবে পরিচিত হয়েছে। ব্লগার বা ব্লগ লেখকের সাথে পাঠকের এক মত বিনিময়ের মাধ্যম হিসাবে এই প্লাটফর্মকে ব্যবহার করা যেতে পারে, তার জন্য কমেন্ট বক্সে পাঠক তার মতামত জানাতে পারেন।  এই  সংসারে  যা শুধুমাত্র পরিবারের মধ্যে যা  আবদ্ধ বলে মনে হয়, সেখানেও সম্পর্কের টানা পোড়ানে বহু না বলা কথা শুধুমাত্র উপযুক্ত পরিবেশ না পেয়ে সঠিক স্থানে প্রকাশ করা যায়না, সে না বলা বাণী ( সেটা স্ত্রীর স্বামীর কাছে, স্বামীর স্ত্রীর কাছে, পিতামাতার সন্তানের কাছে বা সন্তানের পিতামাতার কাছে, অফিস কাচারীতে বসের কাছে বা মালিকের শ্রমিকের    কাছে, ক্যাডারের নেতার কাছে হোতে পারে ) মাঝে মাঝে অম্বলের ঢেকুরের মতো মনের অলিতে গলিতে ঘুরে বেড়ায় আর তার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসাবে শরীর ও মন উভয়কে ক্লান্ত আর অসুস্থ করে তোলে। সেই সব আমাদের মতো মানুষের না বলার জায়গা  উজান  ( ...

আমি মহাভারতের পৃথা -সপ্তদশ পর্ব

ছবি
 আমি মহাভারতের পৃথা -সপ্তদশ পর্ব  সৃষ্টির প্রারম্ভ থেকে নারী তার দেহ ও  মন  দিয়ে যে প্রাণের স্পন্দনকে  বহন করে, আবার  তাকে প্রতিপালন করে সেই প্রাণকে পূর্ণতায় প্রকাশিত করে আসছে। যে শক্তির বলে সে এই সৃষ্টির কাজটা করেছে, সেই শক্তিই হচ্ছে  আদ্যাশক্তি।   শিবরূপী ক্ষেত্রের উপর দাঁড়িয়ে আছে একহাতে সৃষ্টির প্রতীক আর অন্য হাতে ধংসের প্রতীক, আর সেই সৃষ্টি আর ধংসের প্রতিরূপ কালী মূর্তি, সেও নারী শক্তি।  সূর্যকে কেন্দ্র করে তার চারপাশের গ্রহরা আবর্তিত হয়, ঠিক তেমনি সমাজ-সংসারে নারীকেই কেন্দ্র করে পরিবারের অন্যান্য মানুষদের নিয়ে  সামাজিক বলয় গড়ে উঠে । পুরুষ যেখানে মুক্ত বিহঙ্গ, নারী সেখানে ক্লান্ত বিহঙ্গের আশ্রয় নীড়। আবার পুরুষ যেখানে মুক্ত পাখিকে বলপূর্বক খাঁচায় পুরে গর্ব অনুভব করে, সেখানে পুরুষ জানেই না যে নারী স্বভাবগতভাবেই তার মধ্যেই বাঁধন মানার প্রবণতা আছে। পুরুষের বাহ্যিক জগতে জীবনের সংগ্রামে বহুবিধ কাজের সাথে নিজেকে যুক্ত করতে হয়, সেখানে যেমন কৃতকার্যতা আছে ঠিক তেমনি না পারার গ্নানিও আছে। দিনের শেষে ...

আমি মহাভারতের পৃথা -ষষ্ঠদশ অধ্যায়

ছবি
  আমি মহাভারতের পৃথা -ষষ্ঠদশ অধ্যায়  আত্মপ্রকাশ আত্মগোপনের পর একটা রাস্তাই খোলা থাকে সেটা হল আত্মপ্রকাশ। আত্মানুসন্ধানের আদর্শ পরিবেশ অরণ্য।  আত্মানুসন্ধান মানবের মনে প্রকৃত জ্ঞানের উন্মেষ ঘটায়। সত্যান্বেষী মহাভারতের কবিকে আগামীদিনের নায়ক আর নায়িকা নির্বাচন  করতে গিয়ে নিজেকেই  মেন্টরের ভূমিকায় বারবার অবতীর্ন হতে হয়েছিল ।  সেক্ষেত্রে হয়ত আগামীদিনে পান্ডবদের প্রতি তার অনুরাগ  নিয়ে প্রশ্নের উদয় হতে পারে, তাই বলে কবি তো নিজের সৃষ্টির উদ্যেশ্যকে বিসর্জন দিতে পারেনা না। ভারতীয় সংকৃতির একটা প্রামাণ্য দলিল মহাভারত। এই সৃষ্টির মূল উদ্দেশ্য বেদের মূল ভাবকে সাধারনের বোধগম্য করে তোলা।   ইতিহাসের রূপকার কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন ব্যাসদেব তার  লক্ষ্য স্থির রেখে একের পর এক তার কর্মকান্ডকে বাস্তবায়িত করছেন। যে বাস্তবসম্মত শিক্ষার জন্য পান্ডবদের আত্মগোপনের প্রয়োজন ছিল তা পৃথার নেতৃত্বে একের পর এক ঘটনার পরম্পরায় পান্ডবরা উত্তীর্ন হয়েছেন সেই পরীক্ষায়। অন্তরের আর বাইরে সংঘাতে বিজয়ী যারা, তারাই তো আগামীদিনের ইতিহাসের রূপকার। কবির লেখনীর ছন্দে ছন্দে ...

আমি মহাভারতের পৃথা - পঞ্চদশ অধ্যায়

ছবি
 আমি মহাভারতের পৃথা - পঞ্চদশ অধ্যায়  মানব জীবনের নিরন্তর গতি প্রবাহই হচ্ছে ইতিহাস। অতীতের সামাজিক জীবন,শিল্পকলা ,সাহিত্য সংকৃতি, জনজাতি,গোষ্ঠীর, রাষ্টের  আবাহন ও  বিসর্জনের গতি প্রকৃতি  পুঙ্খানুপুঙ্খ ঘটনাবলী , সময়ের হাত ধরে বর্তমানের কাছে পৌঁছে দেবার মহৎ কাজটা ইতিহাসই করে থাকে। মানব সমাজের সভ্যতার ঐতিহ্যের ধারাবাহিক প্রামাণ্য দলিলকে ইতিহাস বলা যেতে পারে। আর অতীতের অভিজ্ঞতাই মানুষকে আগামীদিনের কর্ম পদ্ধতিকে  নিশ্চিত করতে সাহায্য করে, এটাই ইতিহাসের শিক্ষা।   অত্যাচারী হিরম্ব অর্থের লোভে ভীম অর্জুনকে হত্যা করার সংকল্প গ্রহণ করেছিল কিন্তু বাস্তবে  স্বৈরাচারী শক্তি পরাস্ত হয় এখানে সাধারণ মানুষের স্বার্থরক্ষাকারী শক্তির প্রতিনিধি ভীমের হাতে। পাশাপাশি বিজিত শক্তির প্রতিরূপ  সহায় সম্বলহীনা হিড়িম্বাকে আশ্রয় দান করে পৃথা শুধুমাত্র পরাজিতের প্রতি ক্ষমা প্রদর্শন করে ক্ষান্ত হননি, হিড়িম্বাকে জীবনের মূলস্রোতে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন তার অন্যান্য পুত্রদের মৃদু অসম্মতিকে অগ্রাহ্য করে।  একাধারে তিনি সংবেদনশীল মাতা  আবার দূরদৃষ্ট...

আমি মহাভারতের পৃথা -১৪ তম পর্ব

ছবি
 আমি মহাভারতের পৃথা -১৪ তম পর্ব   অরণ্য কখন কারোর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে না। তার বিশাল নীড়, সে তো  সব প্রাণীরই  আশ্রয়স্থল। দুঃখ এখানে প্রবেশ করে না, শুধু অফুরন্ত আনন্দ আর প্রগাঢ় শান্তি একত্রিতে এখানে বাস করে। অনাহুত প্রাণিকুলকে অরণ্য কখনই বঞ্চিত করেনা তার সেই নির্মল প্রাসাদ থেকে আর তাতে তৃপ্ত হয় তাদের প্রাণের রসনা, এইভাবেই বেড়ে উঠে জঙ্গলের সাথে প্রাণীর যুগ যুগান্তরের বাঁধন।  পৃথাদের মাথায় ছাদ হয়তো নেই  কিন্তু মাথার উপর একটা মস্ত বড়  আকাশ আছে , দিনেতে আছে রবির অকৃপণ কিরণ আর রাতে কখন চাঁদ আর তার অবর্তমানে বড় বড় তারারা অবিরাম প্রদীপের রোশনাই জ্বালিয়ে বসে থাকে যেন , মর্ত্যের তার স্নেহধন্যরা কখনও  যেন  আলোর অভাবে বিপথগামী না হয়।  আজ পৃথার সান্ত্বনা এই যে, পুত্ররা হয়ত হস্তিনাপুরের এক টুকরো রাজ্যটা পাইনি কিন্তু তার পরিবর্তে  তাদের হাতে মহাকাল তুলে দিয়েছে একটা  বিশাল ভুবন।  তারা আজ দুনিয়ার রাজা হিসাবে মানুষের হৃদয়ে স্থান দখল করে নিয়েছেন। প্রভাতের রবির রক্তাভ আলোর ছটায় দিগ্দিগন্ত যেন উচ্ছসিত। দূরে ভাগী...

আমি মহাভারতের পৃথা - ১৩তম অধ্যায়

ছবি
  আমি মহাভারতের পৃথা - ১৩তম অধ্যায়  পৃথার হাত ধরে  পাঠক মহাভারতের গহন প্রদেশে যতই  প্রবেশ করবে ততই পাঠক দেখবেন, যেন চিরকালের সেই আমাদের পাশের বাড়ির চিরচেনা পারিবারিক বঞ্চনার সাক্ষাৎ প্রতিমূর্তি সেই অন্তঃপুরের  গড়পরতা    নারীর চরিত্র থেকে তিনি ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসছেন । প্রবেশ করছেন  এক বিশাল পৃথিবীতে নারীর  স্বাধিকার রক্ষার সংগ্রামে অবতীর্ণা এক যথার্থ আধুনিকা ক্ষত্রিয়ার  প্রতিমূর্তি হিসাবে। সমাজবিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, তিনি সেই অনন্য নারী, যিনি সমাজে যখন যেখানে নিজেকে যে চরিত্রে প্রতিষ্ঠিত করেছেন সেখানে তিনি নিখুঁতভাবে নিজেকে বিকশিত করেছেন সেই পরিবেশে, এটাই তার ব্যক্তিত্ব।  বিগত পর্বে মধ্য পান্ডবের সাথে হিড়িম্বা নামক এক অনার্য্য রমণীর ( রাক্ষসী ) সাথে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে তাদের বিবাহ দিয়ে তিনি জাতপাতের উর্ধে  নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। সাধারণত এই ক্ষেত্রে আজকের অত্যাধুনিক নারী এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার পূর্বে নিশ্চিতভাবে কয়েকটা সিরিয়াল উত্তীর্ন করে ফেলতেন এবং বহু  নিকট...

নারদের মর্ত্যে ভ্ৰমণ -পাক্ষিক বিশ্লেষণ - পঞ্চম পর্ব Fortnight Analysis - Indian Education System (5th part)

ছবি
  Fortnight Analysis -   Indian Education System (5th part)   নারদের মর্ত্যে ভ্ৰমণ -পাক্ষিক বিশ্লেষণ - পঞ্চম পর্ব ভগবান বিষ্ণু : নারদ বেশ কিছুদিন যাবৎ তোমাকে এতো চিন্তিত দেখছি তার কারনটা কি জানতে পারি ?   নারদ : হে ভগবান ! এতদিন আমার আমার কর্তব্য নির্ধারিত ছিল সংবাদ প্রেরকের ভূমিকায়। আজ দেবরাজ আমাকে নতুন দায়িত্বে অভিষিক্ত করেছেন।  ভগবান বিষ্ণু : বৎস নারদ, তুমি আমাকে সব খুলে বল।  নারদ : হে ভগবান আপনি তো এই বিশ্বের স্রষ্টা, সবই তো আপনার নখ দর্পনে ।  ভগবান বিষ্ণু : ঠিকই বলেছো, তবে এই মানবরা যখন হাটতে শেখেনি তখন তো তাদের হাত ধরে হাটতে শিখিয়ে দিয়ে হাতটা ছেড়ে দিয়েছি , এবার তারা নিজেরা স্বাবলম্বী হয়েছে, বেদের ঋষিদের দিয়ে ধর্ম ,অর্থ , কাম  ও মোক্ষ কি -তাকে বিশদ ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে দিয়েছি। ব্যাসদেব তো মহাভারত লিখে সাধারণ মানুষকে সেই শিক্ষাই দেবার চেষ্টা করেছে।  জীবনকে কোন পথে চালিত করলে দুঃখের উর্ধে থাকা যায় এবং আমাদের মতো আর কেউ নিজেকে জানার কথা বলে নি আর অন্তঃপ্রকৃতিকে অনুসন্ধান করাই ছিল আমাদে...

নারদের মর্ত্যে ভ্ৰমণ -পাক্ষিক বিশ্লেষণ - চতুর্থ পর্ব (Fortnight Analysis - Indian Education System (4th part))

ছবি
  Fortnight Analysis -   Indian Education System (4th part)   নারদের মর্ত্যে ভ্ৰমণ -পাক্ষিক বিশ্লেষণ - চতুর্থ পর্ব    দেবরাজ ইন্দ্র : নারদ মশাই আজকের মিটিঙে  দেবী সরস্বতী উপস্থিত নেই, আপনি  সংক্ষেপে সমস্যা ও তার সমাধানের কি উপায় হওয়া উচিত সে সম্পর্কে বলুন।   নারদ :  আমার অবজারভেশন এবং সম্ভাব্য কি  করা উচিত, সেই সম্পর্কে বলতে পারি। যেমন, প্রাথমিক শিক্ষা সংস্কৃতির  আঁতুরঘর হচ্ছে পরিবার। স্যার ! একবার ভারতের গ্রাম এবং শহর ঘেঁষা অঞ্চলগুলিতে ঘুরে দেখে এলে  আসলে তার প্রকৃত চেহারাটা কি তা খানিকটা উপলদ্ধি করতে পারবেন।    ভারতবর্ষে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বৈষম্য থাকার দরুন, বহুদিন থেকে শিক্ষার মূলস্রোতে ভারতের সংখ্যা গরিষ্ঠ অংশ  ও  অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া এবং সেই প্রান্তিক পরিবার থেকে খুব কমই ছাত্র শিক্ষা গ্রহণ করতো , কারন তাদের কাছে শিক্ষা গ্রহণের থেকে অন্ন গ্রহণ করে বেঁচে থাকার প্রশ্নটা অনেকে বেশী গুরুত্বপূর্ণ ছিল।  শিক্ষা দানের পদ্ধতি মোটেই আকর্ষণীয় নয় ।...

আমি মহাভারতের পৃথা - ১২ তম অধ্যায়

ছবি
 আমি মহাভারতের পৃথা - ১২ তম অধ্যায়  মহাভারতের অন্যতম নায়িকা পৃথা, তার শ্বশুর বাড়ী  এবং  বাপের বাড়ীর বঞ্চনাকে তিনি  তার জীবনের অলঙ্কার হিসাবে গ্রহণ করেছিলেন।  ক্ষত্রিয় নারীর গভীর সংকল্প থেকে  শত মনকষ্ট  তাকে এক চুল ও সরাতে পারেনি। তার মানসিক বেদনা যেন বার বার সেই রবি ঠাকুরের গানের  মধ্যে দিয়ে  ফিরে এসে বলছে -  "শেষ নাই যে শেষ কথাটাই কে বলবে আঘাত হয়ে দেখা দিল, আগুন হয়ে জ্বলবে  " ।  সেই ভাবনাই প্রকাশিত  হয়েছিল আগামী দিনে হস্তিনাপুরের সিংহাসনের অন্যতম দাবিদার পাণ্ডবদের প্রতিষ্ঠা করার প্রস্তুতির মধ্যে দিয়ে। অরণ্যবাসে  পান্ডব পুত্রদের অন্যতম মেন্টর হয়ে উঠেছিলেন পৃথা। রাজপ্রাসাদ থেকে শুরু করে অরণ্যেও, রাজপুরুষ থেকে শুরু করে বনের মানুষের সাথে পথ চলার ক্ষেত্রে , পৃথা সমান সাবলীল।  হস্তিনাপুরের রাজমহলটা মহারাজ পান্ডুর মৃত্যুর বহু পূর্ব থেকে পান্ডবদের সাথে দীর্ঘ অনুপস্থিতির কারনে একটি দূরত্ব রচনা করেছিল। ধৃতরাষ্ট্রই ছিলেন হস্তিনাপুরের মসনদে আসীন । পরবর্তী সময়ে পান্ডুর মৃত্যর পরে যুধিষ...

আমি মহাভারতের পৃথা- একাদশ পর্ব

ছবি
  আমি মহাভারতের পৃথা-  একাদশ  পর্ব   ( দশম - পর্বে   বিদুরের পরামর্শে বারানাবতের ঘটনার পর  পৃথাসহ পঞ্চ পান্ডবদের অরণ্যে গমনের সাথে সাথে মহাভারতের সব থেকে বড় অধ্যায়  বন পর্বের সূচনা  হলো ) মহাভারত তার মহাকাব্যিক  চরিত্রকে মহিমান্বিত করতে কবিত্ব শক্তিকে আশ্রয় করে সমসাময়িক কালের সমগ্র জাতির একটা সামগ্রিক ছবি মহাভারতের কবি  তার তুলির রেখায় ফুটিয়ে তুলেছিলেন, তার জন্য এই  বনপর্বের এক বিশিষ্ট ভূমিকা আছে। তৎকালীন সমাজের সাথে, তার সংস্কৃতির সাথে একাত্ম না হলে সাহিত্য সৃষ্টির ইন্ট্রিগ্রিটিটা বোঝা যাবেনা।  তাই মেইনস্ট্রিম সোসাইটিকে গুডবাই করে তদানীন্তন বৃহত্তর সমাজের সাথে পরিচিত হতে পৃথার হাত ধরে মহাভারত  চললো অরণ্যের পথে   এখানে  ভিন্নধারায় বেড়ে উঠা আদিবাসীদের সাথে তাদের জীবনের সাথে জীবন যোগ করতে, যেখানে বঞ্চনাই  হচ্ছে  মিলনের মূল কারণ, তার যাইই ব্যাখ্যা হোক না কেন। ধীরে ধীরে সমতল ছড়িয়ে আরো দূরে পার্বত্য অঞ্চলে বেড়ে উঠা বিভিন্ন জনজাতির জীবনযাত্রাকে উপলদ্ধি করতে।  সুসাহিত্...

আমি মহাভারতের পৃথা -দশম পর্ব

ছবি
  আমি মহাভারতের পৃথা -দশম  পর্ব  ( নবম পর্বে পৃথা সহ পঞ্চ পাণ্ডব বারানাবাতের জতুগৃহ থেকে গোপনে পলায়ন করে অরণ্যে আত্মগোপন )   "জীবনের সুখ থাকে শুধু স্বল্পক্ষন,  জীবনের দুঃখ থাকে সারাটা জীবন" - জীবন দর্শনের এই মহামূল্যবান সত্যটা,   মহাভারতের কবি পৃথা চরিত্র অঙ্কন করতে গিয়ে  এই চিরন্তন সত্যটা বুঝিয়ে  দিয়েছেন। সুখের অন্বেষণ করতে গিয়ে জীবনের মধ্যগগনে এসে পৃথা উপলদ্ধি করেছেন  এই মহা সত্যটাকে।  মাঝখানে সুখ অতিথির মতো তার জীবনে এসে কখন যেন চলে গেছে। জীবনের এই বাস্তবতাই পৃথাকে গভীর সংকটে পড়ে অবিচল থাকার মন্ত্রটা উপলদ্ধি করিয়ে দিয়েছে।   বহুদিনের স্বপ্নপুরন সেদিনই হয়ে গেছিল, যেদিন রাজকুমারদের অস্ত্র পরীক্ষায় শ্রেষ্ঠ ধনুর্বীরের শিরোপাটা তৃতীয় পান্ডবের মস্তকে শোভা পেয়েছিল। পৃথার শুষ্ক হৃদয় সিক্ত হল পুত্রদের কৃতকার্যতায় । একমাত্র বিদুর ছাড়া রাজঅন্তঃপুরে কুশীলবদের উন্নাসিকতা পৃথাকে তার আগামীদিনের কর্মপন্থা নির্ধারণের প্রেরণা জুগিয়েছিল। সেই টুকরো টুকরো রাজবাড়ীর বঞ্চনার স্মৃতিগুলি একযোগে মনের এক কোণে বাসা বেঁধে যা...

নারদের মর্তে ভ্রমন - ১৬তম অধ্যায় -( পেশাদার রাজনৈতিক মানব সম্পদ উন্নয়নের ট্রেনিং প্রোগ্রাম ) প্রথম পর্ব

   নারদের মর্তে ভ্রমন - ১৬তম  অধ্যায়    দেবরাজ ইন্দ্র : নারদ মশাই  বর্তমানে স্বর্গের আর্থিক পরিস্থিতি ক্রমাগত দুর্বল হতে চলেছে। কেননা , মর্ত্যের প্রনামীর  উপর আমাদের অর্থনীতি এতদিন নির্ভরশীল ছিল। তাদের প্রণামীর যোগানটা দিনের পর দিন কমে যাচ্ছে। আমাদের আর্থিক ক্ষেত্রে   উন্নতির জন্য বিকল্প ভাবনা করার সময় এসেছে। আপনি জানেন আমাদের এখানে অনেক শিক্ষাবিদ, রাজনীতিবিদ, অর্থনীতিবিদ  কাজকর্ম না পেয়ে বসে আছে। তাদের কিভাবে ব্যবহার করে আমাদের  আর্থিক সুরাহা হতে পারে সেই দৃষ্টিভঙ্গী থেকে  আপনি  আমাকে একটা প্রপোজাল পাঠান সঙ্গে অবশ্যই প্রজেক্টেড ব্যালান্স সীটটা পাঠাতে ভুলবেন না।   নারদ : স্যার ! প্রথমত আপনাকে বলে রাখি আমাদের কালেকশন এজেন্ট এবং মন্দিরের পুরোহিত এই দুইয়ের মাঝখানে এক নতুন একদল  মানুষ এসে জুটেছে, তাদেরকে কমিশন না দিলে  আমাদের এজেন্টরা কোন কালেকশন করতে পারেনা।   দেবরাজ ইন্দ্র : তারা কারা ? নারদ : তারা মনুষ্য সৃষ্ট  সমাজের মূল স্রোত থেকে বিচ্ছিন্ন একদল  নৈরাজ্যের ক্রমবর্ধমান ...